সরকারি চাকরি অনেকের কাছেই প্রথম পছন্দ। চাকরি বাজারের প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরি বেশএগিয়ে আছে এখনো। তাই যেকোনো সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে যোগ্যতাসম্পন্ন আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উত্সাহ দেখা যায়। আর নিয়োগ যদি হয় বড় সংখ্যায়, তাহলে তো কথাই নেই। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে প্রাথমিকভাবে অস্থায়ী ভিত্তিতে ‘হিসাব সহকারী’ পদে ৪৯১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারবেন ওই পদে।
কর্মক্ষেত্র ও কাজ
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মো. মুস্তাঈন বিল্লাহ জানান, ‘হিসাব সহকারী পদটি দ্বিতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় নতুন সৃষ্টি। ৪৯১টি পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্তদের কাজ করতে হবে দেশের উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে।’ তিনি আরও জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসের হিসাবসংক্রান্ত যাবতীয় দাপ্তরিক কাজের দায়িত্ব পালন করতে হবে হিসাব সহকারীকে। প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে একজন করে হিসাব সহকারী নিয়োগ দেওয়া হবে। অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে পূর্ণ মর্যাদা পাওয়া উপজেলাগুলোতে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হবে।
বেতন-ভাতা ও পদোন্নতি
সরকারি চাকরিবিধি মোতাবেক হিসাব সহকারী পদটি তৃতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদার। সে হিসেবে তাঁরা ২০০৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলে মূল বেতন পাবেন তিন হাজার টাকা। এর সঙ্গে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যেমন, বাড়িভাড়া, চিকিত্সা ভাতা, যাতায়াত ভাতা ইত্যাদিসহ সর্বসাকল্যে পাবেন প্রায় ছয় হাজার টাকা। সহকারী পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) বলেন, প্রথমে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে পদোন্নতির সুযোগ নেই। তবে তিন বছর পর চাকরি স্থায়ী হলে তাঁরা পদোন্নতির সুযোগ পাবেন। নিয়োগলাভের তিন বছর পর থেকে চাকরি স্থায়ী করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাই চাকরির প্রথম তিন বছর সংরক্ষণের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।
লিখিত পরীক্ষা
আবেদন-প্রক্রিয়া লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়। লিখিত পরীক্ষা ওএমআর প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগীয় নিয়োগ কমিটির এক সদস্য বলেন, লিখিত পরীক্ষায় সাধারণ বাংলা, সাধারণ ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ জ্ঞান থেকে মূলত প্রশ্ন করা হয়। লিখিত পরীক্ষার পূর্ণমান ৮০/১০০ হতে পারে। তবে লিখিত পরীক্ষার পুরো বিষয়টি বিভাগীয় নিয়োগ কমিটির সিদ্ধান্ত, যা এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মৌখিক পরীক্ষা
লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা নির্বাচিত হবেন, কেবল তাঁরাই মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান, ব্যক্তিগত পরিচয়, বাংলাদেশের নানা বিষয়াদি, বুদ্ধিমত্তা যাচাইসহ নানা দিক থেকে প্রশ্ন হতে পারে বলে জানান মুস্তাঈন বিল্লাহ। মৌখিক পরীক্ষায় যাঁরা নির্বাচিত হবেন তাঁরা চূড়ান্তভাবে নিয়োগপত্র পাবেন।
আবেদনের যোগ্যতা
উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন এবং যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর তাঁরা আবেদন করতে পারবেন। তবে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে এবং উপজাতীয় প্রার্থীদের জন্য বয়সসীমা ৩২ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য।
আবেদন-প্রক্রিয়া
যাঁরা আবেদন করতে চান, তাঁদের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রে প্রার্থীর নিজের নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্মতারিখ, পহেলা ডিসেম্বর ০৯ তারিখে বয়স, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরীক্ষার নাম, বছর, ফল ও বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে।
এ ছাড়া আবেদনপত্রের সঙ্গে ছবি, নাগরিকত্ব ও চারিত্রিক সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
আগ্রহী ব্যক্তিরা আবেদন করে ফেলুন শিগগিরই। তবে শুধু আবেদন করে বসে থাকলে হবে না, এর সঙ্গে দরকার প্রস্তুতিও।
কারণ হিসাব সহকারী পদে চাকরি পেতে আপনাকে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রতিযোগিতায় টিকতে হবে।
সাইদ আরমান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ১৯, ২০০৯
Leave a Reply