ধানমন্ডির শিল্পাঙ্গন গ্যালারির উঠোনটা ভরে উঠতে খুব বেশি সময় লাগে না। নানা মানুষের আনাগোনা। কেউ এসেছে শিল্পকর্মগুলো দেখতে, কেউবা এসেছে সেই নিপুণ শিল্পকর্মগুলো থেকে পছন্দেরটি কিনে নিয়ে যেতে। এখানে চলছে ‘পুনরায় প্রকৃতি’ শীর্ষক শিল্পী সমীরণ দত্তের একক প্রদর্শনী।
২০ নভেম্বর কারুশিল্প গবেষক ও ডিজাইনার চন্দ্রশেখর সাহা মোম জ্বালিয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, শুকনো মৃত কাঠের মধ্যেও যে একজন শিল্পী প্রাণ সঞ্চার করতে পারেন, ঠিক তা-ই প্রমাণ করেছেন সমীরণ দত্ত।’
শিল্পী সমীরণ দত্ত বলেন, ‘গাছের যেসব শেকড়-বাকড় মাটির ওপর উঠে আসে, সেসব দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমার ভালো লাগত। বন্ধুরা যখন খেলতে যেত, তখন আমি ওই সব শেকড়ের পাশে বসে ভাবতাম। তারপর বড় হয়ে আপন মনেই এসব ফেলনা কাঠ আর শেকড়ে সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষাঘষি করতাম। তারপর এই কাঠগুলো বিভিন্ন বস্তুর আকার পেত। আমার এই শিল্পকর্মগুলো যতই নান্দনিক আর বাণিজ্যিক হোক না কেন, এই ফেলনা সম্পদকে কেন্দ্র করে আমি একটা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করার চেষ্টা করছি।’
গ্যালারির উঠোন পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে কাঠের ফ্রেমে বন্দী মানুষের ভাস্কর্য। এর একটু পাশেই আছে লিচুগাছের টুকরো কাঠ দিয়ে বানানো একটি স্নানঘাটের দৃশ্য। কয়েকজন নারী স্নান সেরে ফিরছেন। আছে মস্ত কাঠের পাওয়ালা একটি টেবিল, ধাপে ধাপে উঠে যাওয়া মোমদানি, আলনা, চুড়ির আলনা, কলমদানি, টিভি ট্রলি। পরের ঘরেই মেঝেজুড়ে সাজিয়ে রাখা আছে লিচুগাছের মস্ত বড় গুঁড়ি দিয়ে বানানো বিশাল এক টেবিল। টেবিলের পাশে বসার জন্য গাছের গুঁড়ি আর কাঠ দিয়ে বানানো হয়েছে হরেক রকম চেয়ার। গাছের গুঁড়ি আর শেকড়কেই টেবিল-চেয়ারের আদল দেওয়া হয়েছে। প্রদর্শনীটি ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে।
সুজন সুপান্থ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৪, ২০০৯
Leave a Reply