হাইলাইটস
- ভারতে Corona পরিস্থিতি দ্বিতীয় ঢেউয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল।
- সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার, সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত নানা খবর এবং ছবি, অক্সিজেনের আকাল থেকেই তা স্পষ্ট হয়েছে।
- কিন্তু করোনা থেকে সেরে উঠলেই কি সমস্যা মিটছে? Post Covid পর্যায়েও সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকেরা।
- এবং এর কারণ কিন্তু যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
বাগালকোটের বাসিন্দা সাবিনার কথাই ধরা যাক। কয়েক মাস আগে তাঁর সামান্য সর্দি আর ঘুষঘুষে কাশি হয়েছিল মাত্র। কিন্তু চারপাশে Corona-র আতঙ্কে তিনি ফেলে রাখা শ্রেয় বলে মনে করেননি। ফলে তড়িঘড়ি আরটিপিসিআর টেস্ট করিয়েছিলেন। যেমন আশঙ্কা করেছিলেন, তেমনই হল। পরীক্ষার রিপোর্ট এল পজিটিভ। ফের আতঙ্কে দিন গোনা। তবে ভালো খবর যে, পনেরো দিনের মাথায় দিব্যি সুস্থও হয়ে গেলেন সাবিনা। আবারও নিয়মমাফিক পরীক্ষা হল। এ বার তিনি Corona নেগেটিভ। কিন্তু কাশির সমস্যা তাঁর কমছিলই না। ফলে ফের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেন। চিকিৎসকও এর কারণ বুঝতে না পেরে সিটি স্ক্যান করানোই ঠিক বলে মনস্থির করলেন। সেই পরীক্ষায় দেখা গেল, তাঁর ফুসফুসে টিউমর ধরা পড়েছে। এবং সেটি ম্যালিগন্যান্ট!
আবার অ্যান্টি-বায়োটিক শুরু। বেশ কিছু দিন চিকিৎসার পরে টিউমর সেরেও গেল। কিন্তু তবু মন মানছিল না। সাবিনার ছেলে এক প্রকার জোর করাতেই বেঙ্গালুরু গেলেন সাবিনা। সেখানে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলল। জানা গেল, সাবিনা Lung Cancer-এ আক্রান্ত।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ডাক্তার সি রামচন্দ্রন জানিয়েছেন, Lung Cancer সাধারণত ধরা পড়ে অত্যন্ত দেরিতে। কিন্তু এক বার লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরে যে দ্রুতি গতিতে রোগ ছড়ায়, তাতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেশ জটিল হয়ে দাঁড়ায় সমস্যা। তাঁর কথায়, সাধারণত প্রায় ৯০% রোগীরই এমন অবস্থায় রোগ ধরা পড়ে, যখন ক্যানসার মারাত্মক ভাবে ছড়িয়ে গেছে। তখন চিকিৎসারও উপায় থাকে না তেমন। ফলে Lung Cancer থেকে সেরে উঠে সুস্থ জীবনে ফেরার হার বেশ কম।
করোনায় আক্রান্ত হওয়া কোনও সুখকর খবর নয়। তবে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ফলে নানা চিকিৎসা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতেই থাকে। তাই সেই সময়ে Lung Cancer ধরা পড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। অর্থাৎ করোনা পরোক্ষ ভাবে Lung Cancer তাড়াতাড়ি ধরতে সক্ষম হচ্ছে, এ কথা বলাই যায়। অনেক সময়ে দেখা যায় যে, সাধারণ কাশি বা ঘুষঘুষে কাশি মানুষ চেপে রেখে বা সামান্য ওষুধেই সারিয়ে ফেলতে চায়। এর ফল যে হিতে বিপরীত হতে পারে, সেই আশঙ্কা কারও মনেই সে ভাবে দাগ কাটে না।
আবার উল্টোটাও হচ্ছে। যেমন সর্দি বা কাশি হলে করোনা হতে পারে এই আতঙ্কেই অনেকে পরীক্ষা করাতে চান না। এতে যেমন করোনা জাঁকিয়ে বসতে পারে, তেমনই প্রাণহানির আশঙ্কাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কেউ কেউ আবার করোনা ধরা পড়লে শুধুমাত্র ওষুধ এবং সিরাপেই তা সারিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এখনকার দিনে বাড়িতে বসে আরটিপিআর টেস্ট করা সম্ভব, ওষুধও চলে আসে বাড়ির দরজায়। ফলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অনেকে টেস্ট করাতেই চান না।
ডাক্তার রামচন্দ্রন বলছেন, একমাত্র এক্স-রে কিং সিটি স্ক্যানের মাধ্যমেই লাং ক্যানসার ধরা পড়ে। ফলে এই পরীক্ষা করা নিতান্ত আবশ্যিক। এমনিতেই বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে লাং ক্যানসার তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে ধরা পড়ে। ফলে রোগ সারানো তো দূরের কথা, বহু ক্ষেত্রে রোগী প্রাণ সংশয় হয়। করোনার পরিস্থিতি যদি দ্রুত লাং ক্যানসার নির্ণয়ে সাহায্য করে, তা এক দিকে ভালই। এতে অত্যন্ত চিকিৎসা করার সুযোগ মেলে।
আরও পড়ুন
Lung Cancer-কে কেন্দ্র করে শহরের মানুষদের পরিস্থিতি যেখানে এ রকম, সেখানে গ্রামাঞ্চলের মানুশদের অবস্থা যে শোচনীয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেখানে করোনা পরীক্ষাই হচ্ছে তুলনামূলক ভাবে কম। মানুষের সচেতনতার অভাবও রোগের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে বহু গুণ। ফলে Lung Cancer সারানোর পর্যায়ে ধরা প্রায় পড়ছে না বললেই চলে। সামনেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে। ফলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই সচেতন হোন।
দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব পরীক্ষা করান। Corona হোক বা না হোক, সামান্য কাশিকেও ফেলে রাখা চলবে না। আবার Corona সেরে যাওয়ার পরেও লক্ষণ বজায় থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যত তাড়াতাড়ি পরীক্ষা এবং রোগ নির্ণয় হবে, সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও ততই প্রবল হবে। সুস্থ থাকতে তাই সামান্য লক্ষণেও সতর্ক হওয়া বাঞ্ছনীয়।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-27 10:11:51
Source link
Leave a Reply