হাইলাইটস
- ওজন নিয়ে আম আদমির বড়ই সমস্যা। বাড়লেও দোষ, না বাড়লেও দোষ।
- হয়তো কেউ খেতে ভালোবাসেন, স্বাভাবিক নিয়মেই তাঁর শরীরের চর্বি জমেছে।
- তাঁকে নিয়ে আশপাশের লোকের খুব চিন্তা হয়ে যায়।
এর উল্টোটাও দেখা যায়। খান কিংবা না খান কিছু মানুষ আছেন তাঁদের শরীরে চর্বি একেবারেই বাসা বাঁধে না। তাতেও সমস্যা, “ওরে শুকিয়ে তো কাঠ হয়ে যাচ্ছিস দিন দিন। মা বাবা খেতে দেন না নাকি, আর তো বিয়ে হবে না।” একে বলে যাঁর বিয়ে তাঁর হুঁশ নেই পাড়া-পড়শি আর অফিসের লোকজনের ঘুম নেই। আর ওদিকে ওজন বাবাজির অবস্থা শাঁখের করাতের মতো। বাড়লেও গালাগালি কমলেও গালাগালি। এদিকে ফিল্ম স্টারদের দেখুন। চরিত্রের প্রয়োজনে কখনও একগাদা খেয়ে মোটা হচ্ছেন, আবার কখনও শরীর চর্চা করে রোগা হয়ে যাচ্ছেন। কসমেটিক সার্জার কথাটা এবেলা না বলাই ভালো।
কিন্তু শিক্ষিত লোক মাত্রই জানে যে রোগা বা মোটা হওয়া পুরোটাই নির্ভর করে শরীরের মেটাবলিজম ক্ষমতার উপর। তবে হ্যাঁ, অনিয়মিত খাবার বা শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণে ওজন যেমন বাড়তে পারে তেমনই নানা রোগের কারণেও ওজনের কমা-বাড়া হতে থাকে। আর সেই রকমই একটি রোগ হল কিডনির অসুখ। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে যে ওজনের এই হঠাৎ কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া হতে পারে ক্রনিক কিডনি ডিজিস (CKD) কিংবা কার্ডিওভাসকিউলার বা হার্টের সংক্রান্ত সমস্যার উপসর্গ। বলা বাহুল্য এধরনের রোগ শরীরে বাসা বাধার অর্থ আখেরে মৃত্যু।
গবেষকদের দাবি
‘JASN’ পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রের দাবি, বডি মাস ইনডেক্সের নিয়মিত ওঠা নামা করার অর্থ শরীর বিশেষ করে হার্ট এবং কিডনির বিপদ ঘনিয়ে আসা। আর যে সব ব্যক্তি কার্ডিওভাসকিউলার ডিজিসের পাশাপাশি ক্রনিক কিডনি ডিজিস হয়ে থাকে তাঁদের আয়ু একেবারেই দীর্ঘ হয় না।
ক্রনিক কিডনি ডিজিসে আক্রান্ত দক্ষিণ কোরিয়ার ৮৪,৬৩৬ জন রোগীর উপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। এঁরা প্রত্যেকেই ডায়বিটিসে আক্রান্ত। প্রায় চার বছর ধরে চলতে থাকা এই সমীক্ষায় ৬ শতাংশ রোগী মারা যান। ৪ শতাংশ রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপন থেরাপি যেন ডায়ালিসিস করতে হয়। ২ শতাংশ রোগীর হার্ট অ্যাটক হয়। এবং ৩ শতাংশ রোগী আক্রান্ত হন স্ট্রোকে।
বডি মাস ইনডেক্সের তারতম্য কম হওয়া রোগীদের চেয়ে বডি মাস ইনডেক্সের তারতম্য বেশি হওয়া রোগীরে ক্ষেত্রে মৃত্যুর আশঙ্কা বেড়ে যায় প্রায় ৬৬ শতাংশ। প্রায় ২০ শতাংশ রোগীর ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হয়। ১৯ শতাংশ রোগীর হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে এবং ১৯ শতাংশ রোগীর স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
নিয়মিত ওজন মাপুন
সমীক্ষা বলছে যে সব রোগীর কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছিল তাঁদের প্রায় সকলেরই ওজন বাড়া কমার সমস্যা ছিল। এবং এসব রোগীর ক্ষেত্রেই মূলত হার্টের সমস্যা দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ কিডনিতে সামান্যতম সমস্যা দেখা দিলে যেন চিকিৎসা শুরু করে দেবেন, তেমনই নিয়মিত নিজের ওজন মাপবেন। সঠিক সময়ে ডাক্তারের কাছে গেলে বড় কোনও বিপদের হাত থেকে সহজেই রক্ষা মিলবে।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর চিকিৎসা চলাকালীনও তাঁদের নিয়মিত ওজন মাপা হয়। এক্ষেত্রে বেশি খাওয়া বা কম খাওয়া নয় অসুস্থতার কারণেই রোগীর ওজন বাড়ে কমে।
চেহারা নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করা কিছু লোকের স্বভাবI সকলের কথায় কান দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ব্যক্তি মোটা হন বা রোগা সুস্থ থাকলেই হবেI তবে হ্যাঁ, ওজনের অতিরিক্ত বৃদ্ধি বা অতিরিক্ত হ্রাসের ফলে যদি নিজে অসুস্থ বোধ করেন তাহলে কারও পরামর্শ না শুনে সোজা ডাক্তারের কাছে যানI তিনি যা বলবেন সেটাই শুনুনI পুষ্টিকর খাবার খান, নিয়মিত শরীরচর্চা করুন, মনকে ভালো রাখুনI শরীর-মন উভয়েই ভালো থাকলে আপনার ভালো থাকা কেউ আটকাতে পারবে না।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-18 09:26:57
Source link
Leave a Reply