সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : চলছে ইউরিনারি ব্লাডার (urinery) ক্যানসার (cancer) মাস। আজই আবার ধূমপান (tobacco) বিরোধী দিবস । এই সময়েই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন ইউরোলজিস্ট (eurologist) ডঃ সূর্যপ্রকাশ ভি। বলছেন ধূমপান (smoking) এবং তামাকের ধোঁয়া থেকে এই ধরনের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি।
তিনি বলছেন, ‘মূত্রাশয়ের কোষগুলি যখন অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে, সেগুলি মূত্রাশয়ের ক্যানসারে পরিণত হয়। মূত্রাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তির মূত্রাশয়ে এক বা একাধিক টিউমার থাকতে পারে।’ এরপরেই তিনি জানিয়েছেন, ”আপনি যদি ধূমপান করেন বা তামাকের ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস নেন তাহলে আপনার ক্ষেত্রে মূত্রাশয়ের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশী হয়। মূত্রাশয়ের ক্যানসারের প্রায় ৫০% ক্ষেত্রে তামাকের ধোঁয়াই কারণ হয়। এছাড়া প্লাস্টিক, রঙ, কাপড়, চামড়া ও রবার তৈরির জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিকের সংস্পর্শে দীর্ঘকাল থাকার জন্যেও মূত্রাশয়ের ক্যানসার হতে পারে।’
মূত্রাশয়ের ক্যানসারের উপসর্গগুলি কি কি? চিকিৎসক সূর্যপ্রকাশ বলছেন, ‘প্রস্রাবে রক্ত থাকা মূত্রাশয়ের ক্যানসারের সবথেকে সাধারণ লক্ষণ। এইক্ষেত্রে সাধারণত কোন যন্ত্রণা হয় না। ঘন ঘন প্রস্রাব করা, জোরে প্রস্রাব পাওয়া এবং প্রস্রাব করার সময় যন্ত্রণা করা (ডিসুরিয়া) এগুলি হল মূত্রাশয়ের ক্যানসারের কম সাধারণ লক্ষণ। আপনি যদি এই উপসর্গগুলি দেখতে পান, তাহলে ইউরোলজিস্টের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করুন।’
মূত্রাশয়ের ক্যানসার কীভাবে শনাক্ত করা হয়? তাঁর কথায়, ‘মূত্রাশয়ের ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়ে শারীরিক পরীক্ষাই করা হয়। আপনার ইউরোলজিস্ট আপনাকে সম্পূর্ণ ইউরিন পরীক্ষা, তলপেট ও পেলভিসের আলট্রাসাউন্ড, তলপেট ও পেলভিসের কম্পিউটারাইজড টোমোগ্রাফি স্ক্যান (সিটি স্ক্যান) এবং ইউরিনের ম্যালিগন্যান্ট সাইটোলজি করতে বলবেন। ইউরিন পরীক্ষা করে রক্ত কণিকা পাওয়া যেতে পারে। ইউরিন ম্যালিগন্যান্ট সাইটোলজিতে প্রস্রাবে মিশে থাকা ক্যানসার কোষ পাওয়া যাবে। উচ্চ শ্রেনীর টিউমারের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা অনেক বেশী থাকে। আলট্রাসাউন্ড ও সিটি স্ক্যানের ফলে মূত্রাশয়ের ক্যানসার নির্ণয় করা যাবে আলাদাভাবে ব্লাডার লুমেনের একক বা একাধিক বৃদ্ধি হিসাবে। মূত্রাশয়ের বাইরে ক্যানসার ছড়ানোর দূরত্বের উপর নির্ভর করে সিটি স্ক্যানে মূত্রাশয়ের ক্যানসারের পর্যায় নির্ণয় করা যাবে।’
মূত্রাশয়ের ক্যানসারের চিকিৎসা কি? চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘মূত্রাশয়ের ক্যানসারের চিকিৎসা নির্ভর করে ক্যানসারের শ্রেনী ও পর্যায়ের উপর। উচ্চ শ্রেনী ও উচ্চ পর্যায়ের টিউমারগুলি নিম্ন শ্রেনী ও নিম্ন পর্যায়ের টিউমারের থেকে জৈবিকভাবে আলাদা হয়। এগুলি পুনরায় ফিরে আসা ও দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা সহ অত্যন্ত আক্রমণাত্মক হয়। রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার উদ্দেশ্যে, মূত্রাশয়ের ক্যানসারকে দুটি গোষ্ঠীতে ভাগ করা হয় – নন-মাসল ইনভেসিভ ব্লাডার ক্যানসার (এনএমআইবিসি) এবং মাসল ইনভেসিভ ব্লাডার ক্যানসার (এমআইবিসি)। মূত্রাশয়ের বিভিন্ন চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলি হল- সিস্টোস্কোপি ও টিইউআরবিটি ইন্ট্রাভেসিকাল থেরাপি র্যাডিকাল সিস্টেকটোমি ও ইউরিনারি ডাইভারশন রেডিওথেরাপি, মাল্টিমোডালিটি থেরাপি’
মূত্রাশয়ের টিউমারের প্রাথমিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে সিস্টোস্কোপি ও ট্রান্সইউরেথ্রাল রিসেকশন (টিইউআরবিটি) ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে মূত্রাশয়ে প্রস্রাব যাওয়ার পথে একটি এন্ডোস্কোপের সাহায্যে টিউমারটিকে ছোট ছোট টুকরোতে কাটা হয়। বের করে আনা টিউমার কলা বায়োপ্সির জন্য পাঠানো হয়। মূত্রাশয়ের ক্যানসারের পরবর্তী চিকিৎসা বায়োপ্সি রিপোর্টের উপর নির্ভর করে। বায়োপ্সিতে মূত্রাশয়ের পেশী স্তরে ক্যানসার দেখা না গেলে তাকে নন-মাসল ইনভেসিভ ব্লাডার ক্যানসার (এনআইএমবিসি) বলে। শনাক্ত হওয়া ৭০% মূত্রাশয়ের ক্যানসারই এনএমআইবিসি হয়। উপরিস্তরের ছোট নিম্ন শ্রেনীর প্যাপিলারি ব্লাডার ক্যানসারের ক্ষেত্রে টিইউআরবিটি হল একমাত্র প্রয়োজনীয় চিকিৎসা।
সাবমিউকোসাল লেয়ারে হওয়া টিউমারর ক্ষেত্রে টিইউআরবিটির পরে সহযোগী এন্ট্রাভেসিকাল থেরাপির প্রয়োজন হয়। টিইউআরবিটি প্রক্রিয়ার চার সপ্তাহ পরে ইন্ট্রাভেসিকাল থেরাপি দেওয়া হয়। টিউবারকিউলোসিসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম বিসিজি টিকা ব্যবহার করে মূত্রাশয়ের ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব গড়ে তোলা যায় বলে জানা গেছে।
মূত্রাশয়ের ক্যানসারের ক্ষেত্রে বিসিজি হল সবথেকে বেশি ব্যবহৃত ইন্ট্রাভেসিকাল থেরাপি। এটি ক্যানসারের পুনরায় ফিরে আসা কমায় এবং মূত্রাশয় ক্যানসারের বৃদ্ধির গতি কম রাখে। যারা বিসিজি থেরাপি সহ্য করতে পারেন না, তাদের ইন্ট্রাভেসিকাল কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। সাধারণত ব্যবহৃত ওষুধগুলি হল মিটোমাইসিন ও গেমসিট্যাবিন। ইন্ট্রাভেসিকাল থেরাপি সাধারণত সাপ্তাহিক কিস্তিতে 6 সপ্তাহ ধরে, পরে 3টি সাপ্তাহিক কিস্তিতে এক থেকে তিন বছর ধরে তিন থেকে ছয় মাস সময়কাল ধরে দেওয়া হয়। টিইউআরবিটি ও ইন্ট্রাভেসিকাল থেরাপির পরে, পুনরায় ফিরে আসছে কিনা লক্ষ্য রাখতে নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। এই সময় সিস্টোস্কোপি, ইউরিন সাইটোলজি করা হয়। নিম্ন শ্রেণীর প্যাপিলারি টিউমারের ক্ষেত্রে এক বছর লক্ষ্য রাখতে হয়, আবার উচ্চ শ্রেনীর টিউমারের ক্ষেত্রে সারা জীবন পরীক্ষা করে যেতে হয়।’
লাল-নীল-গেরুয়া…! ‘রঙ’ ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা ‘খাচ্ছে’? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম ‘সংবাদ’!
‘ব্রেকিং’ আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে ‘রঙ’ লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে ‘ফেক’ তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই ‘ফ্রি’ নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.
শরীর স্বাস্থ্য – Kolkata24x7 | Read Latest Bengali News, Breaking News in Bangla from West Bengal's Leading online Newspaper
2021-05-31 14:50:25
Source link
Leave a Reply