খাবারের মেন্যু আর রেস্টুরেন্টের অভ্যন্তরীন সাজ, সব মিলিয়ে শহরে আছে হরেকরকম খাবারের জায়গা। কিন্তু এতো সব রেস্টুরেন্টের ভিড়েও কিছু রেস্টুরেন্ট আছে যেখানে খাবার মান, পরিবেশ আর পুরো মেন্যু জুড়ে নজরে পড়বে কিঞ্চিৎ ভিন্নতা। নগরীর নতুন আড্ডাস্থল বনানী ১১ নম্বরের ৪ নম্বর সড়কে গত ১৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয় এমনই একটি রেস্টুরেন্ট ‘কেসার’-এর। নতুন এই খাবার ঘরকে নিয়েই আমাদের এ সপ্তাহের ফুডজোন।
রেস্টুরেন্ট সম্পর্কে বলবার আগে আসুন জেনে নেই এর অন্দরসাজ সম্পর্কে। আর এ প্রসঙ্গে বলতে গেলে প্রথমেই আসবে কেসার এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার শবনম-এর কথা। ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং-এর পড়াশোনা করা এই তরুণীই কেসারের পূর্ণরূপ দানকারী। কেসারের পুরো জগৎটাই রঙিন। রান্নার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত কেসার মূলত রান্নাকে রাঙাতে আর সুবাস বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। রেস্টুরেন্টে ঢোকার মুখে নজরে পড়বে এর দৃষ্টিনন্দন নেম প্লেট। একটু ভিন্ন ধারায় কেসার শব্দটা উপস্থাপন করা হয়েছে অনেকটা গাঢ় রঙ আর সোনালী সুতায় মুড়ে। প্রবেশ দ্বারের কাঁচের পাল্লা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলে আলো ঝলমল লম্বা করিডোর। সেখান থেকে সামনে এগিয়ে গেলে আরো ডানদিকে মূল কাউন্টার। এখান থেকেই রেস্টুরেন্টের মূল অংশের শুরু। ডানে বামে মিলে মোট ৪টা বড় রুম জুড়ে রেস্টুরেন্টের অবস্থান। গাছের গুড়ির উপর কাঁচের টুকরা বসিয়ে সাজানো হয়েছে খাবার টেবিল। একটু নিচু কিন্তু আরামদায়ক চেয়ার থাকছে পর্যাপ্ত। ৪টি রুমের বাইরে আছে ছোট্ট একটা রুম আর বাচ্চাদের খেলার ঘর। রেস্টুরেন্টের একদম শেষ প্রান্তে থাকছে রান্নাঘর। রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়রে কিছুটা ভারতীয় স্টাইলের প্রভাব থাকলেও দেশী নানান উপকরণ দিয়েই সাজানো হয়েছে পুরো জায়গা। সিলিং থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই রকমারি লাইটিং ব্যবহার করা হয়েছে। দৃষ্টি কাড়বে দেয়ালে ঝোলানো গ্লাস পেইন্টিংগুলো। এর বাইরে রেস্টুরেন্টের ভেতর চোখে পড়বে ইটের গাঁথুনি খচিত কিছু দেয়াল যেগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে ভিন্ন ধরনের লাইটিংস।
খাবার মেন্যুতে চোখ বুলালে আপাত মনে হতে পারে এটা পুরোদস্তুর একটা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট। কিন্তু আসলে তা নয়। এখানে মূলত একত্র করা হয়েছে আমাদের দেশের প্রচলিত কিছু খাবার আইটেম যেগুলো প্রতিনিয়ত আমরা রেস্টুরেন্টে খেতে ভালবাসি। সেসব সাধারণ মেন্যুকেই অসাধারণ রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে এখানে। যেমন এখানে থাকছে তন্দুরির বিশাল সংগ্রহ। চিকেন, ফিশ, মাটন, বিফসহ আরো নানান ধরনের তন্দুরি রেসিপি মিলবে কেসারে। থাকছে ভেজিটেরিয়ানদের জন্য মজাদার সব সবজি আর পনির দিয়ে রেসিপি। যারা হালকা খাবার খেয়েই দিন পার করতে চান তাদের জন্য আছে দই ফুচকা, দোসা, ভেলপুরির মতো হালকা খাবারও। আর ভারি খাবারে অভ্যস্তদের জন্য থাকছে বিরিয়ানী, নান, তন্দুরি, কাবাবসহ হরেকরকম খাবার। মূল খাবারের পাশাপাশি এপিটাইজার, ডেজার্ট, জুস, আইসক্রিম এসবও মিলবে কেসারে। মোট কথা খাবারের এক পূর্ণাঙ্গ আয়োজন হিসেবেই জনপ্রিয় হতে চায় কেসার, জানালেন কেসারের ম্যানেজিং পার্টনার ইমন। উৎসবের দিনগুলোতে কেসার আয়োজন করতে যাচ্ছে আরো বেশ কিছু ভিন্নধারার অনুষ্ঠান। সেই সাথে খাবারের মেন্যুতেও থাকবে পরিবর্তন। খাবারে একটু ভিন্নতার ছোঁয়া আনতে যেতে পারেন কেসার রেস্টুরেন্টে। ঠিকানা: বাড়ি ৪৫/এ, রোড ৪, ব্লক সি, বনানী, ঢাকা – ১২১৩। ফোন: ৮৮২৪৩২০, ৮৮২৪৩৭৩।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ডিসেম্বর ২২, ২০০৯
Leave a Reply