হাইলাইটস
- জেট জীবনের ঘরে ঘরে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে ডায়াবিটিস (Diabetes)।
- বয়সের কোনও বাছবিচার নেই। আট থেকে আশি প্রায় সকলেই ভুগছেন এই অসুখে (Diabetes)।
- চিকিত্সকের পরামর্শে তা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এর হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে আমূল পরিবর্তন ঘটাতে হয় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় (Diet)।
ডায়াবিটিস (Diabetes) হলেই হল৷ মিষ্টি তো বটেই, ভাত–আলুও চলে যায় খরচের খাতায়৷ ফ্যাটে লাগে ব্রেক৷ হাজির হয় সুপার ফুড (superfoods)৷ করোলা–লাউয়ের রস, মেথি ভেজানো জল, কাঁচা হলুদ সমেত রাজ্যের শাকসবজি৷ ফ্রিজে শরবত, কোল্ডড্রিঙ্কের জায়গা নেয় আমলা–অ্যালোভেরা জ্যুস৷ নন–ভেজের হালও তথৈবচ৷ রেড মিটের প্রশ্ন নেই৷ একটা ডিম খেতে হলেও হাজার প্রশ্ন৷ তৈলাক্ত মাছে হাই ক্যালোরি, তাই সে-ও প্রায় ব্রাত্য৷
তো মানুষ খাবে কী? কী হবে ডায়াবেটিক ডায়েট (Diet for Diabetes)? দেখে নিন সেগুলি…
করলা
করলা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কারণ এটি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে পারে। ইনসুলিনের নিঃসরণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে করলা। দুই বা তিনটি করলার বীজগুলি ফেলে দিয়ে রস বের করে নিন। করলার রসের সঙ্গে জল মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খান।
দারচিনি
যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য দারচিনি খুবই উপকারী। এটি অগ্নাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে উদ্দীপ্ত করে এবং রক্তের সুগার লেভেল কমায়। দারচিনির গুঁড়ো চা, জল বা অন্য পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা জেলে ফাইটোস্ট্যারলস নামক শক্তিশালী উপাদান থাকে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ফাইটোস্ট্যারলসের অ্যান্টিহাইপার গ্লাইসেমিক প্রভাব আছে যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য উপকারী। হলুদ, তেজপাতা ও অ্যালোভেরা জেল জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুবার পান করুন।
আম পাতা
৩-৪ টি আম পাতা জলে ফুটিয়ে নিন। প্রতিদিন সকালে এই মিশ্রণটি খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে। আম পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে রাখতে পারেন। দিনে দুবার আধা চামচ করে এই আম পাতার গুঁড়ো খেতে পারেন।
মেথি
ডায়াবেটিসের সবচেয়ে ভালো একটি প্রতিকার হচ্ছে মেথি। ২ টেবিল চামচ মেথি বীজ ১ গ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। সকালে মেথি বীজ-সহ জল পান করুন। মেথি বীজের জৈব উপাদান ইনসুলিনকে উদ্দীপিত করে। এছাড়াও এতে উচ্চ মাত্রার ফাইবার থাকে বলে স্টার্চকে গ্লুকোজে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে যা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের সাহায্য করে।
শসা
রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়লে শসা খেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। প্রতিদিনের ডায়েটে শসা রাখলে সুগার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। এটি ছাড়াও হজমের ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে শসা। ইউএসডিএ অনুসারে শসাতে ১০ ক্যালরি থাকে। এটি কেবল সালাদে নয়, স্যান্ডউইচগুলিতেও খাওয়া যেতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিস রোগীদের কীভাবে তাদের ডায়েটে শসা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
আমলকি
রাস্তায়, বাসে, ট্রেনে এখন আমলকির রমরমা বাজার। খাটো না করেই বলছি, আমলকির ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক। রোজ সকালে উঠে যদি একটা গোটা আমলকি খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের পক্ষে খুবই ভাল। শুধুই ফলই না, পাতাও ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে, পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে আমলকিতে তিন গুণ ও দশ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। এই আমলকি বিভিন্ন অসুখ সারানো ছাড়াও রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ে তুলতে দারুন সাহায্য করে। আমলকির গুণাগুণের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধেও এর নির্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
ত্রিফলা
ত্রিফলা হল ৩ ফলের মিশ্রন। আমলকি, হরিতকি বা হরদ এবং বিভিতকি বা বহেরা। এই ৩ ফল শুকিয়ে তাদের চূর্ণ একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় ত্রিফলার মিশ্রন। হালের বিজ্ঞান এই প্রতিটি ফল নিয়ে আলাদা আলাদা করে জানিয়েছে তাদের গুণের কথা। দেখা গিয়েছে, সুগার নিয়ন্ত্রণে আনা ছাড়াও ওজন কমাতে সাহায্য ক্যানসার প্রতিহত করতেও সাহায্য করে ত্রিফলা। এখানেই শেষ নয়। দাঁতের সমস্যা আটকাতে, ত্বক উজ্জ্বল করতে, মানসিক চাপ বা উদ্বেগ কমাতে পারে এই মিশ্রন।
জাম
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জামের বীজ। জাম ফলের মত গুরুত্বপূর্ণ এই ফলের বীজও। জাম ও তার বীজে রয়েছে জাম্বোলাইন ও জাম্বোসাইন নামক পদার্থ যা রক্তে শর্করার পরিমান কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া জামের বীজে রয়েছে প্রোফাইল্যাকটিক ক্ষমতা যা হাইপারগ্লাইসেমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফলে রোগীদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় জামের বীজ রাখা দরকার। আয়ুর্বেদশাস্ত্রের মতে, জাম রয়েছে অ্যাসট্রিনজেন্ট অ্যান্টি-ডিউরেটিক, যা ঘন ঘন মূত্রত্যাগ কমাতে সাহায্য করে। হাইপোগ্লাইসেমিক গুণ আছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পূর্ণ যা ডায়াবেটিসে উপকারী।
বাদাম
ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে বাদাম খাওয়া ভালো। খুব কম পরিমাণে (এক বা দুটি কাজু) কাজু খান তবে এ জাতীয় রোগীদের জন্য বাদাম খুব উপকারী।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-06-10 11:18:57
Source link
Leave a Reply