মানুষের রুচিবোধের সঙ্গে মিল রেখে ঘরের অন্দরসজ্জায় নতুনত্ব আনার জন্য প্রতিনিয়তই পাল্টে যাচ্ছে আসবাবের ডিজাইন। একসময় যে আসবাবগুলো ছিল ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তু, সময়ের পরিবর্তনে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নান্দনিকতার বিষয়টিও। কাজের উপযোগিতার সঙ্গে সৃজনশীলতার মিশ্রণ ঘটিয়ে সব ধরনের আসবাবেই আনা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দনের ছোঁয়া। একটা সময় ছিল, যখন বাড়িতে জুতার তাক হতো তিন বা চার ধাপবিশিষ্ট রট আয়রন বা লোহার তাকের। যেখানে জুতা জোড়া সুন্দরমতো গুছিয়ে রাখলেও তাকটি দৃষ্টিনন্দন না হওয়ায় ঘরের সৌন্দর্যহানি ঘটে। এখন মানুষের শৌখিনতার বিষয়টি মাথায় রেখে আসবাবের প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করছে নিত্যনতুন জুতার তাক বাক্স। ডাবলডোর, ক্যাবিনেট (ওয়াল), ডিভানসহ বিভিন্ন ডিজাইনের জুতার তাক পাবেন আসবাবের দোকানগুলোতে। চাইলে কাঠের দোকানে ফরমায়েশ দিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন আপনার জন্য পছন্দসই জুতার তাক। এ তো গেল বাজারে নিত্যনতুন জুতার তাকের কথা। এ ছাড়া ব্যতিক্রমী ছোঁয়ায় জুতার তাক তৈরি করে ঘরে কীভাবে আনবেন আভিজাত্যের ছোঁয়া, সেই বিষয়ে জানালেন পিঁড়ি কথনের আসবাব ডিজাইনার জেনিস মাহমুন। বসার ঘরে যদি জানালা থাকে, সে ক্ষেত্রে জানালার সামনে তৈরি করতে পারেন স্থায়ী সিটিং জুতার তাক। কাঠ দিয়ে সিঁড়ি তৈরি করে ধাপগুলোকে বসার জায়গা এবং খাড়া অংশটি জুতা রাখার তাক বানিয়ে তৈরি করতে পারেন স্টেয়ার শু-র্যাক। এ ছাড়া শোবার ঘর বা সাজঘরে তৈরি করতে পারেন শু-র্যাক ক্যাবিনেট আর একটু বড় আকৃতির এই ক্যাবিনেটের বিভিন্ন তাকে রাখতে পারেন জুতাসহ এর আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র। এ ছাড়া বাড়ির প্রবেশমুখে রাখতে পারেন ডিভান শু-র্যাক। ৪র্×র্২র্ উচ্চতায় কাঠের তৈরি র্যাকটির ওপর বসিয়ে দিন ফোমের ডিভান, কাঠের র্যাকটি ঢেকে দিন সুদৃশ্য কাঠের কারুকার্য করা পাল্লা দিয়ে। যাতে বাড়িতে প্রবেশ করে কেউ বুঝতে না পারে, সেখানে জুতার র্যাক আছে। এ ছাড়া বাসার ঘরগুলো যদি খুব ছোট হয়ে থাকে, সেখানে সুবিধাজনক জায়গায় দেয়াল থেকে দুই ফুট প্রশস্ততায় বানিয়ে নিতে পারেন স্টোর শু-র্যাক, দেয়ালের রংয়ের সঙ্গে মিল রেখে নান্দনিক কাচের দরজা দিয়ে ঢেকে রাখতে পারেন দেয়ালের র্যাকটি।
কোথায় পাবেন জুতার তাক
বিভিন্ন ধরনের ব্যতিক্রমী জুতার তাক বানাতে চাইলে আপনি চলে যেতে পারেন কল্যাণপুরের ‘পিঁড়ি কথনে’। সেখানে পাবেন বিভিন্ন ধরনের নান্দনিক জুতার তাক। খরচ পড়বে ক্যাবিনেট ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, স্টেয়ার সিটিং শু-র্যাক সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা। এ ছাড়া অটবি ও আখতার ফার্নিচারে পাবেন বক্স, টেবিল, ক্যাবিনেট জুতার তাক। দাম পড়বে তিন হাজার থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত। আর রট আয়রনের তৈরি একটু হালকা ডিজাইনের জুতার তাক কিনতে চাইলে আপনি চলে আসতে পারেন মালিবাগের নাইস ফার্নিচার মিউজিয়ামের দোকানে। এখানে গ্লাস ও রট আয়রনের তৈরি বিভিন্ন জুতা পাবেন ছয় হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকায়। এ ছাড়া যেকোনো আসবাব তৈরির দোকানে ফরমায়েশ দিয়ে বানানো যাবে চাহিদামতো জুতার তাক।
বিপাশা রায়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ২৭, ২০০৯
Leave a Reply