আমাদের শরীরে রয়েছে অসংখ্য গ্রন্থি। যখন একগুচ্ছ কোষ পাশাপাশি অবস্থান করে এবং একত্রে কোনো তরল পদার্থ নিঃসরণ করে তখন তাকে বলে গ্রন্থি। লালাগ্রন্থি এমনই এক গ্রন্থি। লালাগ্রন্থিকে বলে স্যালাইভারি গ্ল্যান্ড আর লালাকে বলে স্যালাইভা। স্যালাইভারি গ্ল্যান্ড প্রতিনিয়ত লালার মাধ্যমে মুখের ভেতরে ভেজা রাখে।
দাঁত খাবারকে ছোট টুকরায় পরিণত করে।
আর লালা খাবারের টুকরার সঙ্গে মিশে হজমে
সাহায্য করে। লালাগ্রন্থি সংখ্যায় তিন জোড়া। এদের নাম প্যারোটিড, সাব ম্যান্ডিবুলার ও সাব লিঙ্গুয়াল। প্যারোটিড গ্রন্থি গালের ওপরের দিকে (চোয়ালের গোড়ার কাছে এবং কানের সামনে ও
নিচের দিকে অবস্থিত) বিস্তৃত। আর সাব ম্যান্ডিবুলার গ্রন্থি চোয়ালের দুই হাড়ের নিচে ও মুখের তলদেশে অবস্থিত। থুতনি থেকে কিছু দূরে এবং মুখের দুই পাশে এদের অবস্থান। অন্যদিকে সাব লিঙ্গুয়াল গ্রন্থির অবস্থান জিহ্বার নিচে। জন্ম থেকে মৃত্য পর্যন্ত এই তিন জোড়া লালাগ্রন্থি কাজ করে। ঘুমন্ত অবস্থায়ও চলতে থাকে এদের কাজ।
লালগ্রন্থির কাজ
— লালা নিঃসরণ করে খাবার হজমে সাহায্য করে।
— মুখের ভেতরের তাপমাত্রা বজায় রাখে।
— খাবারের স্বাদ নেওয়ার জন্য জিহ্বাকে সহায়তা করে।
— লালা মুখের ভেতর ভেজা রেখে কথা বলতে ভূমিকা রাখে।
— টায়ালিন জারক রস (এক ধরনের তরল পদার্থ, যা শর্করাজাতীয় খাদ্য পরিপাকে জরুরি) তৈরি করে।
— অপ্রয়োজনীয় তরল পদার্থ-যেমন থুতু, কফ ফেলতে লালাগ্রন্থি তৎপর থাকে।
— অনেক রোগ শনাক্ত করার জন্য লালা পরীক্ষা করা হয়।
লালাগ্রন্থির যত্নে যা করবেন
— নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরও শিশুদের লালা পড়া বন্ধ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
— দাঁতের সঙ্গে জিহ্বাও নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি।
— নিয়মিত ভিটামিন ‘সি’যুক্ত ফল খান। ভিটামিন ‘সি’ এই মৌসুমে দাঁতের মাড়ি, জিহ্বা, ঠোঁটসহ পুরো শরীরের জন্যই অপরিহার্য।
— ভালো টুথপেস্ট, মাউথ ওয়াশ ও লিপস্টিক ব্যবহার করুন।
— চর্বি বা মিষ্টি খাবার খাওয়ার পর কুলি করুন।
— মুখে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০০৯
Leave a Reply