হাইলাইটস
- শুধু তাই নয়, নানান কাজের মধ্যে হয়তো ভুলেই যাচ্ছি যে, গ্যাসের ওপর দুধ চাপানো ছিল বা বাথরুমে বালতি ভরার জন্য কল খুলে এসেছিলাম।
- ফলে দুধ পুড়ে যায় বা বাথরুম ভেসে যায়।
- এমনকি ৫ মিনিট আগে কেউ আপনাকে নিজের নাম বললেও তা মনে রাখতে পারেন না!
বর্তমানে আমাদের স্মৃতিশক্তির হাল আরও বেহাল বলা যেতে পারে। কারণ আমরা এখন এমন একটি যুগে বাস করছি, যেখানে যে কোনও তথ্যই সহজলভ্য, সংবাদপত্র, নানান শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ইত্যাদি নানান স্থানে যে কোনও তথ্য যে কোনও সময় পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সমস্ত তথ্যই যে আমাদের মনে থাকে তা কী জোর দিয়ে বলা যায়? কাজের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই আমরা ভুলে যাই। শুধু তাই নয়, নানান কাজের মধ্যে হয়তো ভুলেই যাচ্ছি যে, গ্যাসের ওপর দুধ চাপানো ছিল বা বাথরুমে বালতি ভরার জন্য কল খুলে এসেছিলাম। ফলে দুধ পুড়ে যায় বা বাথরুম ভেসে যায়। এমনকি ৫ মিনিট আগে কেউ আপনাকে নিজের নাম বললেও তা মনে রাখতে পারেন না! তাই এখন প্রয়োজন স্মৃতিশক্তি মজবুত করা। ব্রাহ্মিশাক বা ব্রেনোলিয়া না-খেয়েও এমন কিছু উপায় আছে যার সাহায্যে সহজেই স্মৃতি শক্তি বাড়ানো যায়—
ফোকাস
কিছু কিছু ব্যক্তি মাল্টি টাস্কিংয়ে ওস্তাদ। আবার কোনও কোনও চাকরির ক্ষেত্রে মাল্টি টাস্কিং অপরিহার্য। মাল্টি টাস্কিং ভালো হলেও, এক সময় একটি কাজ করলে যে কোনও কিছুই বেশি ভালো করে মনে রাখতে পারবেন। মাল্টি টাস্কিংয়ের পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট কাজে নিজেকে নিয়োজিত করলে সমস্ত কিছু মনে থাকবে।
নিজের স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
বর্তমানে আমরা সকলেই জানি কী ভাবে মানসিক অবসাদ ও চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর কুপ্রভাব বিস্তার করছে। শুধু তাই নয় স্ট্রেসের কারণে আমাদের স্পষ্ট ভাবে চিন্তা ভাবনার ক্ষমতাও লোপ পাচ্ছে। মনের মধ্যে এ ভাবে চিন্তার মেঘ জমতে শুরু করলে কোনও কিছুই সুষ্ঠু ভাবে মনে রাখা যাবে না। অবসাদের তুলনায় স্বস্তিতে থাকলে ব্যক্তি যে কোনও বিষয় ভালো ভাবে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য মনে রাখতে পারে। তাই বর্তমানের দৌড়ঝাপের জীবনে চাপে থাকা স্বাভাবিক হলেও, এই স্ট্রেস ঝেরে ফেলার কোনও সুযোগই হাতছাড়া করবেন না।
খাবার-দাবার
বেরি, বিশেষত ব্লুবেরি ও লাল আঙুরের মধ্যে অ্যান্থোসায়ানিন নামক একটি কেমিক্যাল থাকে। মস্তিষ্ক এই কেমিক্যাল শোষণ করে স্মৃতিশক্তি মজবুত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও ব্ল্যাকবেরি, প্লাম এবং লাল বাধাকপিও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে।
মস্তিষ্ককে চাপে ফেলবেন না
মস্তিষ্কের নিজস্ব একটি গ্রহণ ক্ষমতা রয়েছে। অনেকেই নিজের মগজে জ্ঞান ভাণ্ডার ঠুসে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরীক্ষার আগে সারাদিন-রাত জেগে পড়াশোনা করার, অতিরিক্ত তথ্য আদায় করার প্রবণতা অনেক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই দেখা দেয়। এই সমস্ত তথ্যই মস্তিষ্ক নিজের ক্ষমতা এবং সময় মতো গ্রহণ করতে পারবে। আপনার তাড়া দিয়ে পড়াশোনা বা জ্ঞান অর্জনের প্রবণতার কারণে কিছু মনে থাকবে না, বরং যেটুকু মনে রাখা যেত তা-ও ভুলে যাবেন। তাই একই রাতে সমস্ত পড়া পুরো করার পরিবর্তে স্বস্তিতে ও শান্তিতে পড়াশোনা করুন। এ ক্ষেত্রে কোনও তাড়াহুড়ো করবেন না।
চোখ বন্ধ করে মনে করার প্রবণতা ত্যাগ করুন
অনেককেই দেখেছেন চোখ বন্ধ করে ভুরু কুচকে কিছু মনে করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এমন করলে কী সত্যি বিশেষ লাভ হয়? ভুরু কোচকানো বিশেষ পার্থক্য সৃষ্টি না-করলেও, চোখ বন্ধ করে কিছু মনে করার চেষ্টায় আরও ভুলে যেতে পারেন। চোখ বন্ধ করার ফলে মস্তিষ্ক চোখ থেকে যে সেন্সরি স্টিমুলেশন সংগ্রহ করে তা বাধিত হয় এবং মস্তিষ্ক স্বস্তিতে লাভ করে এবং কোনও কিছু মনে করার জন্য অনেক শক্তি ব্যয় করে ফেলে।
নিজের ভাষায় অনুবাদ করুন
অনেক সময় তথ্য যে ভাবে আমাদের সামনে পেশ করা হয়, তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে না-পারার কারণে তা ভুলে যাই আমরা। তাই যে কোনও তথ্যই হোক না-কেন তাকে নিজের ভাষায় অনুবাদ করে নিন। এর ফলে তা সহজেই মনে রাখতে পারবেন।
অন্তর্জালে জড়াবেন না
সামগ্রিক ভাবে না-হলে, কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আমরা ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হই। এর ফলে আমাদের মস্তিষ্ক অলস হয়ে পড়তে পারে। তাই যে কোনও প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য এই অন্তর্জালে জড়ানোর আগে কিছুক্ষণ নিজে সেই উত্তর মনে করার চেষ্টা করুন। এর ফলে স্মৃতিশক্তি উন্নত হবে এবং ভুলে যাওয়ার প্রবণতাও কমবে।
ভিস্যুয়ালাইস করুন
ফোন বা ল্যাপটপে অনেকেই রিমাইন্ডার দিয়ে রাখেন। এর কারণ কোনও কিছু দেখলে তা ভালো ভাবে মনে রাখা যায়। যেমন অফিস ফেরৎ দুধ, ডিম, মাংস, সবজি নেওয়ার জন্য অনেকে রিমাইন্ডার দিয়ে থাকি। তাই তা ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। অনেকে আবার কোনও কাজ করার আগে একবার কল্পনা করে দেখে নেন, কী ভাবে, কোন উপায় সেই কাজটি করছেন। মনে মনে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে সেটিকে নিজের স্মৃতির বাক্সে বন্দি রাখতে চান। এর ফলে স্মৃতিশক্তি মজবুত থাকে।
একবারের জন্য সমস্ত কিছু ওলটপালট করে দিন
রুটিনে বাঁধা জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে স্মৃতিশক্তিও অলস হয়ে পড়বে। কারণ আপনার স্মৃতিশক্তিও অভ্যাসেরই দাস। রোজ রোজ একই রুটিন মেনে চলার ফলে, কোনও কিছু মনে রাখার প্রয়োজনীয়তা পড়ে না, যন্ত্রের মতো সমস্ত কাজ করে নেওয়া যায়। তাই বেশ কিছু সময়ের পর একবারের জন্য নিজের রুটিন পাল্টাতে পারেন। আবার ধরুন বাড়িতে রাখা জিনিসপত্রের স্থান পরিবর্তন করে ফেলুন। প্রথম প্রথম জিনিস খুঁজতে বেগ পেতে হবে। কিন্তু এর সুবিধা হল, এটি আপনার স্মৃতিশক্তিকে নতুন স্থান মনে রাখার জন্য খাটতে বাধ্য করবে। স্বাভাবিক ভাবেই স্মৃতিশক্তি বাড়বে এর ফলে।
ব্যায়াম করুন
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা সুনিশ্চিত করতে ব্যায়াম সাহায্য করবে। ব্যায়াম স্মৃতিশক্তিকে মজবুত করতে সাহায্য করবে। কারণ ব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। আবার ব্যায়াম করলে মধুমেহর সম্ভাবনাও কমানো যাবে। উল্লেখ্য মধুমেহ রোগ স্মৃতিশক্তিকে প্রভাবিত করে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-07-21 16:20:24
Source link
Leave a Reply