মেলামাইনযুক্ত কি না তা পরীক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানো আট ব্র্যান্ডের গুঁড়োদুধের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সেগুলো প্রদর্শন ও বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিদেশ থেকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত প্রদর্শন ও বাজারজাতকরণের ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি এসব গুঁড়োদুধ বিক্রি বন্ধে এর আগে সরকার কেন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। পাশাপাশি সরকারের এ নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আদালত চার মাসের মধ্যে এ রুলের জবাব জানাতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।
ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় পাওয়া মেলামাইন-যুক্ত এ আট ব্র্যান্ডের গুঁড়োদুধ হলো রেডকাউ, ডিপ্লোমা, ডানো, ল্যাসি-১, ল্যাসি-২, সুইট বেবি, নিডো ও অ্যানলেনি।
গতকাল সকালে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট সারওয়ার আহাদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম, ফরহাদ আহমেদ, তপন কান্তি দাস, মামুন আলিম, একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া ও স্বপন কুমার দাস হাইকোর্টে রিট মামলাটি করেন। রিটে বিবাদী করা হয় স্বরাষ্ট্র সচিব, অর্থ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, এনবিআরের চেয়ারম্যান, বিএসটিআইয়ের চেয়ারম্যান ও আইজিপিকে।
মামলার রিট পরিচালনাকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ শুনানিতে বলেন, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ওই আটটি ব্র্যান্ডের গুঁড়োদুধে মেলামাইনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য ভয়াবহ হুমকি স্বরূপ। এ ধরনের দুধ পান করে চীনে অনেক শিশু মৃত্যুবরণ করেছে। তিনি আরো বলেন, দেশের শিশুদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার মেলামাইনযুক্ত দুধ বিক্রি বন্ধ করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই এখনই এ পণ্যগুলোর বিক্রি বন্ধ করতে না পারলে আমাদের শিশুদের জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।
সূত্রঃ যায়যায়দিন, অক্টোবর ২৪, ২০০৮
Leave a Reply