হাইলাইটস
- সীমান্ত এলাকা শুনলেই মনে হয় যেন কাঁটাতারের বেড়ার এপারে আমাদের আর ওপারে প্রতিবেশী দেশের প্রহরারত সেনা, থেকে থেকে বন্দুকের গর্জন, সন্দেহজনক অনুপ্রবেশকারী, চোরাচালানকারীদের রমরমা।
- যেন ওই সব এলাকায় সদাই অশান্তি, মারদাঙ্গা লেগেই আছে। খবরের কাগজ, টিভি চ্যানেল কিংবা নিউজ পোর্টালগুলি দেখলে যে কারও এই ধারণা হতে পারে।
কিন্তু সীমান্ত এলাকায় থেকেও আমাদের দেশের এমন কিছু ছোটো শহর বা গ্রাম রয়েছে যেগুলি একেবারে শান্তশিষ্ট এবং মনোরম। আন্তর্জাতিক সীমানার কাঁটাতারের পাশে এলাকাগুলি অবস্থান করে। আর বছর বছর সেই সব জায়গায় বেড়াতে যান ভ্রমণপ্রেমীরা। তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও।
টুরটুক, লাদাখ
লাদাখের ছোট্টো শহর টুরটুকের গা ঘেঁষেই আছে পাকিস্তানের গিলগিট-বালুচিস্তান সীমান্ত। শহর না বলে একে গাঁ বলাই ভালো। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই টুরটুক ভারতের মানচিত্রে অন্তর্বুক্ত হয়। অথচ লাদাখের এই গ্রামে সদাই শান্তি বিরাজ করে। গ্রামবাসীরা জীবনযাপন করেন খুব সরলসিধে নিয়মে। লাদাখের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, তেমনই তার ছোট্টো গাঁ টুরটুকের সৌন্দর্যও অবর্ণনীয়। বিশেষ করে সূর্যাস্তের সময় গ্রামটিকে দেখতে লাগে অসাধারণ। শীতল পরিবেশে চা খেতে খেতে সূর্যাস্ত দেখার কোনও তুলনা হয় না।
চিতকুল, হিমাচল প্রদেশ
তিব্বতের সীমান্তবর্তী ছোট্টো গ্রাম চিতকুল। গ্রামের বাস হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলায়। প্রধানত কিন্নর আদিবাসীরা এই গ্রামে বসবাস করেন। এই গ্রামের মধ্য দিয়ে ব্যবসায়ীরা যাতায়াত করেন। গ্রামে আছে প্রচুর আপেল বাগান, পাহাড়ি তুষার মৃত্তিকা এবং বসপা নদী। খুব কম লোকেই এই চিতকুল গ্রামের খোঁজ রাখেন। গ্রামটি আগাগোড়া শান্তিপূর্ণ। গ্রামের বাসিন্দারা বেশ অতিথি পরায়ন। গ্রামের লোকগাঁথাগুলি বেশ জনপ্রিয়। সেই গ্রামে বেড়াতে গেলে গ্রামবাসীরা যেমন আপনাকে খোলা মনে আপ্যায়ন করবেন তেমনই গল্প শুনিয়ে আপনার মনকে ভালো করে তুলবেন।
ধনুশকোড়ি, তামিলনাড়ু
শ্রীলঙ্কা সীমান্তের শেষ শহর তামিলনাড়ুর ধনুশকোড়ি। এর চারধারে ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগর। ধনুশকোড়ি গ্রাম থেকে শ্রীলঙ্কার দূরত্ব মাত্র ২০ কিলোমিটার। ১৯৬৪ সাল নাগাদ ভয়াবহ সাইক্লোনের পর থেকে এই এলাকায় বিশেষ লোকজনের বাস নেই। যে কয়জন থাকেন তাঁরা সকলেই শান্তিপ্রিয়। শ্রীলঙ্কার তালাইমান্নার এবং পম্বন সেতুর সাহায্যে ভারত ভূখণ্ড যুক্ত করেছে তামিলনাড়ুর এই ধনুশকোড়ি গ্রামটি।
মোরে, মণিপুর
ভারতের অন্যতম গুরুপূর্ণ অর্থনৈতিক পথ হল মণিপুরের মোরে গ্রাম। এটি ভারত-মায়ানমার সীমান্ত অবস্থিত। শান্তশিষ্ট মোরে গ্রামে রয়েছে একাধিক কমার্শিয়াল হাব। অপূর্ব সুন্দর এই গ্রামে যে কোনও ভ্রমণপ্রেমীর একবার অন্তত ঘুরে আসা উচিত। গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগের পাশাপাশি রাস্তার ধারে ধারে গজিয়ে ওঠা দোকানগুলিতে কেনাকাটা করতে দারুণ লাগে। এখানকার অধিবাসীদের জীবনযাত্রা বেশ আকর্ষণীয়। কদিন সেখানে ছুটি কাটালে মনটা শান্ত হয়। মোরে গ্রাম থেকে মায়ানমারের তামু শহরের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।
আলিপুরদুয়ার, পশ্চিমবঙ্গ
আমাদের রাজ্যের উত্তর দিকের আলিপুরদুয়ার অবস্থান করে ভুটান সীমান্তে। সীমান্তবর্তী আলিপুরদুয়ার আর পাঁচটা সীমান্তবর্তী শহর বা গ্রামের মতো অশান্ত নয়। আলিপুরদুয়ারের একটা বড় অংশই হল ডুয়ার্স। ডুয়ার্সের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অসাধারণ। আলিপুরদুয়ার থেকে ভুটানে যেতে গেলে বিশেষ কোনও অনুমতি লাগে না। সঙ্গে ভারতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই হয়। উত্তরবঙ্গ ট্যুরে গেলে ডুয়ার্সের অংশ হিসেবে আলিপুরদুয়ার ভ্রমণ আবিশ্যিক।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-07 18:28:55
Source link
Leave a Reply