প্রতিদিনের জীবনে ভালো থাকার প্রয়োজনে শুধু যে দৌড়ঝাপ নয় বরং মনোজাগতিক চিন্তা চেতনার ভেতরেও উপলব্ধি ছড়িয়ে দেয়া যায় তা আজ প্রমাণিত। ফিটনেসের সেই অধ্যায় নিয়েই লিখৈছেন হাসান মাহমুদ
হয়তো পড়াশোনায় খুব চাপ যাচ্ছে আপনার। কিংবা অফিসের কাজ আর নানাবিধ টেনশন নিয়ে হয়তো প্রায়ই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় আপনাকে। কাজেই শরীরটা দিব্যি সুঠাম হলেও মনের রোগে যেন প্রতিনিয়তই কাবু হয়ে পড়ছেন আপনি। পরোক্ষভাবে যেটি হয়তো প্রভাবিত করছে আপনার জীবনযাত্রা আর শারিরীক সক্ষমতাকেও। অথচ শরীর ও মনের জন্য প্রতিদিন সামান্য একটু সময় আলাদা করে বরাদ্দ করেই কিন্তু আপনি নিজেকে করে তুলতে পারেন কর্মচঞ্চল ও চাঙ্গা। আর শরীর ও মনের জন্য উপকারী এমনই এক বিষয় হলো মেডিটেশন।
মেডিটেশন এমনই সহজ ও সাধারণ একটি বিষয় যে এর জন্য বাড়তি কোনো আড়ম্বরের প্রয়োজন নেই বললেই চলে। ঘরের কোনো এক কোণে কিংবা ছাদে, বারান্দায়, বাগানে একটু নিরিবিলি জায়গাতে অনায়াসেই মেডিটেশন শুরু করা যায়। এক্ষেত্রে মেডিটেশনের সময় একটু আরামদায়ক পোশাক পড়লে ভাল হয়। সেই সাথে কমপক্ষে আধাঘন্টা যাবতীয় কাজ এবং ব্যস্ততাকে দূরে রাখার মতো মানসিকতাও পরিপূর্ণ মেডিটেশনের জন্য জরুরী। মেডিটেশনের মূল উদ্দেশ্য যেহেতু আপনার মনোসংযোগ ও চিন্তাকে একটি স্থির অবস্থায় নিয়ে আসা তাই বাধাধরা কোনো নিয়মেই এটি হতে হবে এমনটি ভাবা ঠিক নয়। বরং যেভাবে আপনি কমফোর্ট ফিল করেন ঠিক সেইভাবে বসেই নিজের মনকে স্থির করার চেষ্টা চালাতে পারেন। এ সময় ধীরে ধীরে ও গভীর নিঃশ্বাসের মাধ্যমে নিজেকে জাগতিক চিন্তা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। মনোসংযোগের জন্য চাইলে সুন্দর কোনো প্রাকৃতিক দৃশ্যের কথা ভাবতে পারেন। কিংবা চাইলে করা যেতে পারে আধ্যাত্মিক কোনো চিন্তাও। তবে ভুলেও মনোসংযোগ হারিয়ে সাংসারিক কোনো কাজের চিন্তা এর মধ্যে নিয়ে আসবেন না। প্রথম প্রথম হয়তো একবারের চেষ্টায় সব চিন্তা থেকে নিজেকে সরিয়ে আনা কঠিন হবে। তবে আপনি যদি ক্রমাগত প্রচেষ্টায় কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মিনিটও নিজের চিন্তাগুলোকে স্থির রাখতে পারেন তাহলেই মেডিটেশনের সুফল ভোগ করতে পারবেন।
মেডিটেশন এর ফলে মন থেকে অকারণ চিন্তা যেমন দূর হয় তেমনি যেকোনো কাজে নিজের মনোসংযোগও অনেক বেশি বাড়ানো যায়। এছাড়া মেডিটেশনের রয়েছে বেশ কিছু উপকারী শরীরতাত্ত্বিক দিকও। এর মধ্যে শরীরে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করা, বাড প্রেশার স্বাভাবিক রাখা, মাংসপেশীর শিথিলতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা, মাথাধরা কমানো ইত্যাদি নানা উপকার পাওয়া যেতে পারে মেডিটেশন থেকে। এছাড়া ডিপ্রেশন, ইনসমনিয়া, মানসিক ক্লান্তি ও একঘেয়েমি কাটাতেও মেডিটেশন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, অক্টোবর ২৭, ২০০৯
monir
ay pezti khub valo laglo