তানিকে সে দিন বিয়ের পার্টিতে জমকালো শাড়ি আর গয়নায় বেশ লাগছিল। কিন্তু ওর মেকআপের মধ্যে কোথায় যেন একটা অসামঞ্জস্যতা ফুটে উঠছিল। তানিও এটা নিয়ে বেশ বিব্রত বোধ করছিল। এ সময় তানির বান্ধবী নাদিয়া এগিয়ে আসলেন তানির এ বিব্রত বোধ কাটানোর জন্য। নাদিয়া জানালেন তানির ঠোঁটের লিপস্টিক লাগানোটা ওর ঠোঁট অনুযায়ী মানানসই হয়নি বলেই পুরো মেকআপটা বেমানান লাগছে। কাজেই বুঝতেই পারছেন মুখের মেকআপের ক্ষেত্রে ঠোঁট কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। ঠোঁটের সাথে মানানসই মেকআপ করলে আপনার মুখশ্রী যেমন হয়ে উঠবে মোহনীয় তেমনি ঠোঁটের আকার অনুযায়ী মেকআপ না করলে পুরো মেকআপ প্রক্রিয়াই ভন্ডুল হয়ে যেতে পারে। তাই ঠোঁটের আকার অনুযায়ী মেকআপ রপ্ত করা অপরিহার্য। তাই নিয়ে এবারের রূপকড়চা
ঠোঁটের প্রকৃত সীমারেখা লিপস্টিকের রঙ প্রয়োগের মাধ্যমে একটু বাড়িয়ে বা কমিয়ে ঠোঁটের আকার পরিবর্তন করা যায়। ঠোঁটের আকার পরিবর্তন করতে চাইলে প্রথমেই যে রঙের ফাউন্ডেশন বেছে নেবেন সে ফাউন্ডেশন আঙুলে নিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। এভাবে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিলে ঠোঁটের আউটলাইন বাড়িয়ে বা কমিয়ে লিপস্টিক লাগালে লিপস্টিকের রঙ কেটে যাবে না। ১০ মিনিট পর লিপ ব্রাশে লিপস্টিক লাগিয়ে সে ব্রাশ খুব সরু করে প্রয়োজন মতো সীমারেখা বাড়িয়ে বা কমিয়ে মানানসই আউটলাইন এঁকে নিন। খুব সর্তক হয়ে আউট লাইন আঁকবেন যাতে এ আউট লাইন ঠোঁটের মূল সীমারেখা থেকে খুব বেশি ভেতরে বা বাইরে না যায়।
ঠোঁটের আকার বুঝে কিভাবে আউটলাইট এঁকে লিপস্টিক লাগাতে পারি তা এখানে আলোচনা করা হলো।
পাতলা ঠোঁট
যাদের ঠোঁট পাতলা তারা ঠোঁটের প্রকৃত সীমারেখার ঠিক বাইরে আউট লাইন এঁকে নিবেন লিপ লাইনার বা লিপ ব্রাশের সাহায্যে। এখন গাঢ় রঙের লিপস্টিক আউট লাইন বরাবর সারা ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট অনেক ভরাট দেখাবে। সবশেষে লিপগ্লস ব্যবহার করে ঠোঁট বাড়তি চক্চকে করে নিন।
পাতলা ছোট ঠোঁট
ছোট-পাতলা ঠোঁট ভরাট ও বড় দেখানোর জন্য ঠোঁটের আসল সীমারেখা সামান্য বাড়িয়ে আউটলাইন এঁকে নিন। এবার গাড় বা হালকা রঙের লিপস্টিকে ঠোঁট ভরাট করে নিন।
দুই কোণ চাপা ভরাট ঠোঁট
যাদের ঠোঁট এ ধরনের তারা আউট লাইন আঁকার সময় ঠোঁটের দুই কোণ বাড়িয়ে মানানসই আউট লাইন আঁকবেন। এ ধরনের ঠোঁটে সব সময় হালকা রঙের লিপস্টিক লাগালে ভাললাগে।
ফোলা ঠোঁট
যাদের ঠোঁট একটু ফোলা ধরনের তারা ঠোঁট মানানসই করার জন্য ঠোঁটের প্রকৃত সীমারেখা বরাবর ম্যাচিং শেড ব্যবহার করে আউট লাইন আঁকুন। এবার ওপরের ঠোঁট ও নিচের ঠোঁট ভরাট করুন যথাক্রমে হালকা ও গাঢ় রঙের লিপস্টিক দিয়ে। ফোলা ঠোঁট হলে লিপগ্লস না লাগানোই ভাল। তবে ফোলা ঠোঁট যদি মুখশ্রীর সাথে মানান সই হয় তা হলে শুধু মাত্র নিচের ঠোঁটে লিপগ্লস লাগাতে পারেন।
ভরাট ঠোঁট
ভরাট ঠোঁটের ক্ষেত্রে প্রকৃত সীমারেখা বরাবর বা সামান্য কমিয়ে আউট লাইন আঁকুন। ঠোঁটের দু’কোণায় আউটলাইন মেলাবেন না। সামান্য ফাঁক রাখবেন। এবার গাঢ় বা মাঝারি রঙের লিপস্টিকে ঠোঁট ভরাট করুন। ভরাট ঠোঁটে কখনো লিপগ্লস ব্যবহার করবেন না।
প্রসারিত ঠোঁট
প্রসারিত ঠোঁটের জন্য আউটলাইন আঁকুন হালকা রঙের লিপস্টিক লিপ-ব্রাশে নিয়ে বা হালকা রঙের লিপলাইনার ব্যবহার করে। দুই কোণায় সামান্য ফাঁক রাখবেন। যে রঙের লিপস্টিক দিয়েই ঠোঁট ভরাট করুন না কেন, তা ঠোঁটের মাঝের অংশে লাগান গভীর করে। আর দুই পাশে লাগান অপেক্ষাকৃত হালকা করে।
এই হলো মোটামুটি ঠোঁটের মেকাপ। শেষ করার আগে যে কথাটি কথা না বললেই নয় তাহলো লিপস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে অখ্যাত কোনো ব্র্যান্ডের যে ব্যবহার করেন না আর এটি যেন আপনার ঠোঁটকে উজ্জ্বল, চকচকে ও চেহারার সাথে মানানসই করে তুলে সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন।
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক, নভেম্বর ১৭, ২০০৯
Leave a Reply