হাইলাইটস
- বৃষ্টি পড়লে দুপুরে যেমন খিচুড়ি তেমনই বিকেলের চায়ের সঙ্গে তেলেভাজা।
- এ যেন বাঙালির অলিখিত নিয়ম। প্রায় একই নিয়ম চলে গোটা ভারতে। খিচুড়ি নয়।
- বৃষ্টির সঙ্গে এক কাপ চা এবং গরম গরম তেলাভাজা।
তবে বৃষ্টির সময় তেলেভাজা খাওয়াটা একটা বিলাসিতা মাত্র। আর সারাবছর বিকেলে মুড়ি তেলেভাজা একটা রুটিন। আলু, পেঁয়াজ, বেগুন, ধনেপাতা, ফুল কপি, মোচা, ফুলুড়ি, ডাল কী চান? রাস্তার ধারে গুমটি ঘরে বা খোলা আকাশের নিচে ডুবো তেলে এই ভাজা ভেজে লোকে বাড়ি গাড়ি করে ফেলল। বাঙালি খাদ্যরসিক। তাই তার গরম গরম তেলেভাজা লাগে। অবাঙালিরা কিন্তু ঠান্ডা তেলেভাজাও হাসি মুখে খেয়ে নেন। ঘন বেসনে পছন্দের সবজি ডুবিয়ে টগবগে তেলে ছেড়ে দিয়ে মিনিট খানেকের অপেক্ষা। তার সঙ্গে এক খাবলা মুড়ি। পেটও ভরে। অম্বলও হয় না। এই কম্বিনেশনও বাঙালি ছাড়া পাবেন না।
ভারতবর্ষ নানা ভাষা, নানা মত নানা পরিধান, নানা খাবারের দেশ। উত্তরের ছোলা ভতুরা, বাটার চিকেন, পশ্চিমের বড়া পাও, পাও ভাজি, ধোকলা, থেপলা, দক্ষিণের ইডলি দোসা, উত্থপম কিংবা পূর্বের লুচি, বেগুনভাজা মাছের কালিয়া দেশের খানা খাজানাকে উন্মুক্ত করে। আর এতকিছুর মধ্যে যেই খাবারটি বিবিধের মাঝে মিলন ঘটায় সেটি হল তেলেভাজা বা পকোড়া। কাঁচা আম থেকে লঙ্কা, শাক থেকে আলু সবকিছুর পকোড়া মিলবে এই দেশে। চায়ের সঙ্গে টা হিসেবে হোক কিংবা ডাল ভাতের সঙ্গে সহচরী। খিচুড়ির সঙ্গে হোক কিংবা পান্তাভাত সকলের সঙ্গেই মানিয়ে গুছিয়ে সংসার করতে পারে এই পকোড়া। নিরামিষ আমিষেরও বালাই নেই। মাছ, ডিম, মাংসের পকোড়াও জগৎ বিখ্যাত।
বেগুনি, পেঁয়াজি, কুমড়ি, আলুর চপ, ফুলকপির চপ বা বাঁধা কপির পকোড়া তো প্রায় রোজই খাওয়া হয়। এমনকি পুজোর ভোগেও নিরামিষ পকোড়া জায়গা করে নিয়েছে। ভোগের খিচুড়ি বা পোলাওয়ের সঙ্গে বেগুনি না হলে মা দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীরাও হয়তো মুখ বাঁকান।
আদি অনন্ত কাল থেকেই তেলেভাজা বা পকোড়ার কদর রয়েছে। তবে ভারতীয়রা নাকি পকোড়া রান্না করতে শিখেছে জাপানি টেমপুরা নামের এক তেলেভাজার অনুপ্রেরণায়। ইতিহাস ঘাঁটতে গেলে অনেক কিছু লিখতে হয়। তার চেয়ে কয়েকটি সহজ অথচ অন্য ধরণের পকোড়া রেসিপি দিয়ে দেওয়া ভালো।
খেসারি ডালের বড়া
উপকরণ: খেশারির ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচালঙ্কা, হলুদ, লঙ্কারগুঁড়ো, নুন, গোরমরিচের গুঁড়ো, ধনে পাতা কুচি, সাদা তেল।
প্রণালী:
– খেসারির ডাল ভালো করে ধুয়ে জলে ভিজিয়ে রাখুন।
– ডাল সহ সমস্ত উপকরণ (ধনে পাতা কুচি বাদে) মিক্সিতে বেটে নিন।
– এবার এতে ধনে পাতা মিশিয়ে ফেটিয়ে নিন।
– ডুবো তেলে ভেজে নিন।
– কাসুন্দি দিয়ে গরম গরম খান।
এঁচোড়ের ভাজি
উপকরণ: এঁচোড়, বেসন, লঙ্কাগুঁড়ো, চালের গুঁড়ো, কালোজিরে, জিরেগুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা কুচি, নুন, আদা-রসুন বাটা, আমচুর পাউডার, জল এবং তেল।
প্রণালী:
– এঁচোড় ভালো করে ছাড়িয়ে টুকরো করে নুন জলে ভাপিয়ে নিন।
– একটি পাত্রে বেসন, লঙ্কাগুঁড়ো, চালের গুঁড়ো, কালোজিরে, জিরেগুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা কুচি, নুন, আদা-রসুন বাটা এবং আমচুর পাউডার নিয়ে জল দিয়ে ঘন ব্যাটার তৈরি করুন।
– ভাপানো এঁচোড় ব্যাটারে ডুবিয়ে ডুবো তেলে ভেজি নিন।
– ধনে পাতার চাটনি দিয়ে খেতে দারুণ লাগবে।
কলমি শাকের বড়া
উপকরণ: কলমি শাক, আদা-রসুন বাটা, বেসন বা চালের গুঁড়ো, নুন, লঙ্কাগুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা কুচি, কালোজিরে, জল এবং তেল।
প্রণালী:
– কলমি শাক খুব ভালো করে ধুয়ে মিহি করে কুচিয়ে নিন।
– জল বাদে কুচোনো শাক সহ সমস্ত উপকরণ শুকনো করে মেখে নিন।
– মিশ্রণটি আঁট বাঁধার জন্য সামান্য জল ছিটিয়ে ফের মাখুন।
– বড়ার আকারে গোল করে গড়ে নিয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিন।
– কলমি শাকের বড়া একেবারে গরম গরম খেতে হয়। না হলে আসল স্বাদটা নষ্ট হয়ে যায়।
গলদা চিংড়ির মুড়ো ভাজা
উপকরণ: গলদা চিংড়ির মুড়ো, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচালঙ্কা, আদা-রসুন বাটা, ধনেপাতা কুচি, হলুদ, নুন, বেসন, গরম মশলা, লঙ্কাগুঁড়ো, সর্ষের তেল, সাদা তেল।
প্রণালী:
– গলদা চিংড়ির মুড়ো ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। ভালো করে জল ঝরিয়ে নেবেন।
– নুন হলুদ মাখিয়ে সেগুলি কিছুক্ষণ রেখে দিন।
– সর্ষের তেলে মুড়োগুলি সঁতে করে নিন।
– আলাদা করে ভাজা মুড়োগুলি সরিয়ে রাখুন।
– একটি পাত্রে পেঁয়াজ কুচি, কাঁচালঙ্কা, আদা-রসুন বাটা, ধনেপাতা কুচি, হলুদ, নুন, বেসন, গরম মশলা, লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে ভালো করে স্মুদ এবং ঘন ব্যাটার তৈরি করুন।
– চিংড়ির ভাজা মুড়ো তাতে ডুবিয়ে ডুবো তেলে ভাজুন।
– গরম গরম সার্ভ করুন কাসুন্দির সঙ্গে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-05 14:45:35
Source link
Leave a Reply