হাইলাইটস
- করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গোটা দেশ উথালপাতাল। টীকাকরণ চলছে।
- কিন্তু পাল্লা দিয়ে রোগও বাড়ছে। আর ওষুধের পরিবর্তে এখনও ডাক্তাররা কিন্তু পথ্যির উপরই বেশি জোর দিচ্ছেন।
- মানে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকেই নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
একে রোগ নিয়ে চিন্তা, তায় আবার প্রাণ সংশয়ের ভয়। আর তার উপর রয়েছে অফিস এবং বাড়ির কাজ। ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ঠ্যালায় ক্লান্তি যেন আরও বেড়ে গেছে। শরীরোর এনার্জি লেভেল উষ্ণতার পারদের বিপরীদ দিকে পাল্লা দিচ্ছে। মানে গরম যত বাড়ছে এনার্জি লেভেল তত কমছে। ওদিকে জিম, রোগের ভয়ে যোগাসনেও খানিকটা ভাঁটা পড়েছে। তাহলে বরং এক কাজ করুন। নিজের ডায়েট চার্টটাকে একটু মজবুত করে ফেলুন। যে সব খাবার খেলে এনার্জি লেভেল বাড়ে সেসব খাবারকেই পাতে জায়গা দিন। এতে ভিটামিন ওষুধের খরচও কমবে।
কলা-কার
রোজ একটা করে কলা খান। কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম, ভিটামিন B6-এর অঢেল ভাণ্ডার এই কলা। খাদ্য বিশারদদের মতে, শরীরের শক্তিবৃদ্ধিতে বেজায় সাহায্য করে এই সস্তার ফলটি।
মাছে-ভাতে
বাঙালির মাছ ভাত ছাড়া চলবে না। চালাতেও হবে না। রোজ মাছ-ভাত খান না। কিন্তু সাদা ভাতের বদলে পাতে রাখুন পুষ্টিকর খয়েরি ভাত। মানে ব্রাউন রাইস। সাদা ভাতের তুলনায় এতে আছে অনেক বেশি ফাইবার, ভিটামিন, প্রোটিন এবং খনিজ পদার্থ। ব্রাউন রাইসে থাকা ম্যাঙ্গানিজ শরীরের কার্বোহাইড্রেটের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং শরিরের শক্তি বৃদ্ধি করে। ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য ব্রাউন রাইস উপকারী। ভাতের সঙ্গে মাছও খান নিয়ম করে। শরীরের কোলেস্টরল বা ওবেসিটির সমস্যা না থাকলে চেষ্টা করুন তেলযুক্ত মাছ খেতে। রুই, কাতলা, মাগুর, টুনা মাছ খান। চর্বিযুক্ত মাছ প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনের আধার। সঙ্গে প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিডামিন B12 শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে।
মিষ্টি আলু
আলু ছাড়া বাঙালির রান্না সম্পূর্ণ হয় না। কিন্তু সত্যি বলতে কি অতিরিক্ত আলু খাওয়াটা শরীরের পক্ষে ভালো নয়। আলু খান। তবে সেটা যেন হয় মিষ্টি আলু। শুনতে অবাক লাগলেও মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ সাধারণ আলুর থেকে অনেক বেশি। একশো গ্রাম মিষ্টি আলুতে থাকে ২৫ গ্রাম কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট, ২৫ গ্রাম ম্যাঙ্গানিজ, এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ। এই আলু হজম হয় খুব ধীরে ধীরে। ফলে শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়াতে এর ভূমিকা অসাধারণ। তাছাড়া মিষ্টি আলু খুব সুস্বাদু। রান্নার স্বাদ বদলে এটি দারুণ কাজ দেয়।
কাপে কফি দে
শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়াতে কফির জুড়ি মেলা ভার। এক কাপ কফি শরীর এবং মন দুটিকেই চাঙ্গা করে দেয়। কফিতে থাকা ক্যাফিন রক্তে সহজে মিশে গিয়ে মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকে চাঙ্গা করে। ফলে কাজে এনার্জি আসে। তবে সেই কফি অবশ্যই হতে হবে দুধ, চিনি ছাড়া। তবে দিনে চার কাপের বেশি কফি কিন্তু মোটেও খাওয়া চলবে না। তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
ডিম ভালোবেসে দিন
রান্না হোক বা খাবার খাওয়া হাতে কোনোটির জন্যই বেশি সময় নেই। তাহলে ঝট পট ডিম সিদ্ধ খেয়ে ফেলুন। পেটও ভরা থাকবে, রান্নার সময় বাঁচবে আর সঙ্গে শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়িয়ে দেবে। রোজ একটা করে ডিম খেলে শরীরের রক্তচাপের মাত্রার স্বাভাবিক থাকে। ডিমের মধ্যে থাকা লুসিন অ্যামিনো অ্যাসিড রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ডিভে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি। আর এই ভিটামিন শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়াতে সাহায্য় করে।
আপেল খেলেই পাপ দূর
শরীরের যাবতীয় পাপ মানে অসুখ দূর করতে চাইলে রোজ একটা করে আপেল খান। ডাক্তারের খরচ বাঁচবে। একটা মাঝারি সাইজের আপেলে প্রায 14 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, 10 গ্রাম প্রাকৃতিক শর্করা, 2.1 গ্রাম ফাইবার থাকে। আর এই কারণেই আপেলের পুষ্টিগুণ অতুলনীয়। আপেলে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পদার্থ, ফলে এটি হজম হতে সময় নয়। শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়াতেও এর ভূমিকা অসাধারণ। ত্বকের সৌন্দর্যের পক্ষেও এই ফলটির জুড়ি মেলা ভার।
জলই জীবন
শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়াতে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটি হল জল। এর কোনও বিকল্প হয় না। তবে শুধু এনার্জি লেভেলই নয়, যে কোনও রোগের মুক্তির উপায় হিসেবে জলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সারাদিনে প্রচুর পরিমাণে জল খান। শরীর যত জলীয় থাকবে এনার্জিও তত বেশি হবে। নিয়মিত এবং পরিমাণ মতো জল শরীরের কঠিন রোগও সারিয়ে দিতে পারে।
ডার্ক চকোলেট
শুনলে খুশি হবেন যে এনার্জি বাড়াতে চকোলেটের ভূমিকা অসাধারণ। তবে সেটি হতে হবে ডার্ক চকোলেট। এর কোকোয়ায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচলাচলে সাহায্য করে। মস্তিষ্ট, মাংসপেশীকে সক্রিয় করে তুলতে এর জুড়ি মেলা ভার। এক টুকরো চকোলেট মনও ভালো করে দেয়।
দানে দানে পে লিখা হ্যায়
খাবারের তালিকায় রাখুন দানাসশ্য। ওটস্, বিনস্, শিয়া সিড, ফ্লেক্স, বিভিন্ন ধরনের বাদাম শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়াতে দারুণ ভূমিকা নেয়।
সবুজে সবুজ
সবুজ চা খান। মানে গ্রিন টি। এনার্জি লেভেল বাড়াতে এটি ওস্তাদ। রোজকার পাতে রাখুন প্রতুর পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি। আশা করি এর পুষ্টিগুণ ছোটোবেলা থেকেই মায়ের কাছ থেকে শুনে আসছেন। শরীরের এনার্জি লেভেল হোক বা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা জলের মতোই সবুজ শাক-সবজির কোনও তুলনা হয় না।
পাতে দই
শরীরকে সুস্থ নিরোগ এবং এনার্জিতে পরিপূর্ণ রাখতে রোজ পাতে রাখুন হই। তবে চিনি দেওয়া সুস্বাদু মিষ্টি দই নয়। রোজ খেতে হবে টক দই। তাও নুন-চিনি ছাড়া। প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি খেতে হবে রোজ। নিজের শরীরকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব আপনার নিজেরই। শরীরের এনার্জি লেভেল কমে গেলে কাজে উৎসাহও কমে যাবে। আর তার ফল ভুগতে হবে নিজেকেই। তাই খাদ্যতালিকাকে পুষ্টিগুণে ভরিয়ে তুলুন। ভালো থাকন। সুস্থ থাকুন।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-30 14:34:42
Source link
Leave a Reply