হাইলাইটস
- রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়লেই সবাই গেল গেল রব তোলেন।
- ব্লাড সুগার রিপোর্ট হাতে নেওয়ার পর
- যেন বেশি অসুস্থ বলে মনে করেন।
- মানসিক উদ্বেগ রোগকে আরও উস্কে দেয়
তাঁর যে এমন মাথার ব্যামো কেউ কখনও জানতো?
মাথার ব্যামো বলে কি যে সে ব্যামো? মোটেই না। বাবুর মাথা একেবারে বন বন করে ঘোরে। কখনও ক্লক ওয়াইজ, কখনও আবার অ্যান্টি ক্লক ওয়াইজ। হঠাৎ হঠাৎ মাথা ঘুরে ওঠে। শরীর এলিয়ে যায়। আর তাঁর মাথা ঘুরে উঠলেই ফচকে কর্মচারীরা হেব্বি খুশি হয়। এবার বড়বাবু সোজা বাড়ির পথে। যতক্ষণ না স্বাভাবিক হচ্ছে ততক্ষণ একটু আগবাড়িয়ে জল বাতাস করলেই হয়। তার পর গাড়ি ডেকে দিয়ে, “না না স্যার এই অবস্থায় আপনাকে আর থাকতে হবে না। আমরা ম্যানেজ করে নেব”, ভঙ্গীতে গাড়িতে তুলে দিয়ে তবে নিশ্চিন্ত হয় তারা। তারপর কম্পিউটারে ভিডিও গেম, অনলাইন চ্যাট, গল্প খুনশুটি তো চলবেই।
মাঝে স্যারের কেউ কেউ খোঁজ নেন। মিসেস বড় বাবু জানান স্যার এখন রেস্ট নিচ্ছেন। অফিসের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কথায়, ও কিছু নয়, সুগার আপ ডাউন করছে। আপ হলে ক্ষতি নেই, ডাউন হলে বিপদ হতে পারে। কাজের যা চাপ তাতে ব্লাড সুগারের কম বেশি তো স্বাভাবিক। তার উপর বিশাল বপুটিও তো কাজের চাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। ভুঁড়ির জন্য প্রায়ই শার্টের বোতাম ছিঁড়ে যায়। অনেকেই বড়বাবুকে এমার্জেন্সির জন্য সেফটিপিন সঙ্গে রাখতে দেখেছেন।
হেড অফিসের বড়বাবু তো উদাহরণ মাত্র। ব্যাঙ্কের কেরাণী, বাড়ির 24×7 বিনামূল্যের হাউজকিপার মানে বাড়ির গৃহিনী, কর্পোরেট চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, পুলিশ, সাংবাদিক, নেতা, মন্ত্রী কেউই এই চিনি গোলা রক্তের হাত থেকে নিস্তার পান না। ডায়বিটিস এখন যেন “কাহানি ঘর ঘর কি”।
রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়লেই সবাই গেল গেল রব তোলেন। ব্লাড সুগার রিপোর্ট হাতে নেওয়ার পর যেন বেশি অসুস্থ বলে মনে করেন। মানসিক উদ্বেগ রোগকে আরও উস্কে দেয়। অসুস্থতা বাড়তে থাকে। আবার সারাজীবন ডায়বিটিসে আক্রান্ত থেকেও দিব্যি সাধারণ জীবন যাপন করে গেছেন এমন লোকের উদাহরণও কিন্তু কম নয়। তাঁরা শুধু কিছু নিয়ম মেনে চলেন। আর তাঁদের মনের জোর থাকে সাংঘাতিক। যেন তেন প্রকারেণ সুস্থ থাকাটাই তাঁদের জীবনের লক্ষ্য। ভাবটা এমন একটাই তো জীবন, রোগের ভয়ে আনন্দ করা বন্ধ করে দেব? কভি নেহি।
আপনিও কি এভাবে রোগকে নাকানি চোবানি খাইযে জীবন উপভোগ করতে চান? তাহলে মেনে চলুন এই পাঁচটি নিয়ম।
* ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রতিদিন যোগাসন করুন। যদি তা সম্ভাবনা না হয় তাহলে স্রেফ হাঁটুন। ভোর কিংবা সন্ধে বেলায় নিয়ম করে হাঁটা প্র্যাকটিস করুন। জোরে হাঁটবেন। যাবে গা দিয়ে ঘাম ছাড়ে। প্রথম প্রথম হাঁপ ধরলেও পরে দেখবেন তা স্বাভাবিক হয়ে গেছেন। হাঁটা ছাড়া আর ভালো লাগছে না। নিয়মিত হাঁটলে শরীরের সুগারের মাত্রা সামঞ্জস্যতা পায়। চর্বি ঝরে। শরীরের যৌবন ফিরে আসে। স্ট্যামিনা বাড়ে।
*কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার পারলে একেবারে ছেড়ে দিন। ভাত, রুটি বন্ধ। খুব কষ্ট হলে ব্রাউন রাইস খান। প্রচুর পরিমাণে সবুজ সবজি এবং চিকেন খান। ব্লাড সুগারের রোগীদের সুস্বাদু খাবারের রেসিপি আমাদের কাছেই পেয়ে যাবেন।
*ফাইবারযুক্ত খাবার খান। যে সমস্ত ফল খোসা না ছাড়িয়ে খাওয়া সম্ভব সেগুলি খোসা সুদ্ধই খান। ফাইবারযুক্ত সবজি, শাক, দানাশস্য খান। একজন মহিলার দিনে অন্ততপক্ষে ২৫ গ্রাম এবং পুরুষের ৩৮ গ্রাম ফাইবার প্রয়োজন।
*জল খান প্রচুর পরিমাণ। ডায়বিটিস কিন্তু ধীরে ধীরে কিডনিতে আক্রমণ করে। কিডনিকে সুস্থ রাখার একমাত্র উপায় পরিমিত জল খাওয়া। নিয়মিত জল খেলে শরীর আর্দ্র থাকে। যদিও একেক জনের শরীরের চাহিদা এক এক রকম। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাটা একান্ত প্রয়োজন।
*গ্লুকোজ বিহীন খাবার খান। চিনি, গুড়, মধু তো খাবেনই না তেল ঘি বা চর্বিযুক্ত খাবারের পরিমাণও একেবারে কম করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-04 00:30:47
Source link
Leave a Reply