হাইলাইটস
- করোনার অজুহাত দেখিয়ে কারণে বেতন খানিকটা কমিয়ে দিয়েছে অফিস।
- নিজের তো বটেই স্বামীর অফিসের হালও এক। ফলে এক ধাক্কায় আয় অনেকটাই কমেছে।
- এদিকে ইএমআই, বাড়ি ভাড়া, প্রতি মাসের ওষুধপত্রের খরচ থামানোর কোনও উপায় নেই।
গত প্রায় কয়েক মাস ধরেই এরকম হচ্ছে। ফলে শরীর এবং মন দুটোই ধীরে ধীরে খারাপ হযে চলেছে সুভদ্রার। অথচ নিজের সমস্যার কথা কাউকে বলতে পারছে না। স্বামীর সামনে চিন্তা প্রকাশ করলে সেও ভেঙে পড়ে। ফলে মানসিক চাপে সুভদ্রা ব্যতিব্যস্ত।
কিন্তু এভাবে যে না ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে চলতে পারে না তা সুভদ্রা ভালোভাবেই জানে। তার মতো এরকম সমস্যা আজকাল ঘরে ঘরে। মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেরা নিজেদের সমস্যার কথা কাউকে বলতে পারেন না। এমনকি কারও কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পারেন না। ফলে সামান্য শান্তির আশায় ঘুম আসার জন্য মুঠো মুঠো ঘুমের ওষুধ খেতে শুরু করেন অনেকে। কিন্তু ঘুমের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া টোটকা মেনে চললে তো বেশি ভালো হয়, তাই না?
তাহলে সেই সমস্ত টোটকাই বরং যাচাই করে নেওয়া ভালো।
ঘুম আসার পরামর্শ
– টোটকার বলার আগে বরং কয়েকটা পরামর্শ দেওয়া ভালো। রাতে তেল ঝাল মশলাদার খাবার না খেয়ে হালকা পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। এতে ঘুমের ব্যাঘাত কম হয়।
– রাতে তাড়াতাড়ি খাবার খান। চেষ্টা করুন আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে ডিনার শেষ করে ফেলতে।
– খাবার আগে বা পরে মদ্যপান এবং ধূমপান করা একেবারেই উচিত নয়।
– রাতের খাবার খাওয়ার পর কড়া কফি খাবেন না।
– খাবার খাওয়ার পর অন্তত পক্ষে দুই ঘণ্টা জেগে থাকবেন। খেয়েই ঘুমিয়ে পড়বেন না।
– ডান দিকের বদলে বাঁ দিকে কাত হয়ে ঘুমোন। এতে ঘুমের মধ্যে খাবার ভালো মতো হজম হয়।
– দিনে আট থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমোনো একান্ত প্রয়োজন।
ঘুমের ঘরোয়া টোটকা
– ঘুমোনোর আগে এক গ্লাস দুধ খাওয়ার প্রচলন আমাদের দেশে অনেক পুরোনো টোটকা। উদ্দেশ্য ভালো ঘুম। যদিও অনেকেই ঘুমোনোর আগে দুধ খেলে গ্যাস হওয়ার অভিযোগ করে থাকেন। সেটি অবশ্য দুধের দোষ নয়, জীবনযাত্রার বেনিয়ম মানার কারণেই এই সমস্যা হয়ে থাকে। যদিও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা অনুযায়ী ঘুমের আগে উষ্ণ গরম দুধ পান করলে খুব ভালো ঘুম হয়। দুধে থাকে ট্রিপ্টোফান নামের এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড। এটি ঘুম আসতে সাহায্য করে। এমনকি উষ্ণ গরম দুধ শরীরকে শিথিল করে মনকে হালকা করে। দুধে থাকা কার্বোহাইড্রেটও ঘুম আনতে সাহায্য করে।
– যাঁদের দুধে অ্যালার্জি কিংবা অন্য কোনও সমস্যা আছে তাঁরা ঘুম আনতে আমন্ডের দুধও খেতে পারেন। এই দুধেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপ্টোফান। পাশাপশি এত আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়ামও। শরীরের মাংসপেশি শিথিল করতে এবং দেহ ও মনকে আরাম দিয়ে ভালো ঘুম আনতে এর জুড়ি মেলা ভার।
মধু দেওয়া গ্রিন টি
– উষ্ণ গরম গ্রিন টি-তে মধু মিশিয়ে রাতে পান করুন। গ্রিন টি না থাকলে গরম জলেও মধু মেশাতে পারেন। মধুতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপ্টোফান। শরীরকে শিথিল করে ঘুম আনতে সাহায্য করে এই মধু।
– ডাবের জল খেলেও ভালো ঘুম হয়। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম। দেহে ঘুম আনতে এই দুই খনিজ দারুণভাবে কাজ করে।
– রাতে ভালো না ঘুম হলে ক্যামোমাইল টি খাওয়ার অভ্যাস করুন। রোজ রাতে ঘুমের আগে এটি পান করুন। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যৌগ স্নায়ুকে প্রাকৃতিক উপায়ে শিথিল করে শরীর হালকা করে দেয়। ধীরে ধীরে চোখে নেমে আসে ঘুম। এই চা খেয়ে ঘুমোলে ঘুম থেকে উঠে দেখবেন পুরোপুরি তরতাজা হয়ে গেছেন আপনি।
– ভালো ঘুম হতে ব্যবহার করতে পারেন অশ্বগন্ধাও। এটি ভারতীয় আয়ুর্বেদ চিকিৎসার প্রাচীন ভেষজ। শরীর এবং মনকে শিথিল করে চোখে ঘুম নামাতে এটি সিদ্ধহস্ত। গরম জলে অশ্বগন্ধার মূল ভিজিয়ে সেই জলটি নিয়মিত পান করুন। স্বাভাবিক নিয়মেই ঘুম আসবে।
– রান্নার মশলা কিংবা ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা করতে কেশর যেমন ওস্তাদ তেমনই ওস্তাদ চোখে ঘুম আনতেও। এক চামচ মধু এবং সামান্য ঘি-তে একটি বা দুটি কেশরের পাঁপড়ি মিশিয়ে খেয়ে নিন। স্ট্রেস কমবে। ভালো ঘুম হবে। গর্ভবতীরা কিন্তু একেবারেই কেশর খাবেন না।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-13 17:57:05
Source link
Leave a Reply