হাইলাইটস
- অপরাজিতা নিজের পুত্রবধূকে মেয়ের মতো একেবরেই দেখেন না। বরং তাকে নিজের মেয়েই মনে করেন। না হলে দুদিন ধরে টুকানের এত মেজাজ মেনে নেন?
- দুদিন ধরেই টুকানের মেজাজ খিচখিচে হয়ে আছে। অপরাজিতা ক্যালেন্ডার দেখেই বুঝলেন যে টুকানের পিরিয়ডের সময় চলে আসছে।
- এই কটা দিন ও এরকম করবেই।
প্রিমেনস্টুরয়াল সিন্ড্রম বা পিএমএস কী?
পিরিয়ড শুরুর সপ্তাহখানেক আগে মহিলাদের শারীরিক কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। একেই বলে প্রিমেনস্টুরয়াল সিন্ড্রম বা পিএমএস। পিরিয়ড চলার প্রায় চতুর্থ দিন পর্যন্ত এই উপসর্গ চলে। প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রমের শারীরিক এবং মানসিক উপসর্গগুলি কম বেশি সকলের মধ্যেই দেখা যায়।
– পেট বা শরীর ফুলে যাওয়া
– হজমের সমস্যা
– মাথা ব্যাথা
– স্তনের কাঠিন্য হারানো
– মেজাজ পরিবর্তন বা মুড সুইং
– বিরক্তিভাব
– উদ্বেগ
– অনিদ্রা
– বিভ্রান্ত হওয়া
– অবসাদ ও হতাশা
ব্যক্তি বিশেষে একেক জনের শরীরের একেক ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। অনেক মহিলারই অত্যাধিক বেশি উপসর্গ দেখা দয়ে এবং এর ফলে এঁরা কষ্টও পান বেশ। এর পোশাকী নাম পিএমডিডি বা প্রিমেনস্ট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার। যে সব মহিলার পিএমডিডি-র থাকে তাঁরে উপরোক্ত উপসর্গগুলির মধ্যে কম করে চারটি উপসর্গ দেখা দেয়। এর ফলে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নানা বাধার সৃষ্টি হয়।
পিএমএস বা পিএমডিডি-র সঠিক কারণ আজও বিশেষজ্ঞদের কাছে অজানা। তবে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের যে এই শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সে ব্যাপারে তাঁরা একমত।
পিএমএস এবং পিএমডিডি-র সাবেকি চিকিৎসার মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত ওরাল কনস্ট্রাসেপ্টিভ এবং অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টের ব্যবহার। তবে এই উপসর্গের সমস্যা থেকে আরাম মিলতে আরও কিছু সাপ্লিমেন্টের ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ক্যালসিয়াম
যে সব মহিলারা পিএমএস উপসর্গে ভোগেন তাঁদের শরীরের ক্যালসিয়ামের অভাব থাকে। আর পিরিয়ড চলাকালীন শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রার নানা পরিবর্তন হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হলে বা তার মাত্রা স্বাভাবিক থাকে পিএমএস-এর সমস্য়ায় মহিলাদের বিশেষ ভুগতে হয় না। শরীররে ফোলাভাব, ক্লান্তি, মন খারাপ, মুড সুইং, উদ্বেগ ইত্যাদি লক্ষণগুলিও বিশেষ দেখা যায় না।
শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হতেই যে ওষুধ খেতে হবে তার কোনও মানে নেই। আগে পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হবে যে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আছে। সেই মতো পথ্য খেতে হবে। যে সমস্ত খাবারে ক্যালসিয়াম রয়েছে যেমন দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার (ছানা, দই, পনির), ডিম, পালং শাক ইত্যাদি বেশি করে খেতে হবে। প্রয়োজনে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট সেবন করা যেতেই পারে।
প্রাথমিকভাবে দৈনিক ৫০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম সেবন করা উচিত। ধীরে ধীরে পরমাণ বৃদ্ধি করা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার শরীরের মোটামুটি ১০০০ থেকে ১৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রয়োজন।
যদিও এক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।
ভিটামিন বি-6
মুড সুইং বা অন্যান্য মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে শরীরের ভিটামিন বি-6-এর ঘাটতি। এক্ষেত্রে খাবারের মাধ্যমে সেই ঘাটতি পূরণ করা যায়। চিনে বাদাম, আলু সহ অন্যান্য শর্করা জাতীয় সবজি, মটন লিভার, মাছ, দানা শস্য ইত্যাদি প্রতিদিনের খাবারে রাখলে ভিটামিন বি-6-এর ঘাটতি পূরণ হয়।
প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-6 গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে এর সাপ্লিমেন্ট নিতে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।
ম্যাগনেশিয়াম
অনেক মহিলার ক্ষেত্রেই দেখা গেছে শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতির কারণে পিএমএস উপসর্গের শিকার হন। এই কারণে উদ্বেগ, অবসাদ, হতাশা, অনিদ্রা, স্তনের নমনীয়তার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এক্ষেত্রেও ডায়েটের মাধ্যমে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করা যেতে পারে। নিয়মিত আমন্ড, সবজ শাক-সবজি, বাদাম ইত্যাদি খেতে হবে।
দিনে ২০০ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়ামের প্রয়োজন হয়। বয়স এবং লিঙ্গভেদে সেই পরিমাণ ৩০০-৪০০ মিলিগ্রাম হতে পারে।
এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড
কিছু ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন গামা-লিনোলেইক অ্যাসিড, আলফা-লিওলেইক অ্যাসিড ইত্যাদিতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি বা প্রদাহ রোহিত শক্তি। এর সাহায্যে পিএমএস উপসর্গ দূর করা সহজ। এগুলির সাপ্লিমেন্ট কিনতে পাওয়া যায়। দিনে ১ থেকে ২ গ্রাম অ্যাসিড প্রয়োজন। টানা তিন মাস এটি সেবনের পরই শরীরের ফল দেখা যায়। চিকিৎসক যেরকম পরামর্শ দেবেন সেই অনুসারেই সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-23 15:53:21
Source link
Leave a Reply