এই নগরে কাকের ডাকে ঘুম ভাঙে। শুরু হয়ে যায় ব্যস্ততা। হাজার কাজের ভেতরে যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। শহরজুড়ে গিজগিজ করছে মানুষ। চার দেয়ালের মধ্যেও হাঁপিয়ে উঠতে হয়। মন চায় একটুখানি খোলামেলা পরিবেশে সবুজ আর মুক্ত আকাশ দেখতে। কিছুটা সময় ব্যস্ততাকে পেছনে ফেলে এমন স্থানে হাঁটতে-বসতে পারলে যেন প্রশান্তি লাগে। আবার অনেকেই উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো রোগে ভুগছেন। তাঁদের জন্য হাঁটা আবশ্যক। গরমের অতিষ্ঠতা তো রয়েছেই। এসব ক্ষেত্রে অনেকেই মুক্ত বাতাস নিতে বিভিন্ন পার্কে বা মুক্ত স্থানে ছুটে যায়। নকশার এই প্রতিবেদনে থাকছে এমন কিছু স্থানের খোঁজখবর।
জিয়া উদ্যান
মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জিয়া উদ্যান এলাকাটাও বেশ চমত্কার। এর পাশে ক্রিসেন্ট লেকে বসার দারুণ এক স্থান। বিকেল হতে হতেই এখানে মানুষের সমাগমটা বাড়তে থাকে। রাত অবধি তা চলতে থাকে।
বুড়িগঙ্গা সেতু
ঢাকার পোস্তগোলায় এর অবস্থান। সেতুর ওপর ঘুরে বেড়ানো দারুণ একটি জায়গা। নদীর দৃশ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোটা মন্দ হয় না। বাবুবাজারের কাছে এর দ্বিতীয় সেতুটিও ঘুরে বেড়ানোর উপযুক্ত স্থান।
জীবনের একঘেয়েমিকে পেছনে ফেলে সময় করে একটু হাঁটুন, বসুন, বা ঘুরে বেড়ান। দেখবেন আর দম আটকে আসছে না। কাজ করে যেমন আনন্দ পাবেন, তেমনি জীবনেও আসবে ছন্দ।
ধানমন্ডি লেক
ধানমন্ডি এলাকাজুড়ে বিস্তীর্ণ লেক। দুই পাশে সবুজ গাছপালা। এখানে রয়েছে দারুণ হাঁটার ও বসার স্থান। ইচ্ছে করলে ব্যায়ামও করতে পারবেন আপনি। সকাল-সন্ধ্যা দুই বেলায়ই বিভিন্ন পেশার মানুষ আসে এখানে। বিভিন্ন উত্সবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখর হয়ে ওঠে এ লেকটি। লেকে নৌকায় চড়ে বেড়ানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। মত্স্য শিকারীরা নির্দিষ্ট দিনে একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে মাছও ধরতে পারে। লেকের পাশেই রয়েছে খাবারের দোকান।
সংসদ ভবন
সংসদ ভবন দর্শনীয় স্থান বলে লোকজন এখানে এসে ভিড় করে। চলে হাঁটাহাঁটির উত্সবও। রাস্তার পাশে ফুচকা ও চটপটির অনেক দোকান রয়েছে এখানে।
রমনা পার্ক
রমনা পার্কের খ্যাতিটা সবার কাছেই বেশ পরিচিত। বসা ও হাঁটার জন্য বেশ উপভোগ্য একটি স্থান। বিভিন্ন গাছপালা, পাখিদের আনাগোনা, কলকাকলি ভালো লাগবে আপনার।
মিরপুর বেড়িবাঁধ
মিরপুরের বাসিন্দাদের কাছে এটি দারুণ এক বেড়ানোর জায়গা। বাঁধের দুই দিকেই রয়েছে খাবারের ছোট ছোট দোকান। বাজার করা যাবে এখান থেকে। টাটকা সবজি, নদীর মাছ—সব উপকরণ পাওয়া যায় এখানে। ঘুরে বেড়ানোর ফাঁকে বাজারটাও সেরে নেওয়া যায়।
লালবাগ ও আহসান মঞ্জিল
ঐতিহাসিক দিক থেকে খ্যাত এ দুটি স্থান। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বেশ প্রসিদ্ধ। এখানে রয়েছে হাঁটার ও বসার দারুণ জায়গা। যারা হাঁটে তারা খুব সকালেই এসব স্থানে ঢুকে হাঁটতে পারবে। লালবাগে প্রবেশমূল্য পড়বে ১০ টাকা ও আহসান মঞ্জিলে ২ টাকা।
বাহাদুর শাহ পার্ক
পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের এ পার্কটিতে এলাকার বাসিন্দারা হাঁটতে ও বসতে আসে। চমত্কার একটি ফোয়ারাও আছে এখানে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এ উদ্যানে বিকেল হলেই জমায়েত হয় বিভিন্ন পেশার মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ-তরুণীদের কাছেও এটি বেশ প্রিয় একটি স্থান। একটি লেকও আছে এখানে। আর তার পাশে আছে বসার ব্যবস্থা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ২৭, ২০০৯
Leave a Reply