প্লাজমোডিয়াম প্যারাসাইটের সংক্রমণের ফলে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় মানুষ। এটি মশার শরীরে 18 দিন ধরে বেড়ে ওঠে এবং সেই মশা যখন মানুষকে কামড়ায় তখন তার লালার মধ্যে দিয়ে এটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। ম্যালেরিয়ার জীবাণু একবার মানুষের রক্তে প্রবেশ করলে জ্বর, কাঁপুনি, ঘাম ও মাথা যন্ত্রণার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে রোগীর কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কা পর্যন্ত থেকে যায়।
ভোরবেলা থেকে সন্ধ্যাবেলার মধ্যে এই মশা মানুষকে কামড়ায়। অসমতল খোলা মাঠ, বৃষ্টির জমা জল, পুকুর ও ক্ষরণে ডিম পাড়ে এই মশা। WHO-এর একোটি গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি বছর সারা বিশ্বে 2 কোটি মানুষ ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত হন। তার মধ্যে 4 লাখ মানুষ এই মারণ রোগে তাঁদের প্রাণ হারান।
ডেঙ্গি: ভোরবেলা ও সন্ধ্যাবেলা এর প্রবণতা সবচেয়ে বেশি
অন্যদিকে, এডিস মশার কামড়ে হওয়া সর্বাধিক ভাইরাল ইনফেকশন হল ডেঙ্গি। ভোরবেলা ও সন্ধ্যার ঠিক আগে এই মশা সবচেয়ে বেশি কামড়ায়। যেকোনো পাত্রে খুব সামান্য জলেই এই মশা ডিম পাড়তে পারে। সব চেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, এই মশার ডিম জল ছাড়া এক বছরের উপর বেঁচে থাকতে পারে।
জ্বর, প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা, চোখের পেছোনে ব্যাথা, জয়েন্টে ও পেশিতে ব্যাথা এই রোগের উপসর্গের মধ্যে পড়ে। শরীরে র্যাশ, বমি বমি ভাব ও বমি হওয়ার কারণে হ্যামারেজ শক ও মাল্টি-অর্গান ফেলিয়োর পর্যন্ত হতে পারে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় 10 থেকে 40 কোটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। কিন্তু উপযুক্ত চিকিৎসা এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমিয়ে দিতে পারে।
এছাড়াও, আপনি কি জানেন যে আপনি দ্বিতীয়বারও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হতে পারেন, এবং প্রথমবারের তুলনায় দ্বিতীয়বার তা আরও বেশি প্রাণঘাতী হতে পারে? যদি পরিসংখ্যানের কথা বলা হয়, WHO-র সেই গবেষণায় বলা হয়েছে, ডেঙ্গির কারণে প্রতি বছর 9 কোটি উপসর্গযুক্ত রোগী আক্রান্ত হন, প্রাণ হারান প্রায় 40,000।
মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচার উপায়
এই আশঙ্কাময় পরিবেশে, বিশেষত বর্ষাকালে এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য কী কী করনীয় রয়েছে? প্রথমেই রয়েছে সচেতনতা। সচেতনতা থেকেই আসে নিরাপত্তা ও সতর্কতা। নিজের আশেপাশে এই দানবীয় প্রাণীর ডিম পারার জায়গা অবশ্যই চিহ্নিত করুন।
1. জল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা থেকে বিরত থাকুন
আপনার বাড়ির এসি ও ফ্রিজের ট্রে-তে জল জমা এবং বালতি, মাটির পাত্র, ফুলের ভাস ও কন্টেনারে জল জমতে দেবেন না। এছাড়াও বর্ষাকালে কুলারের জল নিয়মিত পরিস্কার করা ও জলের ট্যাঙ্ক শুখনো রাখা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ কারণ জমা জলই এই প্রাণঘাতী মশার ডিম পাড়ার প্রধান কেন্দ্র।
2. আপনার আশেপাশের পরিবেশ স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন রাখুন
বাথরুমে বা রান্নাঘরের খারাপ নিকাশি ব্যবস্থার দিকে প্রতিনিয়ত নজর রাখুন। খোলা ড্রেন, খোলা ডাস্টবিন ও হাউজিং সোসাইটিতে খোলা ময়লা ফেলার জায়গা, আপনার জন্য অস্বাস্থ্যকর ও মশার ডিম পাড়ার স্থানে পরিণত হয়। আপনার বাড়ির আশেপাশে প্রতিনিয়ত স্যনিটাইজেশন ও পরিস্কার করা আপনার আশেপাশের লোকজনদের এই মারণ ভাইরসের কবল থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।
3. নিজের শরীর ঢেকে রাখুন
বাচ্চা, বয়স্ক ও গর্ভাবতি মহিলারা ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির মতো মারণ ভাইরাসে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হন। বাড়ির বাইরে পা রাখার সময় নিশ্চিত ভাবে সারা শরীর ঢাকা জামাকাপড় যেমন ফুল-স্লিভ শার্ট, ফুল প্যান্ট, পায়জামা পড়ে বেরোন।
4. সন্ধ্যাবেলা বাড়ির দরজা ও জানালা বন্ধ রাখুন
যেহেতু মশা সন্ধ্যাবেলার দিকে সব চেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে, বাড়ির দরজা ও জানালা সেই সময় বন্ধ রাখাই উপযুক্ত। কালো হিট ব্যবহার করে আপনার বাড়ির আঞ্চে-কানাচে লুকিয়ে থাকা মশাগুলোকে মারুন। এছাড়াও মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারির ব্যবহার করুন।
বিশ্ব মশা দিবস 2021
এই বছরের বিশ্ব মশা দিবসের থিম, ‘ম্যালেরিয়া শূন্য টার্গেটে পৌঁছনো’। এটি আমাদের ও আমাদের কাছের মানুষদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরির কথা মনে করাবে। উপরে লেখা সবকোটি স্বাস্থ্য বিধি মেনে এই কাজ করা সম্ভব। প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আরও জানতে এখানে মায়েদের জন্য হিটের নেওয়া একোটি সচেতনতার উদ্যোগ রয়েছে যেখানে একজন ডাক্তার বোঝাচ্ছেন কীভাবে আপনি নিজেকে ও আপনার পরিজনদের মশাবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন।
আমরা যে পরিবেশে বাঁচি তার বাস্তবতা সম্পর্কে একটি ধারণা এবং একসঙ্গে মিলে আমরা এই বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি। মনে রাখবেন, আপনার নিরাপত্তা আপনার হাতে। চলুন মারণকে মারি সকলে মিলে।
Disclaimer: The article has been produced on behalf of HIT by the Times Internet’s Spotlight team.
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-20 12:37:01
Source link
Leave a Reply