হাইলাইটস
- শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট কারণ নেই।
- কখনও বংশগত কারণে আবার
- কখনও পারিপার্শ্বিক কারণে শরীরের ইউরিক অ্যাসিড জমে
প্রত্যেক মানুষের শরীরের নির্দিষ্ট মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড থাকে। দেহ মধ্যস্থ পিউরিন ভেঙে গেলে ইউরিক অ্যাসিড বর্জ্য পদার্থে পরিণত হয় এবং তা কিডনিতে ফিল্টার হয়ে মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু শরীরের এই অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলেই বিপদ। এর প্রভাব পড়ে কিডনিতে। কিডনি ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। তবে তার আগে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যেমন শরীরের গাঁটে গাঁটে ব্যাথা ইত্যাদি। সমস্যা এড়িয়ে গেলে ভবিষ্যতে এর ফল হতে পারে মারাত্মক।
হাড়ের জয়েন্ট ব্যথা হলে বেশিরভাগ মানুষই পেইন কিলার ট্যাবলেট খেয়ে সাময়িকভাবে আরাম পান। আর এই ফল হতে পারে মারাত্মক। কারণ ব্যথা কমে গেলেই পরবর্তী চিকিৎসার ব্যাপারে গাফিলতি চলে আসে। এবং শরীরে রোগ পুষে রাখলে যে কী হতে পারে তা বুদ্ধিমান মাত্রই জানেন। তাই গা হাত পার জয়েন্টের ব্যথা অসহনীয় হতে শুরু করলেই ডাক্তারের কাছে যান।
রোগের লক্ষণ
শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলেই শরীরে প্রচণ্ড ক্লান্তিবোধ হয়। সামান্য কাজ করলেই ক্লান্তি চলে আসে।
শরীরের ছোটো ছোটো জয়েন্টগুলিতে ব্যথা শুরু হয়। আসলে ইউরিক অ্যাসিডে অতিরিক্ত হয়ে গেলে চিনির মতো ছোটো ছোটো দানায় পরিণত হয়। এবং সেই দানা প্রথমে শরীরের ছোটো জয়েন্টগুলিতে জমতে থাকে। এবং সেই সময়ই যদি চিকিৎসা শুরু করা না হয় তাহলে সেগুলি বড় জয়েন্ট জমতে আরম্ভ করে। শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়।জয়েন্টগুলি স্পর্শ করলে উষ্ণ অনুভূতি হয়।
শরীরের বিভিন্ন অংশের চামড়ার রং ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
ইউরিক অ্যাসিডের কারণে কিডনিতে পাথর জমতে পারে। সেক্ষেত্রে
কোমরে ব্যাথা, কোমরের দুইধারে ব্যথা, ঘন ঘন মূত্রত্যাগ, মূত্রের রং বদল, অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ এবং কখনও কখনও রক্ত নির্গতও হতে পারে। ক্লান্তি এবং বমিও হয়
কখনও কখনও অন্য রোগের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবেও শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যেতে পারে। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে টক জাতীয় খাবার, অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন পনির, অরহর ডাল, মাংস খাওয়া একরকম বন্ধ করে দেওয়া। কিডনিকে সুস্থ রাখতে প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে। এবং এর ফলে মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বেরিয়ে যাবে।
ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির কারণ
শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট কারণ নেই। কখনও বংশগত কারণে আবার কখনও পারিপার্শ্বিক কারণে শরীরের ইউরিক অ্যাসিড জমে। এছাড়াও ওজন বৃদ্ধি, অ্যালকোহল সেবন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, অতিরিক্ত প্রোটিন যুক্ত খাবার, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি নানা কারণে শরীরের ইউরিক অ্যাসিড জমতে পারে। এছাড়াও গাউট, ক্যান্সার এবং কিডনির রোগের চিকিৎসার কারণেও শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পায়।
গাউট
গাউটের কারণে শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড জমতে থাকে জয়েন্ট এবং টিস্যুতে। ফলে শরীরের ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং টামড়ার রং ফ্যাকাশে হয়ে যায়। পায়ের বুড়ো আঙ্গুল, গোড়ালি এবং হাঁটুতে অসহ্য ব্যথা হয়।
ক্যান্সার
ক্যান্সারের কারণে কোষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে পিউরিন নির্গত হয়। এবং তা ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড সৃষ্টি করে। এই ইউরিক অ্যাসিড ধীরে ধীরে রক্তে মিশতে থাকে। ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপির সময় আক্রান্ত কোষগুলিকে মেরে ফেলা হয়। তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া স্বরূপই দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ে।
কিডনি
রক্তের যাবতীয় বর্জ্য পদার্থ এমনকি ইউরিক অ্যাসিডও কিডনি দিয়ে ছেঁকে বের হয়। কিডনি অসুস্থ হলে সে তার কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে ইউরিক অ্যাসিডও শরীরের বাইরে বেরোনোর পরিবর্তে রক্তে জমতে থাকে।
ফ্যালকোনি সিনড্রোম
ফ্যালকোনি সিনড্রোম হল শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে যাওয়া। যদিও এই রোগ বেশ বিরল। এক্ষেত্রে কিডনি নির্দিষ্ট খনিজ শোষণ করতে পারে না। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্লান্তি, ডিহাইড্রেশন এবং হাড়ের সমস্যা দেখা দেয়। মূত্রের মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বেরিয়ে যায়।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-10-31 17:58:40
Source link
Leave a Reply