হাইলাইটস
- সকালে ব্রেকফাস্টের (Breakfast) নাম শুনলেই আজকাল টোস্ট, ওমলেট, স্যান্ডুইচ, সসেজ, প্যানকেক, ডিমসিদ্ধ, ওটস্ এসবের নামই শোনা যায়।
- এগুলি স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট (Breakfast)। যাঁরা স্বাস্থ্য নিয়ে বেশি মাথা ঘামান না তাঁরা কচুরি, লুচি, পরোটা দিয়ে দিব্য চালিয়ে নেন।
- এগুলি চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট। অস্বাস্থ্যের কথা না হয় নাই তুললাম।
আসলে ইংরেজি ব্রেকফাস্ট (Breakfast) ভারতীয়দের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। হাতে সময় নেই, গরম দুধে ওটস্ দিয়ে চিনি বা ফল মিশিয়ে খেয়ে নিন। পেট ভরা থাকবে অনেক্ষণ। কিন্তু ওটস্ বানানোর চেয়েও কম সময়ে যদি কোনও ব্রেকফাস্ট তৈরি করা যায়? অবাক হবেন না। দেশীয় ব্রেকফাস্টগুলি ফাস্টফুডের তকমা না পেলেও এগুলি তৈরি করতে কিন্তু বেশি সময় লাগে না। উদাহরণ, দই-চিঁড়ে (Doi Chire)।
বাংলার অতি প্রাচীন একটি জলখাবার ছিল ফলার অর্থাৎ, ফল মিশ্রিত আহার৷ চিঁড়ে, মুড়কি, দই, চিনি, মণ্ডা, ক্ষীর, পাকা আম, কাঁঠাল, কলা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হয় ফলার৷ চিঁড়েকে জলে ভিজিয়ে তার সঙ্গে দই ও অন্যান্য ফল মেশাতে হয়৷ কোথাও কোথাও আবার দুধও মেশানো হয় তার সঙ্গে৷ মধ্যযুগে বৈষ্ণবদের মধ্যে যে কোনও উত্সব-অনুষ্ঠানে চিঁড়ে-দই খাওয়া এবং খাওয়ানোর রীতি ছিল৷ চিঁড়ে-দই যে শুধু বৈষ্ণবদের প্রিয় খাবার তা নয়, মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের এর কথা বলা হয়েছে। সাবেকি পরিবারগুলিতে আজও এই খাবারটি প্রচলিত। হঠাৎ আধুনিক হওয়া পরিবারগুলিতে অবশ্য দই-চিঁড়ের চল নেই বললেই চলে। অথচ যাঁরা এর স্বাদ পেয়েছেন তাঁরা জানেন যে প্রাচীন এই ভারতীয় ‘ফাস্টফুড’টি কতটা সুস্বাদু।
উত্তরভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বাংলার মানুষ আজও দই-চিঁড়ে (Doi Chire) খেতে অভ্যস্ত। এর পুষ্টিপুণও অনেক। গ্লুটেন ফ্রি হওয়ায় চিঁড়ে হজম করা সহজ। চিঁড়েতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। চিঁড়েতে ফাইবার থাকার ফলে এটি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। ম্যাগনেশিয়াম থাকায় চিঁড়ে হার্টের রোগীদের পক্ষে ভালো পথ্য। দইয়ে আছে জল, ভালো ক্যালোরি এবং প্রোটিন। ব্লাডসুগার নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পেটের সমস্যা মেটাতে দই-চিঁড়ে খাওয়া যায়। এককথায় দই-চিঁড়ে পুষ্টিকর খাবার। এর সঙ্গে ফলের টুকরো মিশিয়ে দিলে তা আরও সুস্বাদু হয়ে ওঠে। বিভিন্ন ভারতীয় পরবে দই-চিঁড়ের ব্যবহার হযে থাকে। একে দেবতার প্রসাদ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
দই-চিঁড়ে (Doi Chire) তৈরি করা যায় চোখের নিমেষে। ‘ফাস্টফুডে’র প্রতিযোগিতা হলে দই-চিঁড়ে হয়তো সেকেন্ড হবে। প্রথম স্থান অবশ্যই পাবে দুধমুড়ি। সে যাই হোক।
দই-চিঁড়ে (Doi Chire)
চিঁড়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। এতে মাটি বা ধুলো যেন না থাকে। এতে মেশান ঘরে পাতা টকদই, মিষ্টি স্বাদের জন্য চিনি, বাতাসা কিংবা গুড় দিতে পারেন। চিনির স্বাদই অবশ্য সেরা। কলা ছোটো ছোটো টুকরো করে দিতে পারেন। ইচ্ছে হলে কাজু, আমন্ড বা কিশমিশও দিতে পারেন। কিংবা নিজের পছন্দমতো যে কোনও ফল টুকরো করে দই-চিঁড়েতে মিশিয়ে দিন। তবে দই-চিঁড়ের সঙ্গে কলা বা আমই সবচেয়ে ভালো লাগে। সমস্ত কিছু বাটিতে নিয়ে চামচ দিয়ে শুধু নেড়ে দিন। ঘড়ি ধরে দেখুন পাঁচ মিনিটও লাগবে না।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-05-11 11:31:17
Source link
Leave a Reply