মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, ব্রাজিলের ১৬টি প্রতিষ্ঠানের স্টাডি অথাররা জানান যে, দশকের গবেষণার ফলে ADHD-কে নিউরোবায়োলজিক্যাল ডিসঅর্ডার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এটি সাধারণত ছোটবেলায় প্রথম ধরা পড়ে এবং প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও থেকে যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক এই গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, মাত্র ১০ শতাংশ বাচ্চার মধ্যে এটি বাড়াবাড়ি রকমের দেখা যায়। যদিও গবেষকরা জানিয়েছেন যে, অধিকাংশ কেসের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী উপশম প্রত্যাশা করা হয়। তবে ADHD-র মাল্টিমোডাল ট্রিটমেন্ট স্টাডির মাধ্যমে দেখা গিয়েছে যে, ADHD-তে আক্রান্ত ৯০ শতাংশ বাচ্চাই প্রাপ্ত বয়সকালে সেই সমস্ত লক্ষণ অভিজ্ঞতা করছে।
গবেষকদের মতে ADHD-র বৈশিষ্ট্যকে দু ধরনের লক্ষণের সমষ্টির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়। এই তাচ্ছিল্যপূর্ণ লক্ষণগুলিকে বিশৃঙ্খলা, ভুলে যাওয়া, কোনও কাজে আটকে থাকার মতো দেখায়। ADHD-র অন্য লক্ষণ হল অতিসক্রিয়তা ও আবেগপ্রবণতা।
বাচ্চাদের মধ্যে এই লক্ষণগুলি যে ভাবে প্রকাশ পায়, তা হল— অত্যধিক এনার্জি, যেখানে সেখানে দৌড়নো, বা কোথাও উঠতে শুরু করে দেওয়া। প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে এই লক্ষণগুলি মৌখিক আবেগপ্রবণতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষমতা এবং কোনও কাজ করার আগে কিছু চিন্তাভাবনা না-করার প্রবণতা হিসেবে প্রকাশ পায়। নানান ব্যক্তিকে নানান ভাবে প্রভাবিত করে এই ডিসঅর্ডার। জীবনের কোন পর্যায় প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ADHD-র শিকার হচ্ছে তার ওপরও এর প্রভাব নির্ভর করে। কিছু কিছু ব্যক্তির মধ্যে আবার অত্যধিক লক্ষ্য নির্দিষ্ট হওয়ার চমকপ্রদ ক্ষমতা থাকে। সিবলে জানিয়েছেন যে, অধিকাংশ ব্যক্তিদের মধ্যেই ADHD-র মতো লক্ষণ থাকে। তবে মনে করা হয় যে এই ডিসঅর্ডার মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশকে আক্রমণ করে।
সিবলে জানান যে ৯০-এর দশকের মধ্যভাগে মনে করা হত যে ৫০ শতাংশ বাচ্চাদের মধ্যে ADHD-র বৃদ্ধি দেখা যায়। অন্য দিকে আগের অধিকাংশ সমীক্ষার ক্ষেত্রেই বাচ্চারা প্রাপ্তবয়স্ক হলে শুধু একবার তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
ADHD-র মোকাবিলা
কোন কারণে ADHD-র লক্ষণ পুনরায় প্রকাশ পায়, তা এখনও সমীক্ষার বিষয়। সিবলের মতে, অবসাদ, ভুল পরিবেশ, অপর্যাপ্ত নিদ্রা, অস্বাস্থ্যকর খাবার-দাবার, নিয়মিত এক্সারসাইজ না-করা এর জন্য দায়ী হতে পারে। আবার কোনও ব্যক্তি যদি সময় থাকতে এর লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা না-করে, তা হলে এগুসি হাতের বাইরে চলে যাবে।
ওষুধ এবং থেরাপি ADHD-র দুটি প্রধান চিকিৎসা। তবে সিবলের মতে ব্যক্তি নিজেই নিজের ADHD মোকাবিলার পদ্ধতি চিহ্নিত করতে পারে।
গবেষকরা দেখেছেন যে, অধিকাংশ ব্যক্তি, যাঁরা ADHD-র ক্রাইটেরিয়ায় প্রযোজ্য নয়, তাঁদের মধ্যেও প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ADHD-র কিছু লক্ষণ থেকে যাচ্ছে। তবে তাঁরা নিজে থেকেই তা নিয়ন্ত্রণে রাখছেন।
সিবলে জনানা যে, এমন অনেক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায় যাঁরা ADHD আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও অত্যন্ত সৃজনশীল এবং সেই ক্ষেত্রে সাফল্যও লাভ করছেন। তবে এঁদের দিয়েই যদি সারাদিন কম্পিউটারে কোনও সূক্ষ্ম বা পুঙ্খানুপুঙ্খ কাজ করানো হয়, তা হলে তা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
মার্গারেট সিবলের মতে, ADHD-র কোনও লক্ষণ যদি জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করছে, তা হলেই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যেমন- নিজের শ্রেষ্ঠ কাজটি করতে না-পারা, অন্যের সঙ্গে সমস্যায় জড়ানো, স্বাস্থ্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক বজায় রাখতে না-পারা, প্রতিদিনের সাধারণ কাজ করতে অক্ষম, সন্তান বড় করা বা আর্থিক হিসেবনিকেশ, ঘরদোর গুছিয়ে রাখতে না-পারার মতো লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-19 15:46:13
Source link
Leave a Reply