হাইলাইটস
- সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৪০৫০ ফিট। মেদিকেরি শহর থেকে এই পাহাড়ের দূরত্ব মাত্র ১৮ কিলোমিটার।
- পুষ্পগিরি অভয়ারণ্যের একটা অংশ এই মণ্ডলপট্টি পাহাড়ে অবস্থিত।
- জিপ রাইডিং বা রোড ট্রিপের জন্য মেডিকেরি থেকে মণ্ডলপট্টি পাহাড়ের রাস্তাটি দারুণ জনপ্রিয়।
- এই পাহাড়টিই এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হযে দাঁড়িয়েছে।
নীল আকাশের বুকে মুখ গুঁজে থাকতে থাকতেই বুঝি নীলের প্রতি এত প্রেম জেগেছিল মণ্ডলপট্টি পাহাড়ের। চেয়েছিল আকাশের বুকে যেমন সে মুখ গুঁজে থাকে তেমনই আরেকজন কেউ তার বুকেও সমস্ত ভালোবাসা নিয়েই মুখ গুঁজে পড়ে থাকবে। তবে চাইলেই তো আর সবসময় মেলে না। কিছু অর্জন করতে গেলে অনেকদিনের তপস্যা লাগে।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য় প্রকৃতি দেবী কথা রেখেছেন। পাহাড়ের বুকে মুখ গুঁজে পড়ে থাকার জন্য পাঠিয়ে দিলেন লক্ষ লক্ষ ফুল। ফুলের নাম নীলকুরিঞ্জি। তবে সবসময় নয় এক যুগ মানে ১২ বছর পর পর এই ফুল ফুটে ওঠে মণ্ডলপট্টি পাহাড়ের বুকে।
কর্ণাটকের মণ্ডলপট্টি পাহাড়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৪০৫০ ফিট। মেদিকেরি শহর থেকে এই পাহাড়ের দূরত্ব মাত্র ১৮ কিলোমিটার। পুষ্পগিরি অভয়ারণ্যের একটা অংশ এই মণ্ডলপট্টি পাহাড়ে অবস্থিত। জিপ রাইডিং বা রোড ট্রিপের জন্য মেডিকেরি থেকে মণ্ডলপট্টি পাহাড়ের রাস্তাটি দারুণ জনপ্রিয়। এই পাহাড়টিই এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হযে দাঁড়িয়েছে।
পশ্চিমঘাট পর্বতের অংশ এই মণ্ডলপট্টি পাহাড় জুড়ে এখন শুধুই নীলচে বেগুনি রং ছেয়ে আছে। পাহাড়ে ফুটেছে দুর্লভ প্রজাতির নীলকুরিঞ্জি ফুল। দুর্লভ এই কারণে যে এই ফুল প্রতি ১২ বছরে একবার ফোটে। মানে প্রতি একযুগ অন্ত এই ফুলের দর্শন পান সকলে। শুধু কর্ণাটকই নয়, কেরালা, তামিলনাড়ুতেও এই ফুল ফোটে। এবং সেখানেও ফুল ফোটে বারো বছর পর। তামিলনাড়ুর পালিয়ান উপজাতির লোকেরা এই ফুলের প্রস্ফুটন দেখে দিন মাস বছর গণনা করেন। প্রধানত নীলগিরি পাহাড় অঞ্চলের ফুল বলে এর নাম নীলকুরিঞ্জি। দেখতেও নীলচে বেগুনি।
নীলকুরিঞ্জি ফুল সাধারণত ১৩০০ থেকে ২৪০০ মিটার উঁচুতে ফোটে। গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী এই গাছের উদ্ভিদের উচ্চতা সাধারণত ৩০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার। সর্বোচ্চ ১৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্তও এই উদ্ভিদকে বড় হতে দেখা গেছে। সেই দুর্লভ ফুলেই এখন ছেয়ে গেছে মণ্ডলপট্টি পাহাড়।
মহামারির আতঙ্ক থাকা সত্ত্বেও প্রতিষেধক নিয়ে অনেকেই ভ্রমণ শুরু করে দিয়েছেন। যাঁদের ভ্যাক্সিনের সম্পূর্ণ ডোজ নেোয়া হয়ে গেছে তাঁরা কিন্তু অনায়াসেই কর্ণাটকের এই পর্বতের ফুল দেখে আসতে পারেন। স্থানীয়রা তো প্রায়ি ফুল দেখতে পাহাড়ে গিয়ে হাজির হচ্ছেন। এখনই প্রকৃতির এই সৌন্দর্য দেখে উপভোগ করে না নিলে যে ফের বারো বছর অপেক্ষা করতে হবে।
কীভাবে যাবেন নীলকুরিঞ্জি ফুল দেখতে?
– মেদিকেরি থেকে মণ্ডল পাহাড়ের দূরত্ব মাত্র ১৮ কিলোমিটার। মেদিকেরি থেকে গাড়িতে মণ্ডলপট্টি যাওয়া যায়।
– এছাড়াও অ্যাবি জলপ্রপাতের রুট ধরে হেঁটে বা গাড়িতে যেতে পারেন সেখান।
– হেঁটে যেতে পারে মাক্কানদুরু পথ দিয়েও। তবে হেঁটে যাওয়ার পক্ষে অ্যাবি ফলস্-এর রাস্তা অনেক কম দূর্তব এবং সুবিধা জনক।
পর্যটন গাইড
– মেদিকেরি থেকে মণ্ডলপট্টি পাহাড় যাওয়ার জন্য জিপ ভাড়া পাওয়া যায়। এই জিপে চড়ে যাওয়াটাই এখানকার বিশেষত্ব।
– মণ্ডলপট্টি ফরেস্ট চেকিংপয়েন্টে জিপ পার্ক করতে হয়।
– পাহাড়ে প্রবেশ করতে গেলে নির্দিষ্ট প্রবেশ মূল্য দিতে হয়। ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত পাহাড় ভ্রমণের সেরা সময়।
– মণ্ডলপট্টি অরণ্যে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সেখান থেকে সূর্যাস্ত দেখা বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা যায় অনায়াসে।
– যাঁরা বেশি হাঁটতে পারেন না তাঁদের জন্য ওয়াচ টাওয়ার আদর্শ জায়গা।
– ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে মণ্ডলপট্টি পাহাড়ে ওঠা যায় না।
– আর পাহাড়ে কিন্তু মোবাইল টাওয়ার বিশেষ পাওয়া যায় না।
– সেখানে জল, বাথরুম, খাবারেরও কোনও ব্যবস্থা নেই।
– মণ্ডলপট্টি থেকে কুর্গের দূরত্ব ২০ কিলোমিটারের সামান্য বেশি।
– মণ্ডলপট্টি পাহাড়ে নীলকুরিঞ্জি ফুল দেখে ট্রেকিং করার পর কুর্গে ফেরাই ভালো। কুর্গের ট্রি হাউজে থাকার আনন্দটাও মিস করা উচিত নয়।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-23 17:15:24
Source link
Leave a Reply