গরমে বেড়াতে যাওয়া মানেই পাহাড়। কুয়াশা। ঠান্ডা বাতাস। ধোঁয়া ওঠা স্যুপ। ভাগ্য ভালো থাকলে বরফ বা তুষার। পাহাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্রের অপশন রয়েছে প্রচুর। উত্তর ভারত হোক বা উত্তরবঙ্গ কিংবা উত্তর পূর্ব ভারত।
সোনমার্গ
ভারতের সবচেয়ে সুন্দর স্থান যদি কাশ্মীর হয়, তাহলে সোনমার্গ হল কাশ্মীরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। সোনমার্গের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে চোখ কখনও ক্লান্ত হবে না। পাহাড়িয়া নদীর ঝিরঝির শব্দ, সবুজে সবুজে প্রকৃতি, অপূর্ব সুন্দর হ্রদ, ফুল, পাখি, পরিষ্কার আকাশ আপনাকে আদর করে কাছে টেনে নেবে। অত্যাধিক ঠান্ডায় সোনমার্গের হ্রদের জল বরফ হয়ে যায়। সেই সৌন্দর্য নিজের চোখে না দেখলে অনুভব করতে পারবেন না। এখানে আছে ট্রেকিং-এর ব্যবস্থাও। কাশ্মীরি হস্তশিল্পের নানা নিদর্শন কিনতে পারেন এখান থেকে। সোনমার্গের পাশাপশি কাশ্মীরের অন্যান্য জায়গাগুলি অবশ্যই ঘুরে নেবেন।
লাদাখ
সেনা-জঙ্গীর সংঘর্ষের খবরের শিরোনামে লাদাখের নাম উঠে আসে বারবার। কিন্তু তা বলে গোটা লাদাখ মানেই বোমা, গুলি, সংঘর্ষ নয়। লাদাখ এক অপূর্ব সুন্দর পাহাড়ি অঞ্চল। পর্বত ঘেরা লাদাখ থেকে সিন্ধুনদকে পরিষ্কার দেখা যায়। কার্গিল, লে-র মতো জায়গা গুলি এখান থেকে বেশ কাছে। লাদাখে সেনাবাহিনীর কড়াকড়ি যেমন আছে তেমনই রয়েছে প্রকৃতিকে উপভোগ করার স্বাধীনতা। লাদাখের জঙ্গলে রয়েছে ভারতীয় রেডস্টার্ট, হুপো, পরিযায়ী পাখি, বাদামি-মাথার সারস, স্নো-কক, তিব্বতি কাকের দেখা মিলবে এখানে। দেখা মিলতে পারে সোনালি ঈগল, ল্যামারমিয়ার শকুন, হিমালয় শকুনের মতো বির প্রজাতির পাখিদেরও। লাদাখ যাওয়ার প্ল্যান করুন এপ্রিল থেকে অগাস্টের মধ্যে। বাকি সময় এখানে যাওয়ার অনুমতি মেলে না।
দার্জিলিং
পাহাড়ের রানি দার্জিলিং। কম খরচে বাঙালির বিলাসবহুল পর্যটনকেন্দ্র। দার্জিলিং, টাইগার হিল, কার্শিয়ং, কালিম্পং সবকিছু একবারের লং ট্যুরেই সেরে নেওয়া যায়। চা বাগানে ঘোরাঘুরি, ম্যাল ভ্রমণ তো সাধারণ ব্যাপার। তার চেয়ে দার্জিলিঙের অচেনা গ্রামগুলি ঘুরে দেখতে পারেন। খাঁটি নেপালি খাবার চেখে দেখতে পারেন এই সব গ্রামগুলিতে। গরমের ছুটিতে দার্জিলিং ঘুরতে গিয়ে ভাগ্যক্রমে যদি বৃষ্টির দেখা পান তাহলে তো সোনায় সোহাগা।
রূপকুণ্ড
উত্তরাখণ্ডের রহস্যময় হ্রদ রূপকুণ্ড। প্রাচীনকাল থেকেই এই হ্রদে যাওয়ার পথে শ’য়ে শ’য়ে ছড়িয়ে রয়েছে মানুষের কঙ্কাল। কঙ্কালের রহস্য আজও অধরা। আর এই রহস্যের টানেই পর্যটকরা সেখানে ছুটে যান। পাঁচ হাজার মিটারেরও উঁচুতে অবস্থিত এই হ্রদটি কিন্তু আয়তনে খুব একটা বড় নয়। তবে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরিসীম। এখানকার ট্রেকিং-এর অভিজ্ঞতা একেবারে অন্যরকম।
ধরমশালা
হিমালয়ের বুক বসবাসকারী আরেকটি অপূর্ব শহর হল ধরমশালা ধরমশালা মূলত তীর্থ ক্ষেত্রে। এখান আছে প্রচুর মঠ-মন্দির। ধরমশালা থেকে মাত্র পাঁছ কিলোমিটার দূরে রয়েছে মেকলিয়ড গঞ্জ। তীর্থে আগ্রহ না থাকলে এই মেকলয়েড গঞ্জে ছুটি কাটান। মনে হবে বিদেশে বেড়াতে এসেছেন। ধরমশালা থেকে ডাল লেক, ভাগসু জলপ্রপাত, ইন্দ্রধর পাস বেশ কাছে। ধরমশালার Tsuglagkhang Complex-এ রয়েছে দলাই লামার প্রশাসনিক দফতর। তাই ভাগ্যে থাকলে ধরমশালায় দর্শন হতে পারে দলাই লামারও।
কুফরি
গরমে ঘুরে আসতে পারেন সিমলার কুফরি থেকে। বেজায় ঠান্ডা এই শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ঘোড়া কিংবা খচ্চরের পিঠে চড়ে মহসু শৃঙ্গে চড়তে পারেন। পাহাড় চূড়োয় উঠে স্থানীয় পোশাক পরে ছবি তুলুন, ঘুরে বেড়ান, বসে সময় কাটান এবং অবশ্যই গরম গরম ম্যাগি খান। এর মতো আনন্দ আর পাবেন না। ও হ্যাঁ, সেখানে গেলে চমরী গাই বা ইয়াকের দেখাও পাবেন। অনায়াসে ছবি তুলতে পারবেন সেগুলির সঙ্গে। ঘুরে আসুন নাগ মন্দির, ইন্দিরা ট্যুরিস্ট পার্ক।
তাওয়াং
অরুণাচলের প্রশাসনিক সদর শহর তাওয়াং-এ গেলে মনে হবে যেন তিব্বতে বেড়াতে এসেছেন। তাওয়াং মনাস্ট্রি, জশবন্ত গড়, জং জলপ্রপাত, সঙ্গেতসর হ্রদ, তাোয়াং ওয়ার মেমরিয়াল ঘুরে নিতে পারেন। এছাড়া শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও আপনাকে মুগ্ধ করবে। একান থেকে ইন্দো-চিন সীমানা দেখতে পাওয়া যায়।
সিকিম
দার্জিলিঙের উপরে আছে ছোট্টো রাজ্য সিকিম। রাজধানী গ্যাংটক থেকে উত্তর-পূর্ব-পশ্চিম-দক্ষিণ যে কোনও দিকে চলে যান। সিকিমের একেক দিকের সৌন্দর্য একেক রকম। গরমকালেও সেখানে বেজায় ঠান্ডা। নাথু লা পাস, ইন্দো-চায়না বর্ডার, রুমটেক মনাস্ট্রি, বাবা মন্দির ঘুরে আসুন। জুন মাসে সিকিম ঘোরার আনন্দই আলাদা। এখান থেকে লাচুং কিংবা ইয়ুমথাং ঘুরে আসুন। তিস্তার অপূর্ব সৌন্দর্যের সাক্ষী হন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-06-17 14:35:43
Source link
Leave a Reply