কোভিড চলাকালীন শারীরিক ও মানসিক সম্পর্কে বিবাদ বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে, বলছে সমীক্ষা
জানুন
সমীক্ষার ফল
মহামারি চলাকালীন মানুষের উদ্বেগ, অবসাদ, হতাশা, স্ট্রেস লাগামছাড়া ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজের মানসিক কষ্টের কারণে সঙ্গীর উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করে নিরাশা কাটানোর চেষ্টা করেছেন অনেকে।
সমীক্ষা যা বলছে
সমীক্ষা বলছে একই বিষয় নিয়ে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ঝগড়ায় জড়িয়েছেন দম্পতি এবং প্রেমিক-প্রেমিকারা।
সমীক্ষাটি হয় ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে। একটি নিরাপদ স্থানে ৫১০ জন মানুষের জড়ো করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কোভিড সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন করা হয়। সংসার, স্বাস্থ্য, সম্পর্ক, অর্থ, দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সংক্রান্ত তাঁদের নানা প্রশ্নের জবাব শুনে এটা স্পষ্ট হয় যে কোভিড পরিস্থিতির আগে দম্পতিদের মধ্যে ঝগড়া বা মানসিক বিবাদ তুলনামূলক কম হত। কোভিডের আগে যে যার নিজের কাজে ব্যস্ত থাকতেন। একে অপরের সঙ্গে দেখা কম হত। কিন্তু কোভিড চলাকালীন লকডাউনের জেরে অর্থনৈতিক সমস্যা যেমন দেখা দেয়, তেমনই নানা ক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব শুরু হয়। এই সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে নিজেদের মানসিক অবসাদ কাটাতে স্ত্রীর উপর শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন শুরু করেন স্বামীরাও। কোভিড চলাকালীনও তাই হয়েছে। এমনকি যাঁদের মধ্যে সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ ছিল তাঁদের মধ্যে নানা কারণে ভয়ানক অশান্তি বেঁধেছে।
অর্থনৈতিক হতাশা
বিশেষজ্ঞদের কথায়, কোভিড চলাকালীন অর্থনৈতিক হতাশা এতটাই বেড়েছে যে হতাশা ভোলার জন্য মদ্যপান এবং মাদক সেবনের হার মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে। নেশার ফলে ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে। এদিকে নেশার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগানেরও যথেষ্ট অভাব। সেই অভাব ভোলাতে নেশা। এই চক্রব্যূহে বন্দি হয়েই সম্পর্কগুলি প্রভাবিত হয়েছে। করোনা চলাকালীন নতুন নেশাড়ুর সংখ্যাও যথেষ্ট বেড়েছে বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
নেশাড়ুদের মেজাজের শিকার হতে হয়েছে যাঁরা নেশা করেন না তাঁদের। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরাই সবচেয়ে ভালো নিশানা। আর পরিবারের সদস্যদের মধ্য হাতের নাগালে থাকেন স্ত্রী। ফলে হতাশা কাটাতে স্ত্রীর উপর গায়ে হাত তুলে বা ঝগড়া করেই নিজের রাগ পোষোনোর চেষ্টা করেছেন পুরুষরা।
বিনা পরিশ্রমেই সাহায্য
আবার আরেকটি সমীক্ষা বলছে যে মহামারি চলাকালীন এক শ্রেণির মানুষ বিনা পরিশ্রমেই সাহায্য পেয়েছেন। এঁরা মূলত দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। সরকার বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে বিনামূল্যে খাদ্য, চিকিৎসা পাওয়ার ফলে স্বভাবসিদ্ধভাবেই হাতের জমানো টাকা মাদক বা মদ্যপানে খরচ করেছেন। সেই শ্রেণিতে নেশা করে ঘরে অশান্তি করা নিত্যদিনের ঘটনা।
ওয়ার্ক ফ্রম হোম
অন্যদিকে বাড়ি থেকে অফিসের কাজ শুরু হওয়ার পর মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে কর্মরতাদের। পরিবারের মহিলা সদস্য বাড়িতে বসে কাজ করছেন মানে বাকিদের আশা ঘরের সমস্ত দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে করতেই তিনি অফিসের কাজ সামলাবেন। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়। কিন্তু অনেক সময়ই অফিসের কাজের মাঝে ঘরের কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন বহু মহিলা। পুরুষদের সেসব ঝামেলা তুলনামূলকভাবে কম পোহাতে হয়। বিশেষ করে ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে এধরনের ভেদাভেদ স্পষ্টভাবে দেখা দিয়েছে। পরিবারের সদস্যদের এধরনের আতচরণ সহ্য করতে করতে হয়তো মহিলাও প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে। ফলাফল, পরিবারে অশান্তি।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-29 22:30:56
Source link
Leave a Reply