শরীর হাইড্রেট রাখে
শরীর হাইড্রেট রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জলের জোগান জরুরি। যে সমস্ত ফলে জলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, সেই ফলগুলি এ সময় খেতে পারেন। এমনই একটি ফল হল তরমুজ। এতে ৯২ শতাংশ জল থাকে। এ ধরণের ফল খিদে কম করে। জল ও ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় অধিক ক্যালরি গ্রহণ না-করেও পেট ভরে রাখা যায়।
ক্যালরি কম থাকে
তরমুজে অত্যন্ত কম পরিমাণে ক্যালরি থাকে। এক কাপ তরমুজে ১৫৪ গ্রাম ক্যালরি থাকে। নানান ধরণের বেরির মতো এটিও কম শর্করা যুক্ত ফল। তরমুজে ভিটামিন সি থাকে, যা ফ্রি র্যাডিকালসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কোষের রক্ষা করে। আবার, ভিটামিন এ ছাড়াও পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি১, বি৫ ও বি৬ থাকে। তরমুজে বিটা ক্যারোটিন ও লাইকোপিন ছাড়াও অধিক পরিমাণে ক্যারটিনয়েড থাকে। সিট্রুলিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিডও পাওয়া যায় তরমুজের মধ্যে।
ক্যানসার থেকে সুরক্ষা প্রদান করে
গবেষকদের মতে, তরমুজে উপস্থিত লাইকোপিন ও নানান ধরণের উদ্ভিজ যৌগে ক্যান্সার বিরোধী গুণ থাকে। নানান ধরণের ক্যান্সার থেকে শরীরকে রক্ষা করে লাইকোপিন। হজমতন্ত্রের ক্যান্সার এবং লাইকোপিনের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। কোষ বিভাজনে উপস্থিত প্রোটিন আইজিএফ-কে কমিয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কম করে এটি।
হৃদয়ের সুস্থতা
সমগ্র বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসে। রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের স্তর কম করে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের আশঙ্কা কম করা যেতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে নানান পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় হৃদয় সুস্থ রাখতে তরমুজ উপযোগী।
একাধিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে, তরমুজে উপস্থিত লাইকোপিন কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের আশঙ্কা কম করতে পারে। এমনকি কোলেস্টেরলের কারণে সংগঠিত অক্সিডেটিভ ড্যামেজও আটকাতে পারে। এতে উপস্থিত সিট্রুলিন অ্যাসিড, শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের স্তর বৃদ্ধি করে। নাইট্রিক অক্সাইড রক্তবাহিকাকে ছড়িয়ে যেতে সাহায্য করে, যার ফলে রক্তচাপের ঝুঁকি কমে।
ইনফ্লেমেশন ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস
ইনফ্লেমেশনের কারণে শরীরে একাধিক ক্রনিক রোগ বাড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে তরমুজে উপস্থিত একাধিক উপাদান ইনফ্লেমেশন ও অক্সিডেটিভ ক্ষতি কম করতে সাহায্য করে। এতে আবার লাইকোপিন ও ভিটামিন সি-এর মতো অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি অক্সিডেন্ট থাকে। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী লাইকোপিন যুক্ত টমেটোর সঙ্গে ভিটামিন সি দিলে শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের স্তর বৃদ্ধি পায় এবং ইনফ্লেমেশেনের স্তর কমে। তরমুজে এই দুই উপাদানই উপস্থিত। আমাদের চোখের নানান অংশে লাইকোপিন থাকে, যা অক্সিডেটিভ ড্যামেজ ও ইনফ্লেমেশন থেকে রক্ষা করে। আবার ম্যাক্যুলার ডিজেনারেশনের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। বয়স্ক ব্যক্তিদের এই রোগ হলে তাঁরা দৃষ্টিশক্তি পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেন। লাইকোপিন চোখের গভীর সমস্যা কম করতে সাহায্য করে।
পেশীর ব্যথা দুর করে
তরমুজে উপস্থিত সিট্রুলিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড মাংসপেশীর ব্যথা কম করতেও সাহায্য করতে পারে। সাপ্লিমেন্ট হিসেবে সিট্রুলিন ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি সমীক্ষায় ক্রীড়াবিদদের একটি দলকে শুধু তরমুজের জুস দেওয়া হয়, অপর দলকে তরমুজের জুসের সঙ্গে সিট্রুলিন দেওয়া হয়। এই সমীক্ষায় উঠে আসে যে, উভয় ক্ষেত্রেই শুধু যে মাংসপেশীর ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া গিয়েছে তা নয়, বরং এটি হার্ট রেট রিকভারির জন্যও ভালো।
ত্বক ও চুলের যত্নে
ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন এ ও সি অত্যন্ত জরুরি। ভিটামিন সি শরীরে কোলেজনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। ত্বক উজ্জ্বল করতে ও চুল মজবুত করতে এই কোলেজন উপযোগী। ভালো ত্বক ও মজবুত চুলের জন্য আবার ভিটামিন এ জরুরি। শরীরে ভিটামিন এ-র অভাবে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়।
হজম শক্তি বাড়াতে
তরমুজে ভরপুর পরিমাণে জলের পাশাপাশি ফাইবারও থাকে। এই দুটি উপাদান আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। জল ও ফাইবার যুক্ত ফল এবং সবজি খেলে ডায়জিস্টিভ ট্র্যাক ভালো থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-06-16 14:46:24
Source link
Leave a Reply