হাইলাইটস
- ভাই কিংবা বোন আসার খবর পেয়ে সাধারণত ছোটোরা খুশি হয়।
- কিন্তু পরিবার পরিচিতদের কিছু মানুষ খানিকটা মজার ছলেই ছোটো শিশুকে বলতে থাকে যে
- মা-বাবা এবার আর তাকে ভালোবাসবে না।
- ছোটো ভাই কিংবা বোনকেই বেশি ভালোবাসবেন
বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মারধর বকুনিও বেড়ে যায়। পাড়ার লোকও এই সব খেয়াল করত। মা বাবার কাছে অভিযোগও করেছেন। কোনও লাভ হয়নি। মা-বাবা এসে ঝুমকোকে মারধর করে শাসন করতেন বটে। কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হত। সে যাই হোক মোটামুটি উঁচু ক্লাসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ঝুমকোর স্বভাবে অনেক পরিবর্তন হয়। ধীরে ধীরে বোনকে ভালোবাসতে শুরু করে সে। একটা সময় পর টিকলি হয়ে যায় ধুমকোর নয়নের মণি।
ছোটোবেলায় ঝুমকো-টিকলি মতো সম্পর্কে অনেকেই থাক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেসব পালটে যায়। কিন্তু অনেকের আবার সেসব স্বভাবের কোনও পরিবর্তন হয় না। সেক্ষেত্রে অবস্থা এমন হয় যে দুই ভাই, দুই বোন বা দুই ভাই বোনের মধ্যে সম্পর্ক একেবারেই ভালো হয় না।
শিশু বিশেষজ্ঞদের গবেষণা বলছে দুই সহোদরের মধ্যে এ ধরনের সম্পর্ক চোখে পড়ার মতো। সম্প্রতি প্রায় ৭০০০ শিশুর মধ্যে এধরনের সম্পর্কের হদিশ পেয়েছেন তাঁরা। যদিও হদিশ পাননি এমন ঘটনার সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
ছোটো ভাই-বোনদের হয়রান করার কারণ
*মূলত পারিবারিক পরিবেশের কারণেই ছোটোবেলা থেকেই শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নির্ভর করে।
*অনেক সময়ই পরিবারের গুরুজনরা বয়সে ছোটোদের উপর কর্তৃত্ব ফলিয়ে থাকেন। ছোটোদের উপর চেঁচামিচি, মারধর, অবজ্ঞা কিংবা অবহেলা করেন।
*পরিবারের ছোটো শিশু ছোটো থেকে এসব দেখে সেটিকেই স্বাভাবিক বলে মনে করতে থাকে। যখন সে তার থেকে বয়সে ছোটো কাউকে পায় সে তখন নিজের কর্তৃত্ব ফলিয়ে বড়দের নকল করার চেষ্টা করে।
* ভাই কিংবা বোন আসার খবর পেয়ে সাধারণত ছোটোরা খুশি হয়। কিন্তু পরিবার পরিচিতদের কিছু মানুষ খানিকটা মজার ছলেই ছোটো শিশুকে বলতে থাকে যে মা-বাবা এবার আর তাকে ভালোবাসবে না। ছোটো ভাই কিংবা বোনকেই বেশি ভালোবাসবেন। এসব শুনে ছোটোদের মনে হিংসে ঢুকে যায়। তার উপর যখন সত্যিই ছোটো ভাই বা বোনকে মা-বাবা যত্ন নিতে শুরু করে শিশু ভাবে তাকে আর কেউ ভালোবাসেন না।
* বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছোটো অতিথিকে নিয়ে অভিভাবকরা এতই মশগুল হয়ে পড়েন যে বড় জনকে অবহেলা করতে শুরু করেন। বড়জন কোনও ভুল করলে তাকে বকা, মারধর শুরু করেন। ভাবটা এমন সে যেন সত্যিই বড় মানে বয়স্ক হয়ে গেছে। আসলে হয়তো সে মাত্র পাঁচ ছয় বছরের শিশু।
*কর্মক্ষেত্রে নিজেদের অবসাদের কারণে বাড়িতে অশান্তি করেন। পুরুষ সদস্য হয়তো রাগ দেখান মহিলাকে, আর মহিলা ছোটো শিশুকে। সেই শিশু আবার নিজের যত রাগ গিয়ে ফেলে সদ্যোজাতের উপর।
*সকলের সামনে বড় সন্তানকে নিয়ে ঠাট্টা করার প্রবণতাও দেখা যায় অভিভাবকদের মধ্যে। ছোটো থেকেই শুরু হয়ে যায় তুলনা। বড় জনের সামান্য গাফিলতিতেই ঠাট্টা, মারধর, বকুনি চলে।
*দুই সন্তানের মধ্যে ঝগড়া মারপিট হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাবা মা ছোটো জনের পক্ষ নেন। বকুনি জোটে বড় জনের ভাগ্যে। ফলে ছোটোর প্রতি বড়র ঈর্ষা এবং রাগ বাড়তে থাকে।
অভিভাবকের ভূমিকা
*সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোটোদের বুদ্ধি পরিণত হয়। আপনা থেকেই ভালো মন্দ শিখতে থাকে। ফলে ভাই-বোনের মধ্যে সম্পর্কও ভালো হতে থাকে। একটা সময় এমন হয় যে কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে পারছে না।
*কিন্তু ছোটোবেলার দিনগুলি খারাপ থাকার স্মৃতিও যে ভালো নয়। তার উপর অনেক সময়ই ছোটোবেলার ঈর্ষা বড় বয়স পর্যন্ত থেকে যায়। তাতে দুই সহোদরের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ থেকেই যায়।
*এই সমস্য সমস্যার সমাধান একমাত্র করতে পারেন অভিভাবকরা।
*ছোটো থেকেই তুলনা না করা, নিজেদের মধ্যে খারাপ সম্পর্ক ঠিক করা, পরিবারের গুরুজনদের অবিবেচক কাজে বাধা দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নেওয়া অভিভাবকদের দায়িত্ব। সবসময় মনে রাখতে হবে ছোটো শিশু বড়দের থেকেই শিক্ষা পায়। নিজেদের স্বভাব ঠিক না হলে সন্তান বড় হয়ে একই রকম হবে। তখন সন্তানদের মধ্যে খারাপ সম্পর্ক কিংবা মা-বাবার প্রতি তাঁদের অবহেলার মনোভাব নিয়ে অভিযোগ করাটা হাস্যকর।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-19 18:52:33
Source link
Leave a Reply