সন্তানের কেরিয়ার নিয়ে চিন্তিত থাকলে তাদের কাউন্সেলিং করাতে পারেন। কিন্তু কেন এই কাউন্সেলিং জরুরি তা জেনে নেওয়া যাক।
বাচ্চার বাস্তব ক্ষমতা জানার জন্য কেরিয়ার কাউন্সেলিং জরুরি। কিছু কিছু বাচ্চা নিজের কেরিয়ার নিয়ে লক্ষ্যে স্থির থাকে। তবে বড় হয়ে কোন পেশায় যেতে চায়, তা কেউ কেউ ঠিক করে উঠতে পারে না, এমন পরিস্থিতিতে পড়লে অবশ্যই কেরিয়ার কাউন্সিলরের দ্বারস্থ হন। কাউন্সেলররা বাচ্চাদের অ্যাকাডেমিক, পরীক্ষা ও কেরিয়ারের সঙ্গে জড়িত সমস্যার সমাধান করেন।
বাচ্চাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য জানার পর তাদের সঠিক কেরিয়ার নির্বাচনে সাহায্য করেন এই বিশেষজ্ঞরা।
কেরিয়ার কাউন্সেলিংয়ের উপকারিতা
সঠিক স্ট্রিম নির্বাচনের সুযোগ
কেরিয়ার কাউন্সেলিংয়ের ফলে বাচ্চারা সঠিক বিষয় ও ফিল্ড চয়নের সুযোগ পায়। কাউন্সেলিংয়ের পর বাচ্চাদের মনের বিভ্রান্তি ও জিগ্যাসা স্পষ্ট হয়ে যায়। কোন বিষয়ের প্রতি তাদের রুচি আছে, সে বিষয় তারা স্পষ্ট জানতে পারে। ফলে সেই দিকে কেরিয়ার তৈরির সিদ্ধান্ত নিলে ভালোভাবে পড়াশোনা করে। তবে কেরিয়ার কাউন্সেলরদের মতে, বাচ্চারা নিজের স্ট্রিম নির্বাচনের আগে পছন্দের বিষয় এবং যে বিষয় বেশি নম্বর পায়, সে ব্যাপারে ভালো ভাবে চিন্তা করার পর স্ট্রিম নির্বাচন করা উচিত।
মনের মধ্যে চলতে থাকা প্রশ্নের উত্তর পায়
কেরিয়ার কাউন্সেলিং করালে বাচ্চাদের মনের সমস্ত জিজ্ঞাসা শান্ত হয়। পাশাপাশি তাদের ভিশন পরিষ্কার হয় এবং নিজের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যায়। অনেক সময় যে বিষয় ভালো নম্বর পায়, তাকে কেন্দ্র করেই নিজের কেরিয়ার গড়ে তোলার চেষ্টা করে বাচ্চারা। কিন্তু পরবর্তীকালে হয়তো ওই বিষয় পেশা নির্বাচনের কোনও সুযোগ থাকে না বা অনেক সময় বাচ্চারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। এ কারণে অনুতাপ হতে পারে তাদের। তাই সঠিক সময় কেরিয়ার কাউন্সেলিং করানো উচিত।
মার্কেট ট্রেন্ড সম্পর্কে জানা যায়
কেরিয়ার কাউন্সেলর বিষয়ভিত্তিক নতুন নতুন কেরিয়ার অপশান সামনে তুলে ধরতে পারেন। এগুলি বাচ্চাদের জন্য লাভজনক প্রমাণিত হয়।
চাকরির নতুন বিকল্প সম্পর্কে জানাতে পারেন একজন কাউন্সেলর
কেরিয়ার কাউন্সেলর ভবিষ্যতে চাকরির নতুন বিকল্প সম্পর্কেও জানিয়ে থাকেন। সকলকেই যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, শিক্ষক হতে হবে তার কোনও মানে নেই। বরং ফাইন্যান্স, টেকনোলজি, আর্কিটেক্চার, হোটেল ম্যানেজমেন্টে, মিডিয়াতে সন্তান নিজের কেরিয়ার নির্বাচন করতে পারে।
সন্তানের কেরিয়ার কাউন্সেলিংয়ের সময় অভিভাবকদের যে বিষয়গুলি লক্ষ্য রাখতে হবে—
১. বাচ্চাদের কেরিয়ার কাউন্সেলিংয়ের একদিন আগে অভিভাবকদের কিছু জেনে রাখা উচিত—
* বাচ্চাদের পছন্দের বিষয় কোনটি?
* কোন বিষয় বেশি ও কোন বিষয় কম নম্বর পায়?
* কোন খেলাধুলোয় তাদের রুচি আছে?
* কোন কোন ক্ষেত্রে বাচ্চা পটু?
* পৃথক পৃথক বিষয় সম্পর্কে বাচ্চাদের চিন্তাভাবনা কী?
২. কাউন্সেলরের সামনে বাচ্চাদের ভয় দেখাবেন না বা ধমকাবেন না। এমন করলে কাউন্সেলরের সামনে নিজের প্রশ্ন ও চিন্তাধারা প্রকাশ করতে পারবে না তারা। আবার ঠিক-ঠাক উত্তর না-পেলে কাউন্সেলিং করতেও সমস্যা হবে।
৩. বাচ্চারা কাউন্সেলরের কাছ থেকে যা জানতে চায়, তা নির্ভয়ে জিগ্যেস করতে দিন। এমন করলেই তাঁদের মনের বিভ্রান্তি দূর হবে।
৪. বাচ্চাদের অহেতুক প্রশ্ন কাউন্সেলরদের বিরক্ত করে তুলতে পারে— এমন চিন্তাধারা পোষণ করার কোনও কারণ নেই।
৫. বাচ্চাদের মনে লুকিয়ে থাকা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার জন্যই তাঁরা কাউন্সেলরের দ্বারস্থ হচ্ছেন, এ কথা অভিভাবকদের ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে।
৬. বন্ধু, আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাচ্চাদের তুলনা করবেন না। বিশেষত পড়াশোনার বিষয় তো এক্কেবারেই না। এক এক জন বাচ্চার পৃথক পৃথক রুচি থাকে, এ কথা অভিভাবকদের বুঝতে হবে।
৭. কেরিয়ার কাউন্সেলিং করানোর আগে বাচ্চাদের ক্লাস ও টিউশন টিচারের সঙ্গে তাদের বিষয় কথা বলুন। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাচ্চার কেরিয়ার কাউন্সিলিং সহজ হবে।
অভিভাবকরা কী ভাবে নিজের সন্তানের কেরিয়ার কাউন্সেলিং করাবেন, জেনে নিন—
১. কোনও প্রোফেশনাল কাউন্সেলরের সাহায্য নিন।
২. সময়ের অভাবে প্রোফেশনাল কাউন্সেলরের কাছে যেতে না-পারলে অনলাইনেও কেরিয়ার কাউন্সেলিং করাতে পারেন।
৩. কিছু কিছু প্রোফেশনাল কেরিয়ার কাউন্সেলর সেমিনার আয়োজিত করেন। সেখানে অভিভাবকরা সন্তানের কেরিয়ারের সঙ্গে জড়িত প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-06-11 13:43:58
Source link
Leave a Reply