হাইলাইটস
- ডিপ্রেশনের (depression) সঙ্গে মনখারাপের ঘটনা তফাত বিস্তর। অনেকেই জীবনে একাধিক বার হতাশায় ভুগতে পারেন।
- একে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন রেকারেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার (Recurrent depressive disorder)।
- একই মানুষের মধ্যে যদি কখনও ডিপ্রেশন (depression), আবার কখনও ম্যানিয়া বা হাইপোম্যানিয়ার পর্ব চলতে থাকে, তাকে বলা হয় বাইপোলার ডিজঅর্ডার (Bipolar disorder)।
ডিপ্রেশনের (depression) সঙ্গে মনখারাপের ঘটনা তফাত বিস্তর। অনেকেই জীবনে একাধিক বার হতাশায় ভুগতে পারেন। একে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন রেকারেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার (Recurrent depressive disorder)। একই মানুষের মধ্যে যদি কখনও ডিপ্রেশন (depression), আবার কখনও ম্যানিয়া বা হাইপোম্যানিয়ার পর্ব চলতে থাকে, তাকে বলা হয় বাইপোলার ডিজঅর্ডার (Bipolar disorder)।
সম্প্রতি টেলিভিশন জগতে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। হিন্দি টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী নিশা (nisha rawal) ও করণের বৈবাহিক সম্পর্কে চিড় ধরেছে। ১২ বছরের বিবাহিত জীবনের নানা সমস্যার মাঝে সামনে এসেছে নিশার বাইপোলার ডিসঅর্ডারের (Bipolar disorder) সমস্যাও। যে কোনও মানুষেরই এমন মানসিক সমস্যা দেখা যায়। বাইপোলার ডিসঅর্ডারের (Bipolar disorder)মতো রোগ এখন গোটা বিশ্বে যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে রীতিমতো কপালে ভাঁজ পড়েছে বিশেষজ্ঞদের।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) কী?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে বাইপোলার ডিসঅর্ডার একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। এই রোগে আক্রান্ত হলে ব্যক্তির মেজাজ পরিবর্তন হতে থাকে। এই রোগ সম্পর্কে, জয়পুরের সিএল পানওয়ার হাসপাতালের সিনিয়র পরামর্শক এবং ভারতের হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য বলেছেন, যখন কোনও ব্যক্তি বাইপোলার ডিসঅর্ডারের (Bipolar Disorder) কবলে থাকে, তখন তার ভিতরে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা বেশি আসে। এই বাইপোলার ডিসঅর্ডারের (Bipolar Disorder) দুটি পর্যায় তাকে, একটি হল ডিপ্রেসন ও অন্যটি হল ম্যানিক স্টেজ।
ম্যানিক স্টেজ এনার্জি লেভেল বেড়ে যায়। ঘুমের সে ভাবে প্রয়োজনই পড়ে না। রোগীর মধ্যে সব সময় খুশি খুশি ভাব থাকে, সে অতিরিক্ত কথা বলতে শুরু করে, আত্মবিশ্বাস হঠাৎই প্রচণ্ড বেড়ে যায়, নিজের সম্পর্কে বিরাট ধারণা পোষণ করতে থাকে, এবং সাধারণ যে কাজ, সেগুলিও বেশি বেশি করে করতে শুরু করে। যেমন— কেউ অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে, কেউ অতিরিক্ত এক্সারসাইজ় করতে থাকে, বেশি কিনে ফেলে, সেক্সুয়াল আর্জও বেড়ে যেতে পারে এ সময়ে। একে ম্যানিয়াক এপিসোড বলে। আর এতটা চরম পর্যায়ে না গিয়ে আচরণগুলো কিছুটা মাঝামাঝি জায়গায় থাকলে, তাকে হাইপোম্যানিয়াক এপিসোড বলে। এই পর্বে রোগ ধরা পড়লে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা তুলনায় সহজ।
কোভিড রোগীদের মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারও (Bipolar disorder) দেখা যায়
চিকিৎসকদের মতে, আজকাল করোনার ভাইরাসে আক্রান্ত ৩০ শতাংশ রোগীও এই ব্যাধির কবলে। যার কারণে, সেরে ওঠার সময় সাহস হারিয়ে ফেলেন ও জটিলতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। চিকিৎসকদের মতে, ফার্স্ট কোভিড কমপ্লেক্সে আক্রান্ত সকল রোগীর মধ্যেই বাইপোলার ডিসঅর্ডার দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তারা নার্ভাস হয়ে যায়, দীর্ঘ সময় ঘুমান না এবং এনার্জিটিকও হন না।
বাইপোলার ডিসঅর্ডারের (Bipolar disorder) লক্ষণ
চিকিত্সক এনসি পানওয়ার জানান এই ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি দীর্ঘকাল ধরে উদ্বেগের মধ্য দিয়ে যায়। অন্য ভাষায়, আমরা এটিকে হতাশাও বলতে পারি, যার মধ্যে ব্যক্তি বিরক্ত থাকে এবং তার ভিতরে শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। সেই ব্যক্তি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন এবং সবসময় মনে মনে আজেবাজে চিন্তা করে।
* অনেক সময় তাঁর মনে হয়, কেউ তাকে অনুসরণ করছে।
* যখন কোনও ব্যক্তি দীর্ঘকাল এই ব্যাধিটি বয়ে নিয়ে যায়, তখন সে এতটাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে যায় যে এমনকি আত্মহত্যার চিন্তাও মনের মধ্যে শুরু হয়।
* রোগী অত্যধিক চিন্তা করেন না। তবে, সে চিন্তা না করেই অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। যা তার সমস্যাগুলি আরও বাড়িয়ে তোলে। তার মন এক জায়গায় স্থির থাকে না।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar disorder) দু’টি রোগের একটি সাধারণ রূপ
বাইপোলার ডিসঅর্ডার কোনও একক রোগ নয় বরং দুটি ভিন্ন রোগের একটি অংশ হিসাবে প্রকাশিত হয়। এই ব্যাধিটিতে রোগী হতাশা এবং ম্যানিয়া উভয়েরই পর্বে শিকার হন। পরিবেশগত ও জিনগত কারণে এই মারাত্মক অবসাদের জন্ম হতে পারে। জিনগত ঝুঁকি থাকলেও শৈশবে নির্যাতন ও দীর্ঘকালীন চেপে থাকা মানসিক যন্ত্রণা থেকে এই অবসাদ তৈরি হতে পারে। মনোবিদদের মতে, সাধারণত ৭৩-৯৩ শতাংশ জিন থেকে এই ডিসঅর্ডারের ঝুঁকি বাড়ে। অনেকক্ষেত্রে মারাত্মক আঘাত পেয়ে, স্ট্রোকের কারণে, ব্রেনে আগাত লাগলে, এইচআইভি ইনজেকশনের প্রভাবে এমন মানসিক অসুখের জন্ম হয়। এই রোগটি পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে সমানভাবে দেখা যায়। তবে মহিলারা এই রোগে বেশি ঝুঁকির শিকার হন।
এই রোগ কি সারে?
বাইপোলার ডিজ়অর্ডার দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এই রোগে আক্রান্ত হলেই সব শেষ হয়ে গেল, আর সারবে না। অনেকের ক্ষেত্রেই নিয়মিত ওষুধ খেলে রোগকে ভালোমতো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্বাভাবিক জীবনযাপনেও কোনও সমস্যা থাকে না। তবে, নিয়মিত চিকিৎসা এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। ওষুধ খাওয়ার পরেও কোনও ক্ষেত্রে রোগ মাথাচাড়া দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকই প্রয়োজন বুঝে ওষুধ পাল্টে দেবেন। কিন্তু নিজে থেকে ওষুধ খাওয়া বা চিকিৎসা কোনও ভাবেই বন্ধ করা চলবে না। চিকিৎসকের কথাই শেষ কথা।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-06-07 10:32:25
Source link
Leave a Reply