চোখে না পড়লেও খাদ্যাভ্যাস আর পরিবেশের কারণে ত্বকে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
অথচ সুস্থ ও তারুণ্যময় ত্বকের জন্য ত্বক বিশুদ্ধ রাখা প্রয়োজন। জটিল কিছু নয় সাধারণ কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখা যায়।
ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ‘কসমেটিক সার্জন’ ডা. কারিশমা কাগোড বলেন, “ত্বকের ময়লা ও বিষাক্ত উপাদান দূর করতে নিয়মিত পরিচর্যার প্রয়োজন। তবে সেটা শুধু ‘স্ক্রাবিং’, ‘ফেইশল’ এই ধরনের রূপচর্চার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। পাশাপাশি জীবনযাপনও হতে হবে সুশৃঙ্খল।”
কঠিন কোনো নিয়ম নয়, সাধারণ কিছু বিষয় খেয়াল রাখলেই মিলবে বিশুদ্ধ দীপ্তময় ত্বক।
নিজেকে আর্দ্র রাখা
শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করতে নিজেকে আর্দ্র রাখা জরুরি। পর্যাপ্ত পানি পান দাঁত ভালো রাখা থেকে শুরু করে পুরো দেহের পিএইচের মাত্রা ঠিক রাখে।
পানির সঙ্গে কয়েক টুকরা শসা, বা টক-জাতীয় ফল যোগ করতে পারেন। পানির স্বাদ বাড়ার পাশাপাশি এটা শরীরে ভিটামিন যোগাতেও সাহায্য করবে।
পরামর্শ: নিজেকের কাছে সবসময় একটা ছোট বোতল রাখুন এবং মনে পড়লেই পানি পান করুন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ত্বক থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করতে প্রয়োজন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শরীর ভালো রাখে, বিষাক্ত উপাদান দূর করে ও সঠিক পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহায়তা করে।
পরামর্শ: সবুজ শরবত যেমন- কপি, শসা ও আনারসের জুস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এটা শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি ও ভিটামিন সরবরাহ করবে।
পর্যাপ্ত ঘুম
কোন দোহাই দিয়েই ঘুমের পরিমাণ কমানো যাবে না। সুস্থ ও ত্বক ভালো রাখতে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া, আট ঘন্টার ঘুম নিশ্চিত করা এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। যা মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করবে।
পরামর্শ: স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়লে ঘুমের সমস্যা কাটানো সম্ভব।
ত্বকের সঠিক পরিচর্যা
ত্বক ভালো রাখতে সকালে উঠে ভালো মতো ত্বক পরিষ্কার করা ও যত্ন নেওয়া উচিত। কারণ ঘুমের মধ্যে মেরামতের কাজ করে যায় দেহ। ত্বকে চলতে থাকে পুনরুদ্ধারের কর্মযজ্ঞ।
ক্ষতিকর উপাদান যা দেহ বের করে দিতে থাকে ঘুমের মধ্যে তা হয়ত ত্বকের উপরেই জমা হচ্ছে সারারাত ধরে। যেকারণে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও সকালে উঠে ক্রিম ভিত্তিক ফেইস ওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
পরামর্শ: ত্বক ভালো রাখতে সপ্তাহে দুয়েকবার এক্সফলিয়েট করা উচিত।
কম চিনি গ্রহণ
অতিরিক্ত চিনি খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। খাবার তালিকা থেকে চিনি বাদ দেওয়া ত্বক ভালো রাখতেও সহায়তা করে। মিষ্টি ধরনের খাবার, চকোলেট ইত্যাদি খাওয়া ত্বকের ক্ষতি করে দ্রুত বয়সের ছাপ ফেলে। চিনি গ্রহণের পরিমান কমাতে ফল ও ক্ষুধা কমায় এমন খাবার খাওয়া ভালো।
পরামর্শ: সাধারণ চকলেটের পরিবর্তে ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন।
ঘাম দিয়ে বিষাক্ততা দূর
শরীরচর্চার ফলে শরীর ঘামে। আর এই ঘামের মাধ্যমেই ত্বক বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়।
পরামর্শ: ঘাম হওয়ার পরে ত্বক অবশ্যই ভালো মতো পরিষ্কার করতে হবে। অন্যথায় লোম কূপে এসব জীবাণু জমে থেকে ত্বকে নানান সমস্যার সৃষ্টি করবে।
মুখ ধোয়ার পরে টোনার ব্যবহার
ত্বক পরিষ্কার রাখতে কেবল মুখ ধোয়া যথেষ্ট নয় টোনার ব্যবহার করাও আবশ্যক। অ্যালকোহল মুক্ত টোনার ত্বকের পিএইচয়ের মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে এবং ত্বকের উপরিভাগ মসৃণ রাখতে সহায়তা করে।
পরামর্শ: ত্বক মসৃণ রাখতে প্রাকৃতিক উপাদানের তৈরি টোনার ব্যবহার করা উপকারী।
অ্যালকোহল ও ধূমপান থেকে দূরে থাকা
নিঃসন্দেহে এগুলো শরীরের জন্য খারাপ। অ্যালকোহল ত্বকে পানি শূন্যতা সৃষ্টি করে এবং দ্রুত শুষ্ক ও ক্লান্তিভাব দেখা দেয়। ধূমপান ত্বকের কোলাজেন ক্ষতিগ্রস্ত করে দ্রুত বয়সের ছাপ ফেলে।
পরামর্শ: স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করতে চাইলে ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকতে হবে।
নিয়মিত গরম পানিতে গোসল না করা
গরম পানিতে গোসল ত্বকের পিএইচের ভারসাম্যের মাত্রায় ব্যঘাত ঘটায় ও ত্বকে নানান সমস্যার সৃষ্টি করে। তাছাড়া গ্রীষ্মে গরম পানিতে গোসল করার পর বরং ঘামের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক আর্দ্রতা হারাতে থাকে। এছাড়াও অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল ব্রণের সৃষ্টি করে।
পরামর্শ: গরম পানিতে গোসল করা হলেও পরে সামান্য ঠাণ্ডা পানি দিয়ে শরীর ভিজিয়ে নিন। আর ঠান্ডা পানি দিয়ে যদি গোসলে অস্বস্থি হয় তাহলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করাই ভালো।
ভিটামিন সেরাম দিয়ে ত্বক আর্দ্র রাখা
ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিন সি এবং ই সমৃদ্ধ সেরাম ভালো কাজ করে।
পরামর্শ: মুখ ও দেহের ত্বক ভালো রাখতে ভিটামিন যুক্ত হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
এন এইচ, ১৫ মে
স্বাস্থ্য | DesheBideshe
2021-05-15 15:43:20
Source link
Leave a Reply