হাইলাইটস
- হাসলে শরীর, মন, লিভার, হার্ট সবই নাকি ভালো লাগে।
- এতদিন তো তাই জানতাম সবাই।
- তাই তো শত দুঃখের মধ্যেও মানুষ কিছুক্ষণ অন্তত হাসার চেষ্টা করেন।
- শরীর মন ভালো রাখতে কৃত্রিম হাসির ক্লাবও তৈরি হয়েছে।
তিনজনেতে জটলা করে ফোকলা হাসির পাল্লা দিই।
হাসলে শরীর, মন, লিভার, হার্ট সবই নাকি ভালো লাগে। এতদিন তো তাই জানতাম সবাই। তাই তো শত দুঃখের মধ্যেও মানুষ কিছুক্ষণ অন্তত হাসার চেষ্টা করেন। শরীর মন ভালো রাখতে কৃত্রিম হাসির ক্লাবও তৈরি হয়েছে। কঠিন কথা হাসতে হাসতে বললে তা সহজ হয়ে যায়। পছন্দের মানুষের দিকে ইশারার হাসি হাসলে অর্ধেক কাজ এগিয়ে যায়। ছোটোদের খিলখিলিয়ে হাসির তো কোনও তুলনাই হয় না। আর মেয়েরা কেন কথায় কথায় হাসে তা স্বয়ং ব্রহ্মাও জানেন না। যেখানে একটা মিষ্টি হাসিতে যে কোনও কঠিন কাজ হয়ে যায়, সেই হাসি নাকি প্রাণঘাতিও হতে পারে। শুনতে অবাক লাগলেও কথাটা সত্যি। হাসতে হাসতে প্রাণ যাওয়ার ঘটনার সংখ্যা বিশ্বজুড়ে মন্দ নয়। তবে ঠিক হাসি মৃত্যুর কারণ নয় হাসতে হাসতে শরীরে যে প্রভাব পড়ে তার কারণে মৃত্যু হতে পারে।
বেশি হাসার ফল এবং তার প্রভাবে মৃত্যুর কারণ
মস্তিষ্ক ফেটে রক্তক্ষরণ
লাগামছাড়া হাসির ফলে মস্তিক ফেটে যেতে পারে। এর ডাক্তারি নাম Ruptured Brain Aneurysm। এক্ষেত্রে প্রধাণত মস্তিষ্কের ধমণী এবং শিরাগুলি ছিঁড়ে যায়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে ব্রেন ড্যামেজ হয়ে যায়। মস্তিষ্ক এবং রক্তের চাপে খুলি ফেটে যেতে পারে। যার ফল মৃত্যু।
লক্ষণ
– হঠাৎ এবং অত্যাধিক পরিমাণে মাথা ব্যথা
– বমি
– চোখে দ্বিগুণ সংখ্যক দৃষ্টি
– খিঁচুনি
– আলোর প্রতি স্পর্শকাতরতা
– ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাওয়া
হাঁপানি
অতিরিক্ত হাসার কারণে হাঁপানি হতে পারে। তবে শুধু হাসিই নয় অতিরিক্ত কান্না, চিন্তা, উত্তেজনার কারণেও হাঁপানি হতে পারে। অনেকেরই হালকা হাঁপানির সমস্যা থাকে। আর সেই অবস্থায় অতিরিক্ত হাসলে হাঁপানি বেড়ে যায়। ভয়ানক শ্বাসকষ্ট হয়। তড়িঘড়ি চিকিৎসা করা না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
জিলাস্টিক সিজার
ভয়ানক হাসির রোগের নাম জিলাস্টিক সিজার। সদ্য সিজার হযেছে এমন রোগীর মধ্যেই এই সমস্যা দেখা যায়। অকারণে অস্বাভাবিক শব্দ করে হাসতে থাকেন রোগী। সেই হাসি আনন্দের থেকে অনেক বেশি কষ্টের। টানা এক মিনিট পর্যন্ত রোগী হেসে যেতে পারেন। হাসির উপর তাঁর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। হাসি থামলে শরীরে ভয়ানক কষ্ট হয়। ব্রেন টিউমারের কারণে জিলাস্টিক সিজারে আক্রান্তের সম্ভাবনা থাকে।
অ্যাসফিজিয়েশন
হাসতে হাসতে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়ে বা অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসরোধ হয়েও মৃত্যু হতে পারে। অতিরিক্ত হাসলে শ্বাসকষ্ট যে হয় তা সকলেরই জানা। কিন্তু এই কষ্ট মাত্রা ছাড়ালেই বিপদ। তবে এই ধরনের মৃত্যু সাধারণত লাফিং গ্যাস বা নাইট্রাস অক্সাইডের ওভারডোজের কারণে হয়ে থাকে।
সিনকোপ বা হঠাৎ জ্ঞান হারানো
সিনকোপ হল সাময়িকভাবে জ্ঞান হারানো। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক না হলে এই সমস্যা দেখা যেতে পারে। সাধরাণত লো ব্লাড প্রেশারের কারণেই এই সমস্যা হয়। এর জেরে হার্টে রক্ত চলাচল, ডিহাইড্রেশন, শ্বাসকষ্ট এবং অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। এবং এই সিনকোপের কারণ হতে পারে অতিরিক্ত কাশি অথবা হাসি। মানে প্রয়োজনের থেকে বেশি জোরে জোরে দমবন্ধ হাসির ফলে আপনি ফট করে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। শুনতে হাস্যকর লাগলেও এর থেকে মারাত্মক হার্টের অসুখ হতে পারে। এবং এর ফলে হতে পারে মৃত্যুও। তবে সবসময় সিনকোপ মানেই যে মৃত্যু তা নয় তবে দীর্ঘকালীন হার্টের অসুখ শুরু হয়ে যেতে পারে এই রোগের কারণেই। তাই হাসি হইতে সাবধান।
তা বলে কি হাসব না?
– একেবারেই না। হুঁকোমুখো হ্যাংলা হয়ে তো আর জীবনে বেঁচে থাকা যায় না। মৃত্যু যে কোনও দিন দরজায় কড়া নাড়তে পারে। তা বলে হাসতে ভুলে গেলে হবে না। তবে হ্যাঁ, হার্ট, মস্তিষ্ক বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে দমবন্ধ হাসির অভ্যাস ছেড়ে দেওয়াই উচিত।
– হাসলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। মন খোলা হাসিতে স্ট্রেস কমে, উদ্বেগ এবং হতাশা চলে যায়, শরীরের পেশীকে আরাম দেয়, হাসলে শরীরের অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে। যা কিনা হার্ট এবং ফুসফুসের পক্ষে ভালো।
– হাসলে মনের নেতিবাচক ধারণা চলে যায়, শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ে, রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-08-10 14:16:14
Source link
Leave a Reply