‘শীতকালে ঘরবাড়ি অন্যান্য সময়ের থেকে একটু বেশিই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। তখন বায়ুতে আর্দ্রতা কম থাকে। ধূলিকণাও বেশি ওড়ে। ফলে একটু অসচেতন হলেই অসুখ-বিসুখ হয়। এ ছাড়া পোশাক-পরিচ্ছদ, আসবাবপত্রে তাড়াতাড়ি নোংরা হয়। তাই শীত আসার আগেই গৃহিণীদের এর জন্য আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়। বাড়তি সতর্কতাও অবলম্বন করতে হয়।’ কথাগুলো বলছিলেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, গৃহায়ণ ও গৃহব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড· ফিরোজা সুলতানা।
এবারের নকশায় শীতের পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে তাঁর কিছু পরামর্শ রইল-
–শীতের গরম পোশাক, যেমনঃ সোয়েটার, শাল, জ্যাকেট আলমারি থেকে বের করে রোদে দিতে হবে। অনেক দিন ব্যবহার না করলে পোশাকে ভাপসা গন্ধ হয়, রোদে দিলে তা দূর হয়।
–লেপ, তোশক, কম্বল, চাদর ইত্যাদিও রোদে দিতে হবে। রোদ থেকে তোলার পর তা ঝেড়ে ঘরে রাখতে হবে। আর এসবের ওপর সব সময় কাপড়ের ঢাকনা ব্যবহার করা উচিত। এতে ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাবে।
–উল, ফ্লানেলের জিনিসও রোদে দেওয়া উচিত। কারণ, তুলে রাখা কাপড়ে অনেক সময় ফাঙ্গাস পড়ে। এতে শরীরে রোগ সৃষ্টি হয়।
–সোফার কভার, পর্দা শীতের আগেই একবার ধুয়ে ফেলা উচিত। তা ছাড়া শীতকালে পর্দা বেশি নোংরা হয়, তাই প্রতিদিন পর্দা ঝাড়া উচিত।
–যেসব বাড়িতে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত কাচে ঘেরা, সেখানে দরজা-জানালার ভারী পর্দা ব্যবহার করতে হবে।
–পর্যাপ্ত গরমের পোশাক কেনা না থাকলে এখনই কিনে ফেলা উচিত।
–ঘরে পড়ার স্যান্ডেল, মোজা, টুপি কিনতে পারেন।
–ঘরের মেঝেতে শতরঞ্জি বিছিয়ে নিন। সামর্থø থাকলে ফ্লোর ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন। এতে শীত কম অনুভূত হয়।
–শীত আসার আগেই ওয়াটার হিটার, গিজার ঠিক আছে কি না পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
–বাড়ির উত্তরের দিকে জানালা কম খুলতে হবে। কারণ, উত্তর দিক থেকে ঠান্ডা হাওয়া হু হু করে ঘরে ঢোকে।
–ঘরে পর্যাপ্ত রোদ আসার ব্যবস্থা করতে হবে।
শীতের বিশেষ প্রস্তুতির জন্য পরিবারের সব সদস্যকেই সচেতন থাকতে হবে। শীতে কাপড়চোপড় বেশি হওয়ায় তা সবাইকে গুছিয়ে রাখতে হবে। এতে ঘর গোছানো লাগবে। প্রতিদিনই ঘর পরিষ্কার করতে হবে। তাহলে শীত নিয়ে আর কোনো দুশ্চিন্তা থাকবে না। উষ্ণ ও বাড়তি প্রস্তুতিতে শীতের প্রতিটি দিন ভালোভাবেই কাটবে।
সূত্রঃ প্রথম আলো, অক্টোবর ২৮, ২০০৮
Leave a Reply