হাইলাইটস
- খাবার অপচয়ের ফলে শুধু টাকাই যে নষ্ট হচ্ছে তা নয়।
- এর প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপরও।
- কারণ নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার-দাবার জমিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
- যেখানে এটি পচে গিয়ে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মতো উন্নত দেশ উন্নয়নশীল দেশগুলির তুলনায় অধিক খাদ্য অপচয় করে। ২০১০ সালে গড় মার্কিনিরা ৯৯ কেজি খাদ্য অপচয় করেছিল। এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশান এজেন্সি (EPA)-র তরফে।
তাই আপনি যদি ভেবে থাকেন, খাবার অপচয় হলে এতে আপনার চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই, তা হলে এখনই নিজের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করুন। ভাবার সময় এটি।
খাবার অপচয়ের ফলে শুধু টাকাই যে নষ্ট হচ্ছে তা নয়। এর প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপরও। কারণ নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার-দাবার জমিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে এটি পচে গিয়ে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করছে। এটি দ্বিতীয় সবচেয়ে সাধারণ গ্রিনহাউস গ্যাস। অন্য ভাবে বললে, খাবার অপচয়ের মাধ্যমে আবহাওয়া পরিবর্তনেও ভূমিকা থেকে যাচ্ছে আপনার।
শুধু তাই নয়, এর ফলে প্রচুর পরিমাণে জলও নষ্ট হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইনস্টিটিউটের মতে, কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত ২৪ শতাংশ জল প্রতিবছর খাদ্য অপচয়ের মাধ্যমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৪৫ ট্রিলিয়ন গ্যালন (প্রায় ১৭০ ট্রিলিয়ন লিটার) জল নষ্ট হয় এ ভাবে।
তবে কিছু সাধারণ পদক্ষেপ করলে আমরা প্রত্যেকেই খাদ্য অপচয় হওয়া থেকে বাঁচাতে পারি।
ভেবেচিন্তে কেনাকাটা করুন
অনেকেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাদ্য সামগ্রী কিনে থাকেন। একসঙ্গে অনেকগুলি খাবার কেনার ফলে সাশ্রয় হয় ঠিকই। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এই পদ্ধতিতে কেনাকাটা করলে খাদ্য অপচয় হয় বেশি।
এই প্রবণতা কমানোর জন্য সপ্তাহে একবার বাজারে গিয়ে বেশি খাবার কেনার পরিবর্তে ২-৩ দিন অন্তর খাদ্য সামগ্রী কেনার অভ্যেস করুন। মুদি দোকানে গিয়ে জিনিস কেনার আগে দেখে নিন, অতীতে কিনে রাখা জিনিস শেষ হয়েছে কি না। প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর একটি তালিকা বানিয়ে নিন এবং কোনও মতেই এর থেকে বিচ্যুতি ঘটতে দেবেন না।
সঠিক পদ্ধতিতে খাবার স্টোর করুন
ভুল পদ্ধতিতে স্টোর করে রাখার ফলেও প্রচুর পরিমাণে খাবার নষ্ট হয়ে যায়। ন্যাচরাল রিসোর্স ডিফেন্স কাউন্সিলের মতে, ইউনাইটেড কিংডমের দুই তৃতীয়াংশ পরিবার পচে যাওয়া খাবার ফেলে দেয়। অনেকেই ফল ও সবজি স্টোর করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। যার ফলে অনেক ফল-সবজিই সময়ের আগে পেকে গিয়ে পচতে শুরু করে।
আলু, টমেটো, রসুন, শশা এবং পেঁয়াজকে কখনও ফ্রিজে রাখতে নেই। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এই সমস্ত ফল-সবজি রাখা উচিত। ইথাইলিনের কারণে খাবার তাড়াতাড়ি পেকে গিয়ে পচতে শুরু করে। কলা, আভাকাডো, টমেটো, ক্যান্টালোপ, পিচ, নাশপাতি, পেঁয়াজকলি ইথাইলিন গ্যাস উৎপন্ন করে পাকতে শুরু করে। তাই আলু, আপেল, শাকপাতা, বেরি ও নানান রঙের শিমলা লঙ্কার মতো ইথাইলিন সেনসিটিভ ফল-সবজি থেকে উপরোক্ত খাদ্য দ্রব্য দূরে রাখুন।
সংরক্ষণ করতে শিখুন
খাদ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ফার্মেন্টিং বা পিকলিং নতুন পন্থা মনে হলেও, আদতে তা কিন্তু নয়। হাজার হাজার বছর ধরে এই উপায় খাদ্য সংরক্ষণ করা হয়ে আসছে।
ভিনিগার বা ব্রাইন মিশিয়ে খাদ্য সংরক্ষণের প্রক্রিয়া প্রচলিত ছিল ২৪০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ থেকে। আচার বানিয়ে, খাবার শুকিয়ে, ক্যানিং, ফার্মেন্টিং, ফ্রিজিং এবং কিউরিং এই সমস্ত পদ্ধতিতে খাবার-দাবার দীর্ঘ দিন পর্যন্ত সংরক্ষিত রাখা যায়। এর ফলে খাবার অপচয় কমবে। শুধু তাই নয় কমবে আপনার অর্থ অপচয়ও। এগুলির মধ্যে অধিকাংশ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া সাধারণ এবং মজাদার। যেমন ক্যানিংয়ের মাধ্যমে পাকা আপেল দিয়ে অ্যাপেল সস বানিয়ে ফেলা যায়। আবার গাজরকে ভিনিগারে মিশিয়ে দীর্ঘ দিনের ব্যবহারের জন্য রেখে দিতে পারেন।
সব সময় পারফেকশানিস্ট হওয়ার চেষ্টা ছাড়ুন
সবচেয়ে সুন্দর ও নিটোল দেখতে ফল-সবজি কেনার হিড়িক আদতে খাদ্য অপচয়ের পথই প্রশস্ত করে। অনেকেই নিঁখুত ও সবচেয়ে ভালো দেখতে ফল ও সবজি কিনতে চান। এর ফলে সাধারণ খুঁত বিশিষ্ট, ট্যারাব্যাঁকা আকৃতির ফল-সবজিটি বাতিলের খাতায় চলে যায়। অবশেষে পচে গিয়ে ফেলে দিতে হয় এগুলিকে। অপচয় রোধ করার জন্য সামান্য খুঁত বিশিষ্ট ফল-সবজি ডিসকাউন্টে বিক্রি করার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। তাই যখনই বাজারে যাবেন, এই বিষয়টিও লক্ষ্য রাখুন।
ফ্রিজ রাখুন ক্লাটার ফ্রি
আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড— এই বাক্যটির সঙ্গে বর্তমানে সকলেই পরিচিত। খাবার-দাবারের ক্ষেত্রেও এই বাক্যটি প্রযোজ্য। খাবার-দাবারে পরিপূর্ণ ফ্রিজ ভালো হলেও, ফ্রিজে ঠাঁসাঠাঁসি করে খাদ্য দ্রব্য রাখার প্রবণতা ত্যাগ করুন। কারণ এর ফলে অপচয়ের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। ফ্রিজে ঠিক-ঠাক ভাবে খাবার দাবার সাজিয়ে রাখুন, এমন ভাবে রাখবেন, যেন সব খাবারই চোখের সামনে থাকে। FIFO পদ্ধতি এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো। অর্থাৎ ফার্স্ট ইন ফার্স্ট আউট। বাড়িতে আগে থেকে আপেল বা কোনও সবজি থাকা সত্ত্বেও, সেই ফল-সবজিই যদি ফের কিনে আনেন, তা হলে নতুন বাক্সটিকে পুরনো বাক্সের পিছনে রাখুন। এর ফলে পুরনো ফল আগে ব্যবহার করার কথা মনে থাকবে। কমবে অপচয়।
বেঁচে যাওয়া খাবার রাখুন সঠিক ভাবে
বেঁচে যাওয়া খাবার ফ্রিজে রেখে দিয়েই ভুলে যান অনেকে। ফলে সেগুলিও এক সময় নষ্ট হয়ে যায়। স্টিলের কন্টেনারের পরিবর্তে গ্লাস কন্টেনারে বেঁচে যাওয়া খাবার রাখলে সেগুলি চোখের সামনে থাকবে এবং তা আগে শেষ করার কথাও মনে থাকবে। এর ফলে খাবার অপচয় তো হবেই না, বরং আপনার সময় ও অর্থও বাঁচবে।
খোসাও খান
সবজি ও ফলের খোসা ছাড়িয়ে সাধারণত রান্না করা হয়ে থাকে। খোসাতেই সর্বাধিক পরিমাণে পুষ্টিকর উপাদান থাকে। আপেলের খোসা, মুরগির মাংসের স্কিন— এ সবই একাধিক পুষ্টিকর উপাদানে সমৃদ্ধ। শুধু তাই নয় আলু, গাজর, শশা, আম কিউয়ি, বেগুনের খোসাও খাওয়া যেতে পারে। এর ফলেও খাবার অপচয়ের প্রবণতা কমবে।
ডিমের কুসুম খান
কম কোলেস্টেপল যুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য অনেকেই ডিমের কুসুম ফেলে দেন। তবে সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, কোলেস্টেরল স্তরের ওপর ডায়েটারি কোলেস্টেরলের প্রভাব থাকে খুব কম। লিভারই প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল উৎপন্ন করে থাকে। অধিক কোলেস্টেরল সম্পন্ন খাবার খাওয়ার ফলে কম পরিমাণে কোলেস্টেরল উৎপন্ন করে ভারসাম্য বজায় রাখে লিভার। সর্বোপরি কুসুম নানান পুষ্টিকর উপাদানে সমৃদ্ধ। সমীক্ষায় প্রমাণিত, কারও উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলেও তাঁরা নির্দ্বিধায় কুসুম খেতে পারেন। তবে সরাসরি কুসুম খেতে না-চাইলে, সেটিকে অন্য কোনও খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন।
বীজ বাঁচান
অনেকেই কমুড়োর বীজ ফেলে দেন। কিন্তু আপনাদের কী জানা আছে, কুমড়োর বীজ ম্যাগনেশিয়াম, মিনারেলে সমৃদ্ধ। যা রক্ত ও হৃদয় সুস্থ রাখে এবং উচ্চরক্তচাপ ও রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই কুমড়ো কাটার পর তার বীজ ফেলে না-দিয়ে শুকিয়ে নিন। এর পর সামান্য অলিভ অয়েল ও নুন দিয়ে তা সেঁকে নিন। অ্যাকর্ন ও বাটারনাট স্কোয়াশের বীজও এ ভাবে খাওয়া যেতে পারে।
স্মুদি বানিয়ে পান করুন
ছোট পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এক সঙ্গে অনেকগুলি সবজি বানানোর কারণে ছোট ছোট সবজি বা ফলের টুকড়ো ফ্রিজে রাখা থাকে। সেগুলি পরবর্তীকালে কোনও কাজে লাগে না এবং ফেলে দিতে হয়। তাই কোনও কারণে, গাজর, বিট, কেল, বা অন্য কোনও ফলের টুকড়ো আবার অধিক পাকা কলা বেঁচে গেলে সেটি ফেলে না-দিয়ে স্মুদি বানিয়ে নিন।
জলের স্বাদ বাড়ান
অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করেন না। জলের স্বাদ পছন্দ না-হওয়া এর অন্যতম কারণ। কিন্তু নিজের পানীয় জলকে করে তুলতে পারেন সুস্বাদু। আপেল, কোনও সিট্রাস ফল অথবা শশার খোসাকে জলে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। স্বাভাবিক ভাবেই এগুলির স্বাদ এতে থেকে যাবে।
প্রয়োজন মতো খান
অনেকেই ওভারইটিং করে থাকেন। তা ছাড়া এক সঙ্গে বেশি খাবার নিয়ে তা শেষ করতে গিয়ে ঘাম ছুটে যায় অনেকের। অধিকাংশ লোকেরাই আবার খাবার ফেলেই দেন। তাই অল্প অল্প করে খাবার নিন। এর ফলে ওভার ইটিংয়ের প্রবণতা কমবে এবং এঁটো খাবারও ফেলা যাবে কম।
নানান খাবার সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজারকে কাজে লাগান
খাবার দাবার ফ্রিজারে রাখা সংরক্ষণের অন্যতম উপায়। নরম হয়ে যাওয়া হার্ব, ফল বা সবজি দিয়ে স্যালাড বানাতে কেউ পছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে এগুলিকে ফ্রিজার সেফ ব্যাগে ভরে রেখে দিন। পরে এই দিয়ে তৈরি করে ফেলতে পারেন স্মুদি বা অন্য কোনও পদ। আবার অত্যধিক পরিমাণে হার্ব থাকলে তাতে রসুন ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে আইস ট্রেতে রেখে ফ্রিজ করে দিন। কোনও সবজিতে দিয়ে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। বেঁচে যাওয়া স্যুপও এই পদ্ধতিতে আইস কিউব বানিয়ে সংরক্ষণ করা যায়।
এক্সপায়রেশন ডেট দেখুন
‘সেল বাই’ এবং ‘এক্সপায়র্স অন’— এই দুটি টার্ম সম্পর্কে অনেকেই কনফিউজ থাকেন। ‘সেল বাই’য়ের মাধ্যমে রিটেলারদের জানানো হয় কত দিনের মধ্যে ওই খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করতে বা শেল্ফ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। আবার ‘বেস্ট বাই’ লেখা থাকলে ক্রেতারা সেই তারিখের মধ্যেই তা শেষ করে ফেলবেন। তবে উল্লিখিত তারিখের পর সেই দ্রব্য যে ব্যবহার করা যাবে না, এমন কোনও নির্দেশ নেই। তবে ‘ইউস বাই’ লিখে কোনও তারিখ দেওয়া থাকলে, সেই খাবার তারিখের মধ্যেই শেষ করে ফেলবেন। কারণ তার পর এটি গ্রহণ করা নিরাপদ নয়।
সম্ভব হলে কম্পোজ করুন
বেঁচে যাওয়া খাবার দাবার বা ফল-সবজির খোসা কম্পোস করে তা সার হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন। বাগান বা কিচেন গার্ডেন থাকলে খাবার কম্পোস করে নিন। গাছপালার ফলনের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন।
কফির গুঁড়োও কাজে লাগান
অনেকেই কফি ছাড়া দিন শুরু করতে পারেন না। কফি বিন দিয়ে বাড়িতেই কফি বানানোর অভ্যাস থাকে অনেকের। সে ক্ষেত্রে কফি তৈরির পর কফি বিনের গুড়ো ফেলে না-দিয়ে, সেটিকে কাজে লাগান। এই গুঁড়ো উৎকৃষ্ট মানের সার হিসেবেও কাজ করতে পারে। এতে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম থাকে, যা গাছপালার বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কফির গুঁড়ো মশা তাড়ানোর কাজও করে। আবার কফির গুঁড়ো ছড়িয়ে রাখলে, স্ত্রী মশা ডিম পাড়তে পারে না।
ফল-সবজির খোসা দিয়ে করুন রূপচর্চা
কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্ট দিয়ে রূপচর্চা করার পরিবর্তে বাড়িতেই বিনামূল্যে সেগুলি বানিয়ে ফেলতে পারেন। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক বা স্ক্রাবে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যাবে না। অত্যধিক পেকে যাওয়া আভাকাডোর সঙ্গে মধু মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানাতে পারেন। আবার কফির গুঁড়োর মধ্যে চিনি ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে এটিকে বডি স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া আনারসের খোসা দিয়ে বানাতে পারেন স্ক্রাব। ব্যবহৃত টি ব্যাগ ফেলে না-দিয়ে তা ঠান্ডা করে এর সাহায্যে চোখের কালি মেটানোর চেষ্টা করতে পারেন। আবার শশা শুকোতে শুরু করলে, তা গোল গোল করে কেটে তা চোখের ওপর রেখে চোখ ঠান্ডা করতে পারেন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-24 17:15:08
Source link
Leave a Reply