হাইলাইটস
- বর্তমানে যে প্রতিষেধকগুলি রয়েছে, তা নিরাপদ এবং এই প্রতিষেধক অন্যান্যদের মতোই গর্ভবতী মহিলাদেরও অসুস্থতার হাত থেকে রক্ষা করে।
- অন্য যে কোনও ওষুধের মতোই এই ভ্যাকসিনের মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
- এই প্রতিষেধক নেওয়ার পর তাঁদের হাল্কা জ্বর, ইনজেকশানের স্থানে ব্যথা হতে পারে বা ১ থেকে ৩ দিন পর্যন্ত সামান্য অসুস্থ বোধ করতে পারেন।
চিকিৎসকদের মতে এটি অত্যন্ত প্রগতিশীল পদক্ষেপ, কারণ এর ফলে ভারতের ৫ কোটি জীবন প্রভাবিত হবে। শুধু তাই নয়, এই অতিমারীর হাত থেকে প্রতিটি ভারতীয়র নিরাপত্তা দরকার। এ ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনেশনই শ্রেষ্ঠ ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান! এবার সমস্ত হবু মায়েরাও কোভিড-১৯ থেকে নিরাপদে থাকতে পারবেন বলে মত চিকিৎসকদের। গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিষেধক দেওয়ার উপযোগিতা ভ্যাকসিনেশনের যে কোনও তাত্ত্বিক ও সূদূর প্রসারি ঝুঁকিকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ফর্টিস হাসপাতাল (মুলুন্দ)-এর সিনিয়র কনসালটেন্ট অবস্টেট্রিশিয়ান ও গায়নোকোলজিস্ট সোনাল কুমতা এবং হীরানন্দানি হাসপাতাল (ভাসি)-এর কনসালটেন্ট গায়নোকোলজিস্ট মঞ্জরি মেহেতা গর্ভবতী মহিলাদের সুবিধার্থে কিছু তথ্য ভাগ করে নেন। ভ্যাকসিনেশন সম্পর্কে গর্ভবতী মহিলাদের যে বিষয়গুলি জানা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন, তা হল—
গর্ভবতী মহিলাদের ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা
প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে, গর্ভবতী মহিলাদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় না। অধিকাংশ গর্ভবতী মহিলারা অ্যাসিম্পটোম্যাটিক হতে পারেন বা খুব মৃদু সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। তবে খুব দ্রুততার সঙ্গে তাঁদের স্বাস্থ্য অবনতি হতে পারে এবং এর ফলে ভ্রুণও প্রভাবিত হতে পারে। তাই সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ও নিজেদের নিরাপদে রাখতে সমস্ত ধরণের সতর্কতা মূলক পদক্ষেপ করা উচিত। ভ্যাকসিনেশনও এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপেরই একটি অংশ। তাই গর্ভবতী মহিলাদের ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
গর্ভবতী মহিলাদের ওপর কোভিড ১৯-এর প্রভাব
হাসপাতালে ভরতি না-হয়েই অধিকাংশ (প্রায় ৯০ শতাংশ) করোনা সংক্রমিত গর্ভবতী মহিলারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কয়েকজনের স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। সিম্পটোম্যাটিক গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে গুরুতর সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঝুঁকি অধিক পরিলক্ষিত হয়েছে। গুরুতর অবস্থা দেখা দিলে অন্যান্য করোনা আক্রান্তদের মতো গর্ভবতী মহিলাদেরও হাসপাতালে ভরতি করতে হয়। উল্লেখ্য, যে সমস্ত গর্ভবতী মহিলাদের বয়স ৩৫ ঊর্ধ্ব, যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ ও অবেসিটি আছে, তাঁরা সর্বাধিক ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।
করোনা থেকে সেরে ওঠা গর্ভবতী মহিলা
করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা গর্ভবতী মহিলারাও এই ভ্যাকসিনেশনের জন্য যোগ্য প্রার্থী। তবে এঁদের ক্ষেত্রে সংক্রমিত হওয়ার ১২ সপ্তাহ বা সুস্থ হয়ে ওঠার ৮ সপ্তাহ পর প্রতিষেধক নেওয়া যায়।
ভ্যাকসিনেশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
বর্তমানে যে প্রতিষেধকগুলি রয়েছে, তা নিরাপদ এবং এই প্রতিষেধক অন্যান্যদের মতোই গর্ভবতী মহিলাদেরও অসুস্থতার হাত থেকে রক্ষা করে। অন্য যে কোনও ওষুধের মতোই এই ভ্যাকসিনের মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই প্রতিষেধক নেওয়ার পর তাঁদের হাল্কা জ্বর, ইনজেকশানের স্থানে ব্যথা হতে পারে বা ১ থেকে ৩ দিন পর্যন্ত সামান্য অসুস্থ বোধ করতে পারেন।
তবে গর্ভধারণ কালে ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত কী না, সে বিষয় বিভ্রান্ত থাকলে, যা যা মনে রাখবেন তা হল—
১. করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি,
২. গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি,
৩. প্রতিষেধক গ্রহণের উপকারিতা,
৪. গর্ভধারণ কালে প্রতিষেধক গ্রহণের নিরাপত্তা সম্পর্কে সীমিত অথচ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত প্রমাণ।
গর্ভবতী মহিলাদের ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া
কো-উইন বা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন সাইটে গিয়ে প্রতিটি গর্ভবতী মহিলা প্রথমে নিজের নাম নথিভুক্ত করান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক প্রদত্ত নির্দেশাবলীর ভিত্তিতে অন্যান্যরা যে ভাবে নিজের নাম নথিভুক্ত করছেন, সেই পদ্ধতিতেই গর্ভবতী মহিলাদেরও নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। নিজের গায়নোকোলজিস্টদের সঙ্গে আলোচনা করতে ভুলবেন না, বিশেষত যাঁরা অ্যান্টে-নাটাল (প্রি-ডেলিভারি) কেয়ারের জন্য নিজের নাম নিথভুক্ত করাননি, তাঁরা অবশ্যই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন। ভ্যাকসিনেটেড গর্ভবতী মহিলাদের দীর্ঘ মেয়াদি ফলো-আপ ও তথ্য সংগ্রহের জন্য রেজিস্ট্রি রাখা উচিত।
যে যে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
১. ডাবল মাস্ক পড়ুন।
২. নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর হাত ধুয়ে নিন।
৩. দূরত্ববিধি পালন করুন এবং ভিড়ের মধ্যে যাবেন না।
উল্লেখ্য, কোনও গর্ভবতী মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকলে সন্তান প্রসবের পর ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত। নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সমস্ত সংশয় দূর করুন। আবার পরিবার পরিকল্পনা করে থাকলে, এখনই ভ্যাকসিন নিয়ে নিতে পারেন। এখনও এমন কোনও প্রমাণ হাতে আসেনি যে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন-সহ অন্য যে কোনও ভ্যাকসিন মহিলা বা পুরুষের ফার্টিলিটিতে প্রভাব বিস্তার করেছে। মনে রাখবেন, ভ্যাকসিন থেকে কেউ সংক্রমিত হবেন না।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-07-07 16:11:00
Source link
Leave a Reply