সমস্যাঃ আমার মায়ের বয়স ৬০ বছর। স্বাস্থ্য মোটামুটি। ওজন ৫৫ কেজি। ডায়াবেটিস নেই। ১০ বছর ধরে তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং পাঁচ বছর ধরে উচ্চ কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগছেন। একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের কাছে গেলে তিনি লিপিড প্রোফাইল, ইসিজি, টিথ্রি, টিফোর, টিএসএইচ হরমোন পরীক্ষা করেন। এতে তাঁর উচ্চ রক্তচাপ, ট্যাকিকার্ডিয়া ও হাইপোথাইরয়েডিজম শনাক্ত হয়। চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ সেবন করার পর তিনি সুস্থ আছেন। রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে আছে। আমার মায়ের ঘুম খুবই কম। বর্তমানে যে ওষুধগুলো খাচ্ছেন, তা দীর্ঘ মেয়াদে সেবন করলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি? ট্যাকিকার্ডিয়া কী? নিরাময়ের পরামর্শ কী? ওষুধ খেয়ে বা না খেয়ে প্রাকৃতিকভাবে (যেমন-খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণ) উল্লিখিত সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা আছে কি? উল্লিখিত সমস্যাগুলোর জন্য কোন ধরনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, তা জানাবেন কি?
গিয়াস উদ্দিন
চুয়াডাঙ্গা।
পরামর্শঃ আপনার মা যেহেতু চিঠিতে উল্লিখিত ওষুধগুলো খেয়ে ভালো আছেন, তাই সেগুলোই আপাতত চালাতে পারেন। দীর্ঘদিন ধরে ওষুধগুলো সেবন করলে যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তা তেমন ক্ষতিকর নয়। উচ্চ রক্তচাপ হয়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ খেতেই হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ীই ওষুধ সেবন করতে হবে। ওষুধের মাত্রা বাড়ানো-কমানো বা ওষুধ পরিবর্তন করা-কোনো কিছুই নিজে নিজে কিংবা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া অন্য কারও পরামর্শে করা যাবে না। নিয়মিত আপনার মায়ের রক্তচাপ মাপিয়ে দেখবেন তা ঠিক আছে কি না। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন।
নাড়ির স্পন্দন (পালস) প্রতি মিনিটে ১০০-এর বেশি হলে একে ট্যাকিকার্ডিয়া বলা হয়। বিভিন্ন কারণে নাড়ির স্পন্দন বাড়তে পারে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, উত্তেজনা, ধূমপান, অতিরিক্ত চা, কফি পান প্রভৃতি এর প্রধান কারণ। তাই এগুলো থেকে যতটুকু সম্ভব দূরে থাকতে হবে। একেবারে বাদ দিতে পারলেই ভালো।
নাড়ির স্পন্দন বেশি হলে কারণ বের করে এর চিকিৎসা নিতে হবে। প্রয়োজনে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। না হলে হার্ট অ্যাটাক, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, কিডনি ও চোখের সমস্যা এবং নানা রকম জটিলতা হবে। তাই নিয়মিত ওষুধ সেবনের পাশাপাশি খাদ্য নিয়ন্ত্রণও করতে হবে। চর্বিযুক্ত খাবার কম খাওয়া, একেবারে না খেলেই ভালো। চা ও কফি কমিয়ে খাওয়া, তামাক ও ধূমপান সম্পূর্ণ বর্জন যেকোনো বয়সেই মেনে চলতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন
এ বি এম আবদুল্লাহ
অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ০৮, ২০০৯
Leave a Reply