আগে জ্বর, গা-ব্যথা, গন্ধ ও স্বাদ না পাওয়াই ছিল করোনার লক্ষণ। তবে বিভিন্ন গবেষণা বলছে, এবার লাল চোখ, কানে না শুনতে পাওয়ার মতো লক্ষণগুলি দেখা দিলেও করোনা আক্রান্ত হতে পারেন আপনি। এ বার আরও অনেক অচেনা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। যেগুলোর কিছুই গত বার ছিল না। যেমন কোভিড আক্রান্ত অনেকেই বলছেন, জিভে বেশ কিছু সমস্যা হচ্ছে। দিন কয়েক তেমন চলার পরে তা হয়তো একটু বাড়ল। ব্যস, ওইটুকুই। প্রথম দিকে তাঁদের কারও মনেই হচ্ছিল না করোনা পরীক্ষা যে করানো দরকার। পরে দেখা গেল এর কারণ এই সংক্রমণই। সকলেরই যে জ্বর আসছে, এমনটা আর নয়। ফলে সাবধান থাকতে হবে সর্বক্ষণ!
গবেষণা কী বলে?
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। এই সমীক্ষা অনুসারে, সংক্রমণের সময় প্রায় অর্ধেক রোগী মুখের লক্ষণে ভোগেন। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে এর মধ্যে অনেকগুলি লক্ষণই সংক্রমণের কারণ। মানুষ প্রথমে এগুলিকে হালকা সমস্যা হিসাবে ধরে নিয়ে ভুল করেন। এখানে আমরা আপনাকে এমন কয়েকটি লক্ষণ সম্পর্কে জানানো হবে, যেগুলি সম্পর্কে আপনি এখনও জানেন না। যদি এই লক্ষণগুলি উপস্থিত হয় তবে বুঝতে হবে করোনা পরীক্ষা করা জরুরি। এখন দেখে নিন মুখে কোন কোন উপসর্গ থাকলে করোনা হতে পারে-
দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস
দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস কখনও কখনও শুষ্ক মুখের সাধারণ চিহ্ন, যা কোনও ব্যক্তি সহজেই বুঝতে পারেন না। যদি কারোর মুখ শুকিয়ে আসছে বা কারও ক্ষেত্রে মুখের মধ্যে আঠাভাব হচ্ছে৷ এই অবস্থাতে খাবার চিবোতে বা কখনও কথা বলতেও সমস্যা হয়৷ জিভ জড়িয়ে আসে কোনও কোনও ক্ষেত্রে৷ সমীক্ষায় জানা গিয়েছে প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১জনের এই রকমের করোনা উপসর্গ রয়েছে, যা খুব বেশি স্বাভাবিক নয়৷
কোভিড টাং
সারস কোভিড -২ এর মতো ভাইরাসগুলি অবশ্যই জিহ্বাকে প্রভাবিত করতে পারে। সমীক্ষা অনুসারে, ভাইরাস সংক্রামিত হলে রোগীর জিভ জ্বালা করতে থাকে। কখনও কখনও ফোলা অনুভব করতে পারেন। প্রতি পাঁচজন কোভিড আক্রান্তের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে মোটা সাদা আস্তরণযুক্ত জিভ। সেই সঙ্গে মুখের ভেতরের নানা অস্বস্তি। কারও কারও ক্ষেত্রে সারা মুখ জুড়ে সাদা ফুসকুড়ির মত দাগ। সঙ্গে রয়েছে ইনফেকশনও। এমনকী, জিভে আলসারের ক্ষতও দেখা গিয়েছে কিছু মানুষের। এই উপসর্গকে কোভিড উপসর্গ হিসেবে এখনও তালিকাভুক্ত করেনি কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থাই। কিন্তু এ বার সেই সময় এসে গিয়েছে বলেই মনে করছেনগবেষকরা। তিনি এই নতুন উপসর্গকে বলা হচ্ছে কোভিড টাং। জিভের যদিও এই উপসর্গ খুব বেশি হলে সপ্তাহখানেকের মতো স্থায়ী হচ্ছে। তবুও এরকম সমস্যা দেখা দিলে অতি অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে কোভিড টেস্টের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মুখগহ্বর বারে বারে শুকিয়ে যাওয়া
মুখের ভিতর ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে? ঠোঁট শুকিয়ে গিয়ে ফী যাচ্ছে? গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে ঘন ঘন? তা হলে আপনার করোনা সংক্রামিত হওয়ার সম্ভচাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সময় নষ্ট না করে পরীক্ষা করিয়ে নিন। মুখের ভিতর যে লালাক্ষরণ হয়, তা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। করোনা সংক্রমণের ফলে সেই ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে।
ঠোঁটে ক্ষতের মতো ঘা
ঠোঁটে ক্ষতের মতো ঘা, হলে সাবধান হন। ভিটামিনের অভাবে নয়, হয়ে পারে আপনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কারণ, করোনা রোগীদের মধ্যে দ্বিতীয় ঢেউ আসার পরে এটি প্রায়শই লক্ষ করা যাচ্ছে। করোনার মিউটেন্টের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এই মারাত্মক ভাইরাস মুখের ভিতর মাসেল ফাইবার গুলোকে আঘাত করছে। যার ফলে মুখে ঘা তৈরি করছে।
জিভের রঙ বদল
করোনার নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত হলে আচমকাই বদলে যাচ্ছে জিভের রঙ। সাধারণত, শরীরে রোগ বাসা বাঁধলে জিভ তার রূপ বদলায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়। পাশাপাশি মুখের ভিতর সমস্যা অনুভুতি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখ এবং জিহ্বার যে কোনও পরিবর্তন কোভিড এর লক্ষণ হতে পারে। ভাইরাসগুলির পরিবর্তিত আচরণের জন্য লক্ষণগুলিও এড়ানো উচিত নয়। আপনি যদি আজকাল কিছু অস্বাভাবিক মনে করেন তবে দেরি করবেন না। সময়মতো চেক করতে ভুলবেন না।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-21 14:21:22
Source link
Leave a Reply