হাইলাইটস
- হাওয়ার মধ্যে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিন। দেখবেন প্রায় ১০০ শতাংশ লোকই ঘাড় নাড়াবেন।
- অফিসে টানা বসে কাজ করা, বাড়িতে কাজ এবং অন্যান্য দায়িত্বর চাপ। আবার ওয়ার্ক ফ্রম হোম চালু হওয়ার পর তো আরও বিপদ।
- কাজের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যথাও। সবসময়ই মনে হয় যেন ঘাড়ের মধ্যে পাথর চাপা রয়েছে।
সাদা বাংলায় যাকে বলা হয ঘাড়ে ব্যথা (neck pain) তাকেই ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় সারভাইক্যাল পেইন। প্রধানত অস্টিওআর্থারাইটিস বা সার্ভাইক্যাল স্পন্ডেলাইটিসের কারণেই এই ব্যথা হয়ে থাকে। ঘাড়ের হাড়, জয়েন্ট, ডিস্ক এবং সহ শিড়দাঁড়া জুড়ে শুরু হয় ব্যতা। অত্যাধিক কাজের চাপে হাড়ের উপর চাপ পড়লেই সাধারণত এই রোগ হয়ে থাকে।
সার্ভাইক্যাল পেইন বা ঘাড়ে ব্যথা হলে অনেকেই বাড়ির টোটকা ব্যবহার করেন। গরম শেক, ব্যথা কমানোর মলম বা কাউকে দিয়ে ব্যথা জায়গাটা মাসাজ করিয়ে নেন। এতে সাময়িকভাব আরাম মিললেও ব্যথা একেবারে কমে না। তা সত্ত্বেও অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যান না। কিন্তু এই ব্যথা ভবিষ্যতে মারাত্মক ভূমিকা ধারণ করতে পারে। তাই কম থাকতেই চিকিরসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। ওষুধ এবং নির্দিষ্ট যোগাভ্যাসে এই রোগ থেকে আরাম মিলতে পারে। তার সঙ্গে প্রয়োজন সঠিক ডায়েট।
প্রাকৃতিক উপায়ে রোগ নির্মূলের জন্য খাবারের তালিকাকে ঠিক রাখুন। কিছু নিয়ম মেনে চলুন। ঘাড়ের ব্যথায় (neck pain) আরাম পাবেন।
জল- শরীরের যেকোনও রোগ নির্মূলের জলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘাড়ের ব্যথা (neck pain) কমাতেও এটি সমান উপকারী। জল শরীরের শুষ্কতা দূর করে। পেশীর ব্যথা কমাতে জল এক নম্বর। শরীরের যে কোনও অংশের পেশীতে ব্যথা হলে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। দেখবেন ব্যথা নিজে থেকেই সেরে গেছে। জলের কারণে শরীর হাইড্রেট থাকলে পেশী এবং স্নায়ুর কার্যকলাপ সঠিক থাকে। তাই প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে জল খান।
ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিন ডি- দেহের হাড়কে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিন ডি। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ১০০০-১৫০০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম এবং ৪০০-৮০০ IU ভিটামিন ডি প্রয়োজন। দুধ এবং দুগ্ধজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে। তাই ডায়েট তালিকায় দুধ, দই, ছানা, চিজ, রাখুন। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি এবং আটার রুটি খান। মাছ খান সঙ্গে মাছের কাঁটাও। তৈলাক্ত মাছ, মাংসের মেটে, ডিমের কুসুম ভিটামিন ডি-এর আধার। নিয়ম করে এগুলি পাতে রাখুন। সূর্যের আলো ভিটামিন ডি-এর অফুরন্ত উৎস।
ম্যাগনেশিয়াম- শরীরের হাড়ের গঠন-কাঠামো ঠিক রাখতে ম্যাগনেশিয়ামের প্রয়োজন। শরীরের পেশীকে সিথিল করতে সাহায্য় করে। এর ঘাটতিতে পেশী কিংবা ঘাড়ে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। একজল প্রাপ্তবয়স্কের দিনে অন্তত পক্ষে ৪০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম প্রয়োজন। ফল, সবজি, খোসাযুক্ত শস্য, সয়াবিন, বাদাম প্রতিদিন খেলে শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড- সমুদ্রের মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, স্কুইড খান। শরীরে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপন্ন হবে। এটি শরীরের ইনফ্লেমেটারি কেমিক্যাল হ্রাস করতে সাহায্য করে। ঘাড়ের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য় করে। নিরামিশাষিরা ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড পেতে নিয়মিত আখরোট, শাক, ফ্লেক্স বীজ খান।
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ফাইবার- পেশী এবং স্নায়ুকে সক্রিয় রাখতে শরীরে ইনফ্লেমেশন হ্রাস করা। আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইবারযুক্ত খাবার এই ক্ষতিকারণ ইনফ্লেমেশনকে কমাতে সাহায্য করে।
যেগুলি এড়িয়ে যাবেন
ঘাড়ের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে যেমন সঠিক খাবার খেতে হবে। তেমনই বেঠিক খাবার বর্জন করতে হবে। যে সমস্ত খাবার শরীরের খারাপ ফ্যাট তৈরি করে সেগুলি বর্জন করুন। ফাস্টফুড যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন। দোকান-রেস্তোরাঁর খাবারেও নিয়ন্ত্রণরেখা টানুন। ধূমপান এবং মদ্যপান একেবারে বর্জন করুন। নিয়মিত অ্যালকোহল সেবনে শরীরের ম্যাগনেশিয়াম এবং ক্যালশিয়ামের মাত্রা কমে যায়। ধূমপান হাড়ের পক্ষে ক্ষতিকারণ।
চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে প্রতিদিন যোগাভ্যাস করুন। এক নাগাড়ে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-05-28 12:53:25
Source link
Leave a Reply