হাইলাইটস
- সময় বদলাচ্ছে।
- সবাই স্বার্থপর হতে শুরু করেছেন।
- পরিবার কিংবা সঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গে নিজের কথাও চিন্তা করছেন অনেকে।
- বিশেষ করে মহিলারা
সম্পর্কের মাঝে টাকা পয়সা এলেই সেই সম্পর্ক আর স্বাভাবিক থাকে না। রোজগেরে সঙ্গীর নাক উঁচু থাকে। আর বেকার সঙ্গী ভুগতে থাকেন হীনমন্যতায়। যদিও এক্ষেত্রে ছেলেদের পাল্লা ভারী। হাউজ হাসব্যান্ডের তকমা তাঁদের উপর খুব কমই লাগে। বেকার হলেও ঘরের কাজ রোজগেরে স্ত্রীকেই করতে হয়। স্বামীর আঁতে ঘা লাগানো চলে না। স্ত্রীর রোজগারে খাচ্ছেন বলে খোঁটা দেওয়াও চলে না। উল্টোটা অবশ্য স্বাভাবিক। সরকারি বা বেসরকারি ফর্মের পেশার জায়াগায় মহিলাদের জন্য গৃহবধূর স্থানটি রাখাই থাকে।
সে যাই হোক। সময় বদলাচ্ছে। সবাই স্বার্থপর হতে শুরু করেছেন। পরিবার কিংবা সঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গে নিজের কথাও চিন্তা করছেন অনেকে। বিশেষ করে মহিলারা। আর এই সব অর্থনৈতিক বিষয়গুলিই আজকাল ডিভোর্সের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দাবি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক ইকোনমিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী ২০০৪ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৫,৩০০ জন দম্পতির মধ্যে সমীক্ষা চালান বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের প্রশ্ন করা হয়েছিল যে ক্যারিয়ার, খেলধুলো, ড্রাইভিং এবং অর্থনৈতিক ব্যাপারে তাঁরা কতটা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত।
এই দম্পতিরা কমবেশি প্রত্যেকেই আলাদা শিক্ষা, ধর্ম, সংস্কৃতির মানুষ। প্রত্যেকেই নিজের নিজের ঝুঁকি নিয়ে কথা বলেন। এবং তাঁদের একটা বড় অংশ স্বীকার করেছেন যে সঞ্চয় বা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁরা প্রত্যেকতেই স্বার্থপর। সঙ্গীর নামে টাকা পয়সা সম্পত্তি রেখে দিলে ভবিষ্যতে ডিভোর্স হলে তা সবই হাতছাড়া হয়ে যাবে। শুনতে অবাক বলে মনে হলেও এই সমস্ত দম্পতিরা যে অনেকটাই বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্ন তা স্বীকার করে নিয়েছেন অনেকেই।
অর্থের জন্য দম্পতিদের মধ্যে ঝগড়া ঝাঁটি খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। সেই ঝগড়া ডিভোর্স পর্যন্ত গিয়ে গড়ানোর উদাহরণও ভূরি ভূরি। বিশেষ করে এমন উদাহরণ পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতেই বেশি দেখা যায়। তুলনায় ভারতীয় সমাজে এই প্রবণতা কম। কিন্তু ডিভোর্স হওয়ার আশঙ্কায় সঞ্চয় বা বিনিয়োগের এই নজির যে হারে বাড়ছে তা নিয়ে রীতিমতো চমকে উঠেছেন সমাজ বিজ্ঞানীরা।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় হলিউড তারকা কিম কার্দাশিয়ান এবং তাঁর স্বামী কেনি ওয়েস্ট একসঙ্গে থাকাকালীন একত্রে অঢেল সম্পত্তি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু যখনই তাঁদের ডিভোর্সের প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তখনই মিডিয়ায় তাঁদের সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে নানা আলোচনা এবং টিপ্পনি শুরু হয়। সেলিব্রিটিদের জীবনযাত্রা সঙ্গে সমাজ বিজ্ঞানীদের যে বিষয়টি অবাক করেছে তা হল বিয়ে করার পর সাধারণত সকলে সুখে সংসার করতে চান। কিন্তু যেভাবে সংসার করার পাশাপাশি ডিভোর্সের জন্যও দম্পতিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তা আগামী দিনে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। সত্যি বলতে কী বিবাহ নাম প্রতিষ্ঠানে যে আবেগ রয়েছে তা হয়তো একটা সময় ধূলিস্মাৎ হয়ে যাবে। যা সমাজের পক্ষে মঙ্গলময় নয় এতটুকু।
গবেষণা বলছে সঞ্চয়-বিনিয়গের বিষয়ে স্বার্থপরতার দিকটি প্রধানত অল্পবয়সী দম্পতিদের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সমাজবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, আজকের প্রজন্ম আগের প্রজন্মের কাছ থেকেই এসব শিখেছে। অতীতে নিজের অভিভাবকদের মধ্যে অর্থনীতি সংক্রান্ত ঝামেলা, সম্পত্তি নিয়ে অশান্তির সাক্ষী তাঁরা। সেকারণেই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁরা অনেক বেশি সচেতন। পুরোনোদের কাছ থেকেই নতুনরা শেখে। এক্ষেত্রে আগের প্রজন্মের ভুলের মাসুল আজকের প্রজন্মের স্বার্থপরতা।
যদিও অনেকেই আবার এধরনের ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হননি। তাই তাঁদের প্রতি সমাজবিজ্ঞানীদের পরামর্শ সঙ্গী যদি অর্থের ব্যাপারে স্বার্থপর হন কিংবা বিমা, বিনিয়োগ ইত্যাদি করতে না চান তাহলে সাবধান থাকা প্রয়োজন। এঁদের মধ্যে ডিভোর্সের প্রবণতা থাকে।
ভবিষ্যতে এধরনের প্রবণতা বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। তাই সাবধান থাকতে হবে সকলকেই।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-01 00:21:57
Source link
Leave a Reply