হাইলাইটস
- বিয়ের দুই-তিন বছরের মাথায় প্ল্যানটা কম বেশি সকলেই করে থাকেন।
- বাড়িতে তিন নম্বর মানুষটা এলে সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
- ভালোবাসার বন্ধু আরও দৃঢ় হবে
বিয়ের দুই-তিন বছরের মাথায় প্ল্যানটা কম বেশি সকলেই করে থাকেন। বাড়িতে তিন নম্বর মানুষটা এলে সম্পর্ক আরও গভীর হবে। ভালোবাসার বন্ধু আরও দৃঢ় হবে। এরকম স্বপ্ন দম্পতিরা করেই থাকেন। আর এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় স্বপ্নের মতো দিনগুলো এগোচ্ছে না। বরং সত্যি কথা বলতে কি সন্তান হওয়ার পর অনেক সময়ই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে খানিকটা দূরত্ব তৈরি হযে যায়।
কিন্তু কেন? দূরত্ব কমানোর জন্যেই তো সন্তানকে পৃথিবীতে আনার সিদ্ধান্ত নেন সকলে। তাহলে?
মনোবিদ এবং বিশেষজ্ঞদের মতে সন্তান হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে সামান্য দূরত্ব তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। কারণ জন্মের অন্তত পক্ষে ছয় সপ্তাহ অসহায় ছোট্টো মানুষটিকে সময় দেওয়াটাই মা-বাবার প্রাথমিক কর্তব্য। তখন সদ্যোজাত ছাড়া জীবনে অন্য কিছু ভাবাই স্বার্থপরতা। একবার ভেবে দেখুন আপনার মা বাবা যদি এরকম স্বার্থপর হতেন তাহলে আপনার কী হত?
সন্তান হওয়ার পর অনেক সময়ই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া অশান্তি বেড়ে গেছে। এটাও অনেকটা স্বাভাবিক সমস্যা। তবে এর সমাধানও করা সম্ভব। এক্ষেত্রে স্বামীকে কিছুটা সহনশীল হতেই হবে। স্ত্রীকেও সমস্যা বুঝতে হবে। আসলে সন্তান হওয়ার পর মায়েদের মনে একধরনের অবসাদ সৃষ্টি হয়। শরীরে হরমোনের মাত্রা ওঠা নামা করে। সন্তানকে দেখাশোনা করতে গিয়ে রাতের ঘুম উড়ে যায়। খাওয়ার সময় মেলে না। ফলে সদ্য ধকল যাওয়া শরীর আরও নিস্তেজ হতে শুরু করে। কিন্তু বিশ্রাম নেওয়ার জো নেই। ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ছোটো খাটো বিষয় নিয়ে সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে স্বামী নামক প্রাণীটির উপর। পরিণতবুদ্ধির পুরুষ সমস্যা বুঝতে পারেন। কিন্তু অপরিণত বা অবুঝ পুরুষ মহিলাদের সমস্যা বুঝতে চান না। যার ফলাফল সংসারিক অশান্তি।
আবার অনেক ক্ষেত্রে সন্তানকে মা একটাই স্নেহ দিতে শুরু করেন যে নিজের জীবনসঙ্গীকে অবহেলা করতে থাকেন। এবং এর ফলে জীবনসঙ্গীর মনে জমতে থাকে অভিমান। আর এর ফলেও ঝগড়া হওয়া স্বাভাবিক।
সমস্যাগুলো আমরা কমবেশি অনেকেই জানি। তাহলে একটু সমাধানের চেষ্টা করলে কেমন হয়। আর মনে রাখবেন সমস্যা সমাধানে স্ত্রীকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারেন তাঁর স্বামীই।
অল্প অল্প গল্প
আগে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বসে গল্প করতেন, রোম্যান্টিক কথা বলতেন। সন্তান হওয়ার পর কাঁথা, পাউডার, ওষুধ, ডায়পার ছাড়া বিশেষ কোনও আলোচনা হয় না। একজন ঘুমোলে আরেকজন জেগে থাকেন। স্নান, খাওয়া সব কিছু আলাদা আলাদাভাবে করতে হয়। মনোবিদরা বলছেন সন্তান জন্মের প্রথম ছয় সপ্তাহ এটা হবেই। তারপর দেখবেন নিজেরাই অ্যাডজাস্ট করে নিয়েছেন। আস্তে আস্তে নিজেদের মধ্যে ফের কথা বলা শুরু করুন। সন্তানকে জন্মের থেকে খোলামেলাভাবে মানুষ করার চেষ্টা করুন।
আগের জীবনকে মিস করা
আগে ইচ্ছে হলেই বাইরে খেতে যাওয়া বা ঘুরতে যাওয়া হত। ছোট্টো অতিথির জন্য সেটা বন্ধ হয়েছে। তাতে কী হল, বাড়িতে খাবার এনে একসঙ্গে ডিনার করুন। বারান্দায় একসঙ্গে বসে গল্প করুন। ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলুন। একসঙ্গে সিনেমা দেখুন। অনলাইনে কেনাকাটা করুন। সন্তানের সমস্ত দায়িত্ব দুজনে ভাগ করে নিন। আরে এটাও তো এক নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা। সেটা উপভোগ করুন।
বাবাকে ভুলবেন না
নিজের সমস্ত স্নেহ সন্তানকে না দিয়ে খানিকটা স্বামীর জন্য তুলে রাখুন। মনে রাখবেন পুরুষের বয়স যতই বাড়ুক না কেন তাঁরা স্নেহ পেতে সবসময়ই কাতর থাকেন। তাই বাবাকেও একটু অ্যাটেনশন দিন। দেখবেন আপনার অ্যাটেনশন পেয়ে বাবা নিজেই সন্তানের একগাদা দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবেন। আপনিও একটু আরাম পাবেন।
সহবাসে অনীহা
সদ্য সন্তান হওয়ার পর মহিলাদের যৌনসঙ্গমে অনীহা থাকাটা স্বাভাবিক। এই সময় সন্তানকে স্তন্যপান করাতে হয়। ফলে ভ্যাজাইনাল লুব্রিকেশন হয় না বললেই চলে। এটা স্বামীকে বুঝতে হবে। স্ত্রী সুস্থ থাকলে তবেই সন্তান এবং তিনি নিজেও সুস্থ থাকবেন। সংসারে সুখ থাকবে। তাই সদ্য মা হওয়ার পর স্ত্রীকে যৌনতার জন্য জোর করা অনুচিত।
দায়িত্ব ভাগ
মহিলারা অনেক সময় সন্তানের দায়িত্ব একাই পালন করতে চান। আবার পুরুষদের মধ্যে সন্তান পালনের দায়িত্বে অনীহাও দেখা যায়। ভারতীয় সমাজে এটা যুগের পর যুগ চলে আসছে। যদিও সময় কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আজকালকার বাবারাও সন্তান পালনে সমান ভূমিকা নিতে চান। তাঁদের সেই ইচ্ছেকে সম্মান করুন। বাবাকেও দায়িত্ব পালন করতে দিন। সেই সময়টা নিজে একটু বিশ্রাম নিন।
সন্তান হয়েছে মানেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাবে লোকের মুখে এসব কথা শুনে নিজেদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবেন না। যে নতুন মানুষটি আপনাদের জীবনে এসেছে তাকে সুস্থ এবং সুন্দর পরিবেশ উপহার দিন। ছোটো থেকেই যদিও বাব-মা-কে সে ঝগড়া করতে দেখে তাহলে তার শৈশব শুরুতেই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই পরিবেশকে সন্তানের বাসযোগ্য করে তুলুন। অঙ্গীকারবদ্ধ হন আগামীর কাছে।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-28 19:14:09
Source link
Leave a Reply