গত বছরের মতো এবছরও করোনা মহামারির মধ্যে কোরবানির ঈদ। ঈদ মানেই স্থানে স্থানে অনেক মানুষের সমাগম। তাই এসময় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বিশেষ সচেতনতা বা সতর্কতা প্রয়োজন।
সাধারণত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির কাশি, হাঁচি, কথা ও শ্বাসক্রিয়ার সময় শ্বাসতন্ত্রীয় নিঃসরণ সুস্থ্য লোকের মাঝে ছড়ালে কোভিড-১৯ হয়ে থাকে। কোভিড রোগীর শ্বাসতন্ত্রীয় নিঃসরণ বা তরলকণাতে প্রচুর করোনাভাইরাস থাকে। তাই এসব তরল কণা সুস্থ মানুষের নাক, মুখ বা চোখের সংস্পর্শে আসলে তিনিও আক্রান্ত হন। কাজেই ঈদের মতো বড় উৎসবে স্বাস্থ্যবিধিকে কোনোমতেই অবহেলা করা উচিত নয়। এখানে কোরবানির ঈদে কোভিড-১৯ এর বিস্তার প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ তুলে ধরা হলো।
* অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় দুটি মাস্ক পরলে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী ঢাল হিসেবে এন৯৫ ফেস মাস্কের ওপর সার্জিক্যাল মাস্ক পরতে পারেন। এন৯৫ মাস্ক না পেলে কেএন৯৫ মাস্ক সংগ্রহে রাখতে হবে। কোনোটাই না পেলে সার্জিক্যাল মাস্কের ওপর সার্জিক্যাল মাস্কই পরতে হবে।
* শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। দুজন মানুষের মধ্যে কমপক্ষে ১ মিটার (৩.৩ ফুট) দূরত্ব থাকা চাই। শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, যেমন- কোলাকুলি বা করমর্দন।
* কাশি বা হাঁচি আসতে চাইলে বাঁকানো কনুই বা টিস্যুতে মুখ ও নাক ঢেকে ফেলতে হবে। নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করা যাবে না।
* বাইরে থেকে ঘরে এসেই সাবান-পাানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। বাইরে অবস্থান করলে নিয়মিত অ্যালকোহল-বেসড হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারে কমপক্ষে ৮০% ইথানল বা ৭৫% আইসোপ্রপাইল অ্যালকোহল থাকা চাই। .
* কোরবানির পশুর গোশত কাটার মতো কাজগুলো আবদ্ধ জায়গার পরিবর্তে উন্মুক্ত স্থানে করাই ভালো। কারণ আবদ্ধ পরিবেশে কিছু মানুষ একসঙ্গে কাজ করলে কোভিড-১৯ ছড়ানোর ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রয়োজনে আবদ্ধ স্থানে কাজ করতে হলে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করতে হবে, যেমন- সবগুলো জানালা ও দরজা খুলে দিতে হবে।
* কোরবানির কাজে জড়িত প্রত্যেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছে কিনা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। প্রত্যেককে গ্লাভস ও মাস্ক পরাতে হবে। তাদেরকে কোভিড-১৯ এর লক্ষণ ও উপসর্গ সম্পর্কে অবগত করতে হবে। কারো মধ্যে লক্ষণ বা উপসর্গ থাকলে তাকে কোরবানির কাজে সম্পৃক্ত করা যাবে না, অন্যথায় অন্যরাও সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকবে।
* যারা অসুস্থতা অনুভব করছেন অথবা যাদেরকে আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে তাদের কোরবানির কাজে অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। সংক্রমণের উপসর্গ থাকলে নিজ দায়িত্বে আইসোলেশনে থাকতে হবে।
* ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক লোক এবং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসীয় রোগ, মস্তিষ্ক ও রক্তনালী সংক্রান্ত রোগ, স্মৃতিভ্রংশতা, দুর্বল ইমিউন সিস্টেম, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ, স্থূলতা ও ক্যানসারে আক্রান্ত হলে যেকোনো জনসমাগম থেকে দূরে থাকা উচিত। এসব মানুষেরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে গুরুতর পরিণতি ও মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। তারা কোরবানির কার্যক্রমে খুবই উৎসাহী হলে স্মার্টফোনের মাধ্যমে দেখানো যেতে পারে।
* করোনার টিকা নিলেও সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। মাস্কের ব্যবহার থেকে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া সবকিছু।কারণ টিকা নিলেই কোভিড-১৯ থেকে ১০০ শতাংশ নিরাপদ থাকা যায় একথা বলার সময় এখনো আসেনি। এছাড়া করোনাভাইরাস সময় পরিক্রমায় মারাত্মক ভ্যারিয়েন্টে রূপ নিচ্ছে বলে কোন টিকা কতটুকু কার্যকর বা কতদিন সুরক্ষা দেবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
এম ইউ
স্বাস্থ্য | DesheBideshe
2021-07-20 12:35:57
Source link
Leave a Reply