হাইলাইটস
- Covid-19 বা Covid ভ্যাক্সিন নিয়ে নিত্যদিন গবেষণা চলছে। ক্রমে নানা নতুন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে।
- আবার আগে যে সমস্ত সমস্যাকে স্বাভাবিক বলে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি সেগুলিও ক্রমে প্রকট হচ্ছে।
- ফলে গবেষণার বিষয়ও বৃদ্ধি হচ্ছে।
- মাস কয়েক আগে COVID-19 And Menstrual Cycles-নিয়ে খুব বেশি ভাবেননি বিশেষজ্ঞরা।
বেশিরভাগ মেয়েদের দাবি ছিল Covid আক্রান্ত হওয়ার পর কিংবা ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর Corona পিরিয়ডে বিশেষ কোনও সমস্যা হয়নি। যদিও সম্প্রতি সেই সমীক্ষাকে একরকম বাতিল করে দিয়েছেন তাঁরা। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে Menstrual বেশকিছু পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে অনেকের।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ
মহামারির সময় জুড়ে মহিলাদের Menstrual Cycles-এ নানা পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে।
– অল্প রক্তক্ষরণ
– অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
– অনিয়মিত রক্তক্ষরণ
– পিরিয়ড মিস করা
প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর বা ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর মহিলারা মানসিক চাপে ভুগছেন যার প্রভাব পড়ছে শরীরের ক্রিয়ায়। হরমোন লেভেলের সামঞ্জস্যতা প্রভাবিত হচ্ছে। যার ফলে পিরিয়ডের নিয়ম পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।
২০২০ সাল নাগাদ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন যে Covid-এর প্রভাব সরাসরিতে জরায়ুতে পড়ে না। প্রায় একই রকম সমীক্ষা হয় ২০২১ সালেও। পরীক্ষা হয়েছিল ১৭৭ জন মহিলার উপর। ১৭৭ জনের মধ্যে ৪৫ জন মানে প্রায় ২৫ শতাংশ মহিলার পিরিয়ড চলাকালীন রক্তক্ষরণ কম হয়েছে। ৯ জনের রক্তক্ষরণ হয়েছে অতিরিক্ত। অনেকের পিরিয়ডের তারিখ পিছিয়ে গেছে। সর্বোচ্চ ৩৭ দিন পরেও পিরিয়ড হয়েছে এমন মহিলার খোঁজও মিলেছে। ৩৪ শতাংশ মহিলা পিরিয়ডের কারণে দুর্বল হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এবং ১৯ শতাংশ মহিলার অল্প শরীর খারাপ হয়েছে। ১৭৭ জন মহিলার মধ্যে ৫০ জন মহিলার পিরিয়ড স্থায়ীত্বের তারতম্য হয়েছে। বেশিরভাগেরই অনেকদিন ধরেই রক্তক্ষরণ হয়েছে। অনেকের রক্তক্ষরণ হয়েছে আবার বেশ কম দিন ধরেই।
গবেষণা বলছে, কোভিড আক্রান্ত বা ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর মহিলাদের সেক্স হরমোন যেমন ফলিসিল স্টিমিউলেটিং হরমোন, ইস্ট্রোজিন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের কোনও তারতম্য হয়নি। তা আগের মতোই আছে। মোটামুটি এক মাসের মধ্যে ৮৪ শতাংশ মহিলার পিরিয়ড সাইকেল স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আর প্রায় ৯৯ শতাংশের স্বাভাবিক হয়েছে ২ মাসের মধ্যে।
গবেষণার সারসংক্ষেপ
– কোভিড 19-এর কারণে ঋতুচক্রে পরিবর্তন হয়েছে গুটি কয় মহিলার।
– বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণের পরিমাণ অনেকটা কমেছে এবং দিনের সংখ্যার বেড়েছে।
– সেক্স হরমোনের কোনও পরিবর্তন হয়নি।
– ১-২ মাসের মধ্যে বেশিরভাগ মহিলার ঋতুচক্রই স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
কিন্তু সত্যিই কি কোভিড ঋতুচক্রে প্রভাব ফেলেছে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
– কোভিডের কারণে সরাসরি ঋতুচক্রে প্রভাব পড়ে একথা এখনও পর্যন্ত গবেষকরা মানতে নারাজ। এমনকি ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরও ঋতুচক্রের পরিবর্তনে শিলমোহর দিচ্ছে না তাঁরা।
– ভ্যাক্সিনের কারণে যেমন জ্বর, সর্দি, গা হাত পা ব্যথা হচ্ছে তেমনই পিরিয়ডের দিন পরিবর্তন হতে পারে। এটি সাময়িক এবং ভয়ের কিছু নেই।
– ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যান্ড হেল্থকেয়ার প্রোডাক্টে রেগুলেটরি এজেন্সির কাছে ৯৫৮টি কেস এসেছে। সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী মহিলাদের মধ্যে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, মেনোপজের পরেও রক্তপাত হয়ে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাক্সিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। এতে চিন্তার কিছু নেই।
– কোভিড ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর শরীরের ক্লান্তি, ফোলাভাব, লালচে ত্বক, ব্যথা, চুলকানি, মাথাব্যথা, জ্বর, ঠান্ডা লাগা, সর্দি, ইত্যাদি স্বাভাবিক। শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধির লক্ষণ এগুলি। তেমনই পিরিয়ডের সামান্য হেরফেরও হতে পারে। আসলে Covid বা Covid Vaccine নয় পিরিয়ডের সমস্যা হয় বিভিন্ন কারণে।
অনিয়মিত Period-এর কারণ
– পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS)
– পেলভিক ইনফ্লেমেটারি ডিজিজ (PID)
– ওবেসিটি
– থাইরয়েড
– ডায়বিটিস
– খাবারের অনিয়মিতা
– অতিরিক্ত মানসিক সমস্যা এবং চাপ
– অতিরিক্ত শরীরচর্চা
– হরমোনের তারতম্য
– ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত পিরিয়ডের কারণ
– ওভারিতে সমস্যা
– ইউরিন ফাইব্রয়েড
– ইউরিন পলিপ
– এনড্রিমেট্রিওসিস
– গর্ভধারণে সমস্যা
– সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার
– ওজন বৃদ্ধি
– থাইরয়েড
– রক্তক্ষরণে সমস্যা
– ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
– রক্ত পাতলা হয়ে যাওয়া
পিরিয়ড মিস করা
– পিরিয়ড মিস হতে পারে যে কোনও কারণ।
– গর্ভধারণ
– মেনোপজ
– পলিস্টিক ওভারি সিনড্রম (PCOS)
– থাইরয়েড
– পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া
– অতিরিক্ত মানসিক সমস্যা এবং চাপ
– অতিরিক্ত শরীরচর্চা
– হরমোন উৎপাদন বন্ধ
– ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
– হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস
– ক্যান্সার ইত্যাদি রোগ।
উপরের কারণগুলি স্বাভাবিক। তবে বর্তমানে মহামারির কারণে যে অতিরিক্ত মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে বা হচ্ছে তার প্রভাব পড়াও স্বাভাবিক। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, উপার্জন, সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে মায়েরা চিন্তিত। তার প্রভাব পড়ছে তাঁদের শারীরিক ক্রিয়ায়। চিন্তার ফলে বাড়ছে নেশা গ্রহণের প্রভণতা। আর তার ফলেই পিরিয়ডের নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের একটা পরামর্শ মানসিক চাপ সহ্য করতে না পারলে চিকিৎসা করান। করোনার এই অবস্থার কিন্তু সাময়িক। কিছুদিন পরই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-07-30 09:07:44
Source link
Leave a Reply