হাইলাইটস
- বর্ষাকালে চোখে সংক্রমণের সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
- এই সময় কনজাঙ্কটিভাইটিসের সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
- অনেক সময় চোখ লাল হয়ে গেলে, ফুলে গেলে বা জ্বালা হলেও আমরা এ বিষয় সচেতন হই না।
- তবে এ ধরনের গাফিলতির কারণে সমস্যা বাড়তে পারে।
- প্রাথমিক পর্যায় এ বিষয় যত্ন নিলে সুফল পেতে পারেন।
কনজাঙ্কটিভাইটিস কী?
কোষের পাতলা পর্দা দিয়ে তৈরি চোখের কনজাঙ্কটিভাইটিস। এটি চোখের পলকের অভ্যন্তরের স্তর ও চোখের সাদা অংশকে আবৃত করে রাখে। কনজাঙ্কটিভা ফুলে গেলে ছোট রক্তবাহিকা বা কোষ অধিক সক্রিয় হয়ে যায়। যার ফলে চোখে সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। চোখ লাল ও গোলাপী হয়ে পড়ে। ১ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত এমন থাকতে পারে। কনজাঙ্কটিভাইটিসের কারণে চোখ চুলকায়, এলার্জি ও জ্বালা হতে পারে।
- চোখ লাল হয়ে যাওয়া। চোখ থেকে জল পড়া।
- সকালে উঠলে চোখের পাতা পরস্পরের সঙ্গে আটকে থাকা বা চোখ খুলতে সমস্যা হওয়া।
- চোখ চুলকানো, জ্বালা ও অবসাদ।
- কনট্যাক্ট লেন্স লাগাতে সমস্যা হওয়া।
কনজাঙ্কটিভাইটিসের প্রকারভেদ
প্রধানত পাঁচ প্রকারের কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়ে থাকে। এগুলি হল- অ্যালার্জিক কনজাঙ্কটিভাইটিস, জয়েন্ট প্যাপিলারি কনজাঙ্কটিভাইটিস, ব্যাক্টিরিয়াল কনজাঙ্কটিভাইটিস, ভাইরাল কনজাঙ্কটিভাইটিস, নিওনেটাল কনজাঙ্কটিভাইটিস। এর মধ্যে দু-তিন ধরনের কনজাঙ্কটিভাইটিস সবচেয়ে বেশি দেখা যায়– অ্যালার্জিক কনজাঙ্কটিভাইটিস ও ভাইরাল এবং ব্যাক্টিরিয়াল কনজাঙ্কটিভাইটিস।
অ্যালার্জিক কনজাঙ্কটিভাইটিস
ধুলো, ধুঁয়ো, ফুলের পরাগ রেণু, কার্বনের কণা অথবা কিছু কিছু ক্ষেত্রে কসমেটিকসের কারণে এই ধরনের কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়ে থাকে। এতে চোখ লাল হয়ে যায়, চোখ চুলকায় এবং জ্বালা করে। আবার চোখ ভারী হয়ে যায় এবং ফুলেও যেতে পারে।
ব্যাক্টিরিয়াল কনজাঙ্কটিভাইটিস
একে আবার আই ফ্লু-ও বলা হয়। প্রথম বৃষ্টির সময় স্টেফায়লোকোকস, নিউমোকোকাস, হিমোকোকাস ইনফ্লুয়েঞ্জার ইত্যাদি জীবাণুর কারণে এই সংক্রমণ হয়ে থাকে। এর ফলে চোখ ব্যথা ও লাল হয়। চোখ ফুলে যায় এবং চ্যাটচ্যাট করতে শুরু করে। এই কনজাঙ্কটিভাইটিসে চোখ থেকে জল পড়ে।
ভাইরাল কনজাঙ্কটিভাইটিস
বর্ষার জলে ছড়িয়ে থাকা এডিনোভাইরাসের কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। ভাইরাল কনজাঙ্কটিভাইটিস হলে কানের গোড়া ফুলে যেতে পারে। কর্নিয়ায় সূক্ষ্ম ক্ষত দেখা যায়। যার ফলে রোগী চোখে কম দেখতে পায় এবং চোখ লাল হয়ে যায়। সঠিক সময় চিকিৎসা না-করলে ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি চিরকালের জন্য অস্পষ্ট হয়ে যেতে পারে।
কনজাঙ্কটিভাইটিস থেকে বাঁচার উপায়
নেত্র রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষাকালে আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে এই সংক্রমণ হয়। এর থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা-
- নিজের তোয়ালে বা টিস্যু অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না।কাশী বা হাঁচার সময় মুখ ও নাক ভালোভাবে ঢেকে নিন।
- নিজের চোখ ছোঁবেন না ডলবেন না।নিজের কনট্যাক্ট লেন্স কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না।
- বার বার নিজের হাত ধোবেন বা স্যানিটাইজ করবেন। কল, হ্যান্ডেল ইত্যাদি যে সমস্ত বস্তুগুলি সকলে ছুঁয়ে থাকে তা কোনও অ্যান্টিসেপ্টিক দিয়ে পরিষ্কার করুন।
- মৌসুমী অ্যালার্জি দ্বারা যদি আপনি প্রায়ই আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তা হলে নিজের চিকিৎসকের পরামর্শে রোগ মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।
- নিয়মিত সাঁতার কাটলে চোখে সুইমিং গগলস পরে জলে নামুন। এর ফলে জলে উপস্থিত ব্যাক্টিরিয়া বা অন্য কোনও সূক্ষ্ণ জীবাণুর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পারবেন।
- স্নান বা যে কোনও ধপনের জলের সংস্পর্শে আসার পূর্বে নিজের কনট্যাক্ট লেন্স খুলে রেখে দিন। যাতে কোনও ব্যাক্টিরিয়া আপনার লেন্স ও চোখের মাঝখানে না-আটকে যায়। এই মরশুমে অযথা চোখে হত দিতে নেই। তাছাড়া চিকিৎসকদের পরামর্শ ছাড়া চোখে কোনও ওষুধ দেবেন না।বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় রোদ চশমা পরে বের হওয়া ভালো।
এই সাধারণ কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে কনজাঙ্কটিভাইটিস থেকে নিরাপদে থাকতে পারবেন।
প্রথমে একটি চোখে কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়, তার পর দ্বিতীয় চোখেও সেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এক সঙ্গে দুটি চোখই সংক্রমিত হয়ে পড়ে। এই সমস্যা বাড়লে জ্বরও হতে পারে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-31 11:05:35
Source link
Leave a Reply