হাইলাইটস
- করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল ভারতবাসী। অক্সিজেনের অভাবে হাঁসফাঁস করছে হাজার হাজার করোনা আক্রান্তদের জীবন।
- এমন পরিস্থিতিতে নানান রাজ্যে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে অক্সিজেনের।
- বাড়িতে থেকেই নিজেকে সাড়িয়ে তোলার চেষ্টায় রয়েছেন একাধিক রোগী।
হোম আইসোলেশনে থাকা কোভিড রোগীদের SPo2 (অক্সিজেন)-র পরিমাণে তারতম্য দেখা দিলে বর্তমানে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য প্রোনিংয়ের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। শ্বাসযন্ত্রের নানান সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করে সুষ্ঠু ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে এটির সাফল্য প্রকাশ্যে এসেছে। সম্প্রতি গোরক্ষপুরের ৮২ বছরের কোভিড আক্রান্ত মহিলা শুধু যে করোনা ভাইরাসকে হারিয়েছেন, তা-ই নয়, বরং প্রোনিংয়ের মাধ্যমে নিজের অক্সিজেনের স্তরকে ৭৫ (এই পরিমাণকে অত্যন্ত কম এবং চিন্তাজনক মনে করা হয়) থেকে বাড়িয়ে ৯৪-এ নিয়ে যেতে পেরেছেন।
তবে প্রোন পজিশন বলতে ঠিক কী বোঝায়? কেনই বা অক্সিজেন স্তর বৃদ্ধির জন্য একে উপযুক্ত পন্থা বলে মনে করা হচ্ছে? অনেকের মাথাতে এই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে যে, কোভিড পজিটিভ হলে এবং অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা গেলে কী এই পন্থা অবলম্বন করা উচিত?
সেল্ফ প্রোনিং বা প্রোন পজিশন বলতে ঠিক কী বোঝায়?
৯৪ শতাংশের নীচে অক্সিজেন লেভেল থাকলে, তা চিন্তার বিষয়। আবার করোনা আক্রান্ত হলে এবং অস্থিতিশীল অক্সিজেন স্তর থাকলে এক্সটার্নাল অক্সিজেন সাপোর্ট ও থেরাপির প্রয়োজন। প্রোন পজিশনে ঘুমালে অক্সিজেনের স্তর স্থিতিশীল করা যায়, পাশাপাশি এই প্রাণবায়ুর পরিমাণও বাড়ানো যায়।
অক্সিজেনাইজেশন বুস্ট করার জন্য এই সেল্ফ থেরাপিকে চিকিৎসকরা অনুমোদন করছেন। হোম আইসোলেশনে থাকা কোভিড রোগীদের অক্সিজেন স্তর বৃদ্ধির জন্য সেল্ফ-প্রোন পজিশনে শুয়ে থাকাকে অভ্যাসে পরিণত করতে বলছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ, এমনকি স্বাস্থ্যমন্ত্রকও।
যে সমস্ত কোভিড আক্রান্ত রোগীরা শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য সেল্ফ-প্রোনিং বা প্রোনাল ব্রিদিংকে বিশেষজ্ঞরা অত্যন্ত কার্যকরী মনে করছেন। এর ফলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায়, পাশাপাশি অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেলও স্থির রাখা যায়। দিনে তিনবার প্রোনাল ব্রিদিং করা যেতে পারে। যদি সমীক্ষার দিকে দৃষ্টিপাত করা হয়, তা হলে ৩০ মিনিটের সেল্ফ প্রোনিংয়ের মাধ্যমে অক্সিজেন স্তরকে ৮৮ থেকে বাড়িয়ে ৯৪ বা তার বেশি করা যেতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, যে রোগীরা শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা পিঠের ওপর ভর করে শোয়ার পরিবর্তে পেটের ওপর ভর করে শুলে উপকার পেতে পারেন।
আবার কারও কারও মতে, বাড়িতে এমন করলে এই রোগের ভয়াবহতা কমানো যেতে পারে। কারণ প্রোনিংয়ের ফলে ব্যক্তির ভেন্টিলেশন ও ফুসফুসের কার্যপ্রণালী উন্নত হয়। এমনকি পরবর্তীকালে যাঁদের হাসপাতলে বা আইসিইউ-তে ভরতির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে, তাঁরা এই ভাবে ঘুমালেও উপকার পেতে পারেন।
প্রোনিং কাদের প্রয়োজন? কেনই বা করবেন?
হোম আইসোলেশনে থাকা সমস্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর যে প্রোনিংয়ের প্রয়োজন পড়বে তা কিন্তু নয়। পরিবর্তে, যাঁদের অক্সিজেনের পরিমাণে ঘাটতি বা মেডিক্যাল হেল্পের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিচ্ছে, তাঁরা পেটের ওপর ভর করে শুয়ে পড়লে উপকার পেতে পারেন।
অক্সিজেন লেভেল ৯৪-এর নীচে নামতে শুরু করলে, সারাদিন ধরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে থাকলে এবং এমন পরিস্থিতিতে যদি বহিরাগত অক্সিজেন সার্পোট না-পাওয়া যায়, তখন এটি করে দেখতে পারেন।
প্রোন পজিশনে ঘুমানোর জন্য একাধিক বালিশের প্রয়োজন। এর পর প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর অন্তর পজিশন পরিবর্তন করতে হবে।
কী ভাবে করবেন প্রোনাল ব্রিদিং
প্রোনাল ব্রিদিংয়ের জন্য ৫টি বালিশের প্রয়োজন। এবার পেটের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। একটি বালিশ রাখুন গলা ও দুটি রাখুন বুকের নীচে। এর পর দুটি বালিশ পা (shins)-এর তলায় রাখুন।
প্রথমে পেটের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকুন।
তার পর ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমান।
এর পর উঠে বসুন। পা সোজা করে বসবেন।
বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমান।
তার পর ফের পেটের ওপর ভর দিয়ে ঘুমিয়ে থাকুন।
৩০ মিনিটের বেশি কোনও একটি পজিশনে ঘুমিয়ে থাকবেন না। প্রয়োজনীয়তা ও আরামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বালিশ অ্যাডজাস্ট করবেন।
কখন সতর্ক হতে হবে
এমারজেন্সিতে বা বাড়িতে থাকলে মেডিক্যাল হেল্প পেতে দেরি হলে অক্সিজেন স্তর বৃদ্ধির জন্য এই পজিশনে ঘুমাতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, এর ফলে সাময়িক স্বস্তি পাবেন মাত্র। এটি কোনও ভাবেই হাসপাতালে ভরতি হওয়া বা বহিরাগত অক্সিজেন সাপোর্টের বিকল্প হতে পারে না।
গর্ভবতী মহিলা, থ্রম্বোসিস, অস্থির স্পাইন, কার্ডিয়াক কমপ্লিকেশন বা ওবেসিটি থাকলে চিকিৎসকদের পরামর্শ ছাড়া প্রোনিং করবেন না।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-04-30 15:03:39
Source link
Leave a Reply