হাইলাইটস
- মেয়েকে নিয়ে বড়ই চিন্তায় থাকেন শাশ্বতী। একে মেয়ে বড় হচ্ছে, তায় তার শোয়া-বসা ঠিক নয়।
- মেয়ের পাশে যে শান্তিতে ঘুমোবেন শাশ্বতী, তার জো নেই।
- কারণ মেয়ে ঘুমের সময়ে এতটাই ছটফট করে যে চোখ লেগে এলেও ঘুম ভেঙে যায়। তাই বড়ই বিরক্ত শাশ্বতী।
অন্য দিকে সদ্য বিয়ে হয়েছে রুশতীর। অনুভবের সঙ্গে দেখেশুনেই বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পরে এমন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে রুশতী যে সে কথা বাইরে কাউকে খুলেও বলার নয়। ঘুমের মাঝে অনুভব প্রায়শই এ পাশ- ও পাশ ফিরতে থাকে। প্রথম প্রথম নেহাতই বদভ্যেস ভেবে এড়িয়ে গিয়েছিল রুশতী। কিন্তু বহু বছর ধরে একা ঘুমিয়ে অভ্যস্ত রুশতীর জীবনে স্বামীর ঘুমের মাঝে এই অস্বাভাবিক অস্থিরতাই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এই যে রাতে ঘুমের মাঝে এত অস্থিরতা, সেই সমস্যাটার গোড়ার দিকটা শাশ্বতী বা রুশতী কেউই তলিয়ে ভাবেননি। যাকে বদভ্যেস ভাবছেন তারা, তা আসলে ডাক্তারি পোশাকি ভাষায় আর এল এস। অর্থাৎ বুঝিয়ে বললে এ হল রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম। এই সিনড্রোম থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় আছে নিজের হাতের মুঠোয়। ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে কমতে থাকে রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম। কিছু সময় পরে তা একেবারে সেরেও যায়। দেখে নেওয়া যাক কী কী পদ্ধতি মেনে চললে রাতের ঘুম হবে নিরুপদ্রবে এবং আরামে।
ঠান্ডা কিংবা গরম কমপ্রেস
কোথাও কোনও চোট লাগলে বা আঘাত পেলেই একমাত্র কমপ্রেসে কাজ দেয়, এই ধারণা ভুল। রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম কমানোর জন্যও এই কমপ্রেস বড় উপকারী। এর জন্য মেডিকেটেড কমপ্রেস প্যাড কিনতে পাওয়া যায়। তবে সেগুলোর দামও নেহাত কম নয়। তাই চাইলে বাড়িতেই সহজ উপায়ে কমপ্রেস করা যায়। পাতলা সুতির কাপড় গরম অথবা ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে, নিংড়ে নিয়ে পায়ের ওপরে রাখতে হবে। আরাম তো মিলবেই, তার পাশাপাশি রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম কমবে অনেকটাই।
সাবানের কারিকুরি
কেউ কী ধরনের সাবান ব্যবহার করেন, কেমন সুবাস ছড়িয়ে থাকে তাঁর ঘর জুড়ে, সে সবই প্রভাব ফেলে মানুষের জীবনে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যদি ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করেন কেউ, তা হলে তাঁর রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম কমতে পারে। অনেকেরই অভ্যেস রাতে স্নান সেরে ঘুমোতে যাওয়া। সে ক্ষেত্রে এই সাবানের ব্যবহার আরও উপকারী। সাবানে থাকা ম্যাগনেসিয়াম গ্লাইসিনেট প্রভাব ফেলে রেস্টলেস লেগস সিনড্রোমের ওপরে।
নিজেকে সংযত করা অত্যন্ত জরুরি
রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম তৈরি হয় কারণ পায়ে প্রবল অস্বস্তি শুরু হয়। যখনই পায়ে অস্বস্তি হতে শুরু করেছে বা বার বার এ পাশ কিংবা ও পাশ ফিরতে মন চাইছে, সেই মুহূর্তেই নিজেকে সংযত করতে হবে। অর্থাৎ ওই পরিস্থিতিতে অস্বস্তিকে মাথা চাড়া না দিয়ে পায়ের স্ট্রেচিং জাতীয় হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। যখনই কোনও নেগেটিভ এনার্জি তৈরি হয়, তখন তাকে পাত্তা না দেওয়াই সমস্যা মোকাবিলার সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
ভারী কম্বল বা চাদরও অনেকাংশে সাহায্য করতে পারে
রাতের বিছানায় শুয়ে ভেতর থেকে নড়াচড়া করার যতই প্রবণতা তৈরি হোক কিংবা তাড়না আসুক, কেউ ভারী কাজ করতে পারে না সে সময়ে। কারণ দিনের শেষে খাওয়ার পরে বিছানায় এলিয়ে পড়া মাত্রই শরীর এবং মন দুই-ই আরাম চায়। তাই যদি ভারী কম্বল কিংবা চাদর গায়ে দিয়ে শোওয়া যায়, অনেকাংশে তা রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম কমাতে সাহায্য করে। যেমন গায়ের ওপর হাল্কা চাদর থাকলে যতটা স্বচ্ছন্দে নড়াচড়া করা যায়, ভারী কম্বল বা চাদর থাকলে অনেক বেশি চেষ্টা করতে হয়। রাতের আরামের বিছানায় তা করতে ইচ্ছে করবে না। আর এ ভাবেই পরোক্ষ ভাবে রেস্টলেস লেগস সিনড্রোমকে কাবু করা যাবে।
কিছু খাবার একেবারেই নিষেধের তালিকায়
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কফি বা কোনও অ্যালকোহল খাওয়া এবং ধূমপান করা দুটোই বারণ। কারণ এগুলি শরীরকে কমবেশি অস্থির করে তোলে। ফলে শোওয়ার আগে এগুলো এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
রাতের ঘুম ভালো করার জন্য নিজেকেও প্রস্তুত হতে হয়। শরীর সঙ্গ দিলে রাতে খাওয়ার পর্ব মিটে গেলে স্নান বা গা, হাত, পা ধুয়ে হালকা করে কোনও মিউজিক চালিয়ে নিতে পারেন। কারও কোনও স্পিকারের বক্তব্য শোনার অভ্যেস থাকলে এটাই আদর্শ সময়। দিনের শেষে ঘুম ভালো না হলে পরের দিনের লড়াই শুরু হবে কী করে? তাই আজই সচেতন হোন। আর রেস্টলেস লেগস সিনড্রোমের মতো বিষয়কে আয়ত্তে আনুন নিজেই।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-09-08 17:44:39
Source link
Leave a Reply