হাইলাইটস
- রোম্যান্স শব্দটি শুনলে মন প্রাণ সবই যেন হালকা হয়ে যায়।
- শরীররে আলতো শিহরণ জাগে।
- বাঁ দিকে বুকের কাছে হালকা দুরু দুরু শুরু হয়ে যায়।
- অতি বেরসিকের ঠোঁটের কোণেও দেখা দেয় এক চিলতে লাজুক হাসি
ভালোবাসার দিন এখন প্রেম, বাণিজ্যের মিলমিশে একাকার। কিন্তু এরই ফাঁকতালে প্রতি বছরই যে আরেকটি আবেগপ্রবণ মাস হেলায় চলে যায় তার খবর আর কে রাখে? মাসের নাম রোম্যান্স অ্যাওয়্যারনেস মান্থ বা রোম্যান্স সচেতন মাস। আর এই অগাস্টই হল সেই আবেগপ্রবণ মাসটি।
রোম্যান্স শব্দটি শুনলে মন প্রাণ সবই যেন হালকা হয়ে যায়। শরীররে আলতো শিহরণ জাগে। বাঁ দিকে বুকের কাছে হালকা দুরু দুরু শুরু হয়ে যায়। অতি বেরসিকের ঠোঁটের কোণেও দেখা দেয় এক চিলতে লাজুক হাসি। গালের রং হয়ে ওঠে ইষৎ গোলাপি।
রোম্যান্স সচেতন মাসের গোড়ার কথা
ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র মতো রোম্যান্স অ্যাওয়ারনেস মান্থেরও একটি ইতিহাস আছে। প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে সচেতন শব্দটি শুনেই কিন্তু মনে করবেন না যে রোম্যান্সের থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। দম্পতি বা প্রেমিক-প্রেমিকাদের একসঙ্গে রোম্যান্স করার মাস হিসেবে এই অগাস্ট মাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক মাস।
মূলত পশ্চিমী দেশগুলিতে অগাস্ট মাস মূলত গরম কাল। প্রায় সারাবছর শীতের কম্পনে অতিষ্ট হওয়ার পর অগাস্টেই উষ্ণতা বাড়ার ফলে কিছুটা শান্তি পান তাঁরা। বাড়ে শরীরের উষ্ণতাও। মনে রোম্যান্স জাগে। পূর্বাঞ্চলেও শরৎকাল শুরু হতে শুরু করে। মন রোম্যান্টিক হতে শুরু করে। আমাদের দেশে চলে বর্ষা। আর বর্ষা মানেই রোম্যান্সে ভরপুর। আর এই সময়ই ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে আরও খানিকটা রোম্যান্টিক সম্পর্ক দৃঢ় করার চেষ্টা করে প্রেমিক মন। ভ্যালেন্টাইন্স ডে চলে যাওয়া প্রায় মাস ছয়েক বাদে এমন রোম্যান্টিক মাস সেলিব্রেট করার অনুভূতি যে অসাধারণ হবে তা বলাই বাহুল্য।
সম্পর্ক ৫ বছরের হোক বা থেকে ৫০ বছরের অগাস্ট মাসে সকলেই রোম্যান্টিক হয়ে ওঠেন। অগাস্ট মাসে (গ্রীষ্মকালে) স্বামী বা স্ত্রীকে নিয়ে একান্তে গ্রীষ্মাবকাশ কাটানোর রেওয়াজ রয়েছে ইংল্যান্ডের রাজবাড়িতেও।
লোকে যে যাই বলুক মনে মনে প্রায় সব বাঙালিই বেজায় রোম্যান্টিক। রোজকার কাজ কর্মের ফাঁকে সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে নিয়ে খানিক্ষণ কোয়ালিটি টাইম কাটাতে বাঙালি বরাবরই ভালোবাসেন। আর পাঁচটা জাতির যাই হোক না কেন বাঙালি বরাবরই রোম্যান্টিক। তবে হ্যাঁ, লোক দেখানো রোম্যান্টিসিজম বাঙালি পছন্দ করে না। রোম্যান্স হবে একান্তে।
পশ্চিমী বাবু-বিবিরা অবশ্য একান্ত, ব্যক্তিগত এই শব্দকে বিশেষ পছন্দ করেন না। সুযোগ পেলেই রোম্যান্টিক হয়ে ওঠেন তাঁরা। আর রোম্যান্স মানেই তাঁদের বেশিরভাগের কাছে শুধুই শরীর। সেই কারণেই হয়তো তাঁরা ক্যালেন্ডার ধরে রোম্যান্সের মাস কাটাতে ভালোবাসেন।
রোম্যান্স সচেতন মাস পালনের নিয়ম
রোম্যান্স সচেতন মাস পালন করতে হয় একান্তে। রোম্যান্টিক উপন্যাস পড়ুন। ইংরেজি উপন্যাসে অভ্যস্ত হলে প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস, গন উইথ দ্য উইন্ড, দ্য নোট বুক, আউটলেন্ডারের মতো বইগুলি পড়তে পারেন। আর রোম্যান্স খুঁজতে চাইলে বাংলা সাহিত্যে উদাহরণ ভূরি ভূরি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়দের ভাণ্ডার তো শেষ হওয়ার নয়। আধুনিক লেখকদের অনেক বইও পাবেন। দেখবেন নিজেদেরকেই মনে হবে সাহিত্যের নির্দিষ্ট চরিত্র।
– অনেকে ভাবেন রোম্যান্সের হয়তো কোনও নির্দিষ্ট সময় থাকে। কিন্তু সত্যি বলতে কী রোম্যান্সের কোনও সময় হয় না।
যে কোনও সময়ই মন রোম্যান্টিক হতে পারে। কখনও আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ দেখে আবার কখনও ঘন কালো মেঘ থেকে রিমঝিম বৃষ্টি দেখে মন আবেগে ভাসে। মন রোম্যান্সে ভরপুর থাকলে শরীরও ভালো থাকে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, মনে রোম্যান্স থাকলে উদ্বেগ কম হয়, মনের অশান্তি কাটে, ফলে শরীর ভালো থাকে, ডাক্তারের কাছে কম যেতে হয়, সর্দি কাশি কম হয়, স্ট্রেস কমে, রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়, কোনও কারণে অসুস্থ হলে তা তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
দুজনে একসঙ্গে রোম্যান্টিক ছবি দেখুন। রোম্যান্টিক ছবি দেখার সবচেয়ে ভালো অপশন উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেনের ছবি দেখা। পুরোনো ছবি অপছন্দ হলে নতুন কিংবা নিজের সমসাময়িক ছবি দেখুন। রয়েছে প্রচুর হলিউড ছবির অপশনও। আর রমকম দেখতে পারলে তো আরও ভালো।
সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীকে খুব সাধারণ উপহার দিন। তাঁর প্রিয় খাবার, বই, ফুল, চকোলেট, আইক্রিম কিংবা তাঁর পছন্দের শিল্পীর সুন্দর কোনও রোম্যান্টিক গান। এমনকি ছোটো খাটো একটি হানিমুন ট্যুরও করে ফেলতে পারেন। সঙ্গী বা সঙ্গিনী গাছ পছন্দ করলে সুন্দর সুন্দর গাছ বা বনসাই উপহার দিতে পারেন অনায়াসে।
এছাড়াও মেনে চলুন কয়েকটি সুন্দর নিয়ম। যেমন-
– একসঙ্গে ঘুমোতে যান
– দুজনের একইরকম পছন্দের কোনও কাজ থাকলে করুন
– হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটুন
– ঝগড়া করবেন না
– সঙ্গীর কোনও বদঅভ্যাস থাকলে গল্পের ছলে তা বলুন
– কাজের ফাঁকে ফাঁকে একে অপরকে জড়িয়ে ধরুন
– মাঝে মাঝে একে অপরকে আই লাভ ইউ বলুন। এমন সুন্দর ওয়েদারে যেতে পারেন লং ড্রাইভেও।
বয়সকে সংখ্যা ভেবে তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দিন। দম্পতিরা ২৫-এর কোটায় হন বা ৫০-এর রোম্যান্টিক সচেতন মাস পালন করুন স্বগর্বে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-16 11:58:41
Source link
Leave a Reply