এ সময়টাতে বিশেষ করে শিশুদের জলবসন্ত বা চিকেন পক্স হয়ে থাকে। এটি ভয়াবহ রকমের ছোঁয়াচে। অসুখটি সাধারণভাবে নিরীহ মেজাজের। কিন্তু নবজাতক ও বয়স্ক লোকের ক্ষেত্রে জীবনসংহারী হয়ে উঠতে পারে। কেউ একবার এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রায় সারা জীবনের জন্য প্রাকৃতিকভাবে রোগপ্রতিরোধশক্তি লাভ করে। এটি ছড়ায় ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে গিয়ে, ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে। সাধারণভাবে চিকেন পক্স দুই থেকে আট বছরের শিশুর রোগ। সাধারণ দুর্বলতা, জ্বর-এসবের পর র্যাশ দেখা দেওয়ার মধ্য দিয়ে রোগের শুরু। কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে র্যাশ শুকিয়ে ঝরে যায়, যা সম্পূর্ণ সেরে উঠতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। র্যাশ ওঠে বুকে ও পিঠে বেশি। তবে মুখে, মাথায়, হাত ও পায়ের তালুতে, এমনকি মুখের ভেতর বা চোখেও উঠতে পারে।
চিকিৎসা
— জলবসন্ত থেকে স্পেসিস, এনকেফালাইটিস, নিউমোনিয়া ও অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। এসব জটিলতার চিকিৎসা সময়মতো করতে হবে।
— সাধারণভাবে জলবসন্তে আক্রান্ত শিশুর কোনো বিশেষ ওষুধের প্রয়োজন হয় না। প্যারাসিটামল সাধারণ উপসর্গে যথেষ্ট কার্যকর।
— বিশেষ প্রয়োজনে এমাইক্লোভির ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
— যেসব শিশু স্টেরয়েড ওষুধনির্ভর বা রোগপ্রতিরোধশক্তিতে দুর্বল, তাদের এ রোগের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত
— এ রোগের প্রতিরোধক টিকা বাজারে আছে। ভেরিলিক্স নামে পাওয়া যায়। এটি যথেষ্ট কার্যকর। কিছুটা দামি হলেও এ ভ্যাকসিনের মাধ্যমে শিশুকে জলবসন্তের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়। শিশুর বয়স এক বছর পূর্ণ হলে এক ডোজ টিকার মাধ্যমে চিকেন পক্স প্রতিরোধ করা যায়।
ডা· প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ০৪, ২০০৯
Leave a Reply