হাইলাইটস
- মশা কামড়ালে তারা মানুষের শরীর থেকে শুধু রক্তই শোষে না, বরং নিজের স্যালাইভাও ওই ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেয়।
- মশার স্যালাইভায় অ্যান্টিকোগিউলেন্ট উপাদান থাকে, যা রক্ত জমাট বাধতে দেয় না।
- ফলে মশা সহজেই রক্ত শুষতে পারে।
মশার কামড়ের ফলে ত্বক কেন চুলকোয়?
মশা কামড়ালে তারা মানুষের শরীর থেকে শুধু রক্তই শোষে না, বরং নিজের স্যালাইভাও ওই ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেয়। মশার স্যালাইভায় অ্যান্টিকোগিউলেন্ট উপাদান থাকে, যা রক্ত জমাট বাধতে দেয় না। ফলে মশা সহজেই রক্ত শুষতে পারে। এই স্যালাইভাগুলিতে কিছু বহিরাগত প্রোটিন থাকে, যা মানুষের শরীরের কাছে অজানা। এর ফলে এই বহিরাগত ও অজানা প্রোটিনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধক উপাদানগুলি হিস্টামিনের ক্ষরণ বাড়ায়। এই ক্ষরণের ফলে শ্বেত রক্ত কণিকা মশার কামড় যুক্ত অংশে পৌঁছে যায়। হিস্টামিনের কারণেই প্রভাবিত স্থানে চুলকানি হয়।
প্রথমবার মশার কামড় খেলে অনেক ব্যক্তিরই ত্বক ফুলে যায় না বা চুলকানিও হয় না। মশার স্যালাইভায় উপস্থিত উপাদানের সঙ্গে কী ভাবে লড়তে হবে, সে বিষয় শরীর কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারে না বলে এমন হয়। আবার বার বার মশার কামড় খাওয়ার পর অনেকেরই তা সহ্য হয়ে যায় ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
মশার কামড়ের স্থানে একবার চুলকালে, জ্বালা ভাব আরও বেড়ে যায়। তাই মশা কামড়ালে চুলকানোর পরিবর্তে, তা ঠিক করে তোলার দিকে নজর দিন। ঘরোয়া উপায় সহজে তা সাড়িয়ে তোলা যায়।
মধু লাগান
মশার কামড়ের ওপর মধু লাগান। এর ফলে ফোলাভাব কমবে এবং চুলকানিও দূর হবে। মধুর মধ্যে অ্যান্টিসেপ্টিক ও অ্যান্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান থাকে, যা বিভিন্ন ধরণের ঘা সারিয়ে তুলতে পারে। মশার কামড় সাড়িয়ে তুলতে মধু অত্যন্ত উপযোগী। কিন্তু বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় প্রভাবিত স্থানে মধু লাগাবেন না। কারণ মিষ্টি হওয়ার কারণে মধু মশাদের আকৃষ্ট করতে পারে।
অ্যালোভেরা লাগান
চুলকানি কমাতে অ্যালোভেরা জেলও লাগাতে পারেন। বাজার থেকে কেনা বা বাড়িতেই অ্যালোভেরা গাছ থেকে জেল বার করে লাগানো যেতে পারে। অ্যালোভেরা জেল ঠান্ডা হয়, যার ফলে মশা কামড়ানোর কারণে সৃষ্ট ফোলা ভাব ও চুলকানি কম করে।
তুলসী পাতা লাগান
তুলসীতে উপস্থিত নানান উপাদানের কারণে ত্বকের চুলকানি কমতে পারে। প্রত্যেক বাড়িতেই তুলসী চারা থাকে। গাছ থেকে ভেঙে নিয়ে তুলসী পাতাকে প্রভাবিত স্থানে ঘসে নিন। সতেজ বা শুকনো তুলসী পাতা দিয়ে একটি মিশ্রণও বানিয়ে ফেলতে পারেন, যা মশার কামড়ের চিকিৎসায় কার্যকরী। এর জন্য দু কাপ জলে প্রায় ১৫ গ্রাম শুকনো তুলসী পাতা ফুটিয়ে নিন। এর পর এটিকে ঠান্ডা করে নিন। এই মিশ্রণে কাপড় ডুবিয়ে তা প্রভাবিত অংশে লাগান।
ঠান্ডা টি ব্যাগ
গ্রিন টি হোক বা ব্ল্যাক টি, দুটিতেই অ্যান্টি সোয়েলিং উপাদান থাকে। বাড়িতে টি ব্যাগ থাকলে, ব্যবহারের পর তা ফেলে দেবন না। বরং ব্যবহৃত টি ব্যাগগুলিকে ফ্রিজে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে সেটি বার করে প্রভাবিত স্থানে চেপে রেখে দিন।
রসুন ব্যবহার করুন
মশার কামড় সাড়ানোর অন্য একটি কার্যকরী উপায় রসুন কুচি ব্যবহার করা। রসুনে অ্যান্টি ভাইরাল এবং ঘা সাড়িয়ে তোলার উপাদান সমূহ বর্তমান। কিন্তু সরাসরি কাঁচা রসুন ব্যবহার করলে চুলকানির সমস্যা বাড়তে পারে। তাই রসুন ব্যবহার করতে চাইলে এর কোয়াকে থেতো করে কয়েক ফোটা নারকেল তেলে মিশিয়ে নিন। তার পর এই মিশ্রণটিকে প্রভাবিত অংশে লাগান।
ওটমিলেও পাবেন স্বস্তি
ওটমিল কীটপতঙ্গের কামড়, অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া, শুষ্ক ত্বক এবং চিকেন পক্স থেকে স্বস্তি দিতে পারে। বাড়িতে ওটমিল থাকলে তাকে গুঁড়ো করে নিন। এতে সামান্য জল মিশিয়ে পেস্ট বানান। কামড়ের স্থানে লাগানোর আগে এতে কিছু মধু মিশিয়ে নিন। ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিতে হবে। কোনও ক্রিম দিয়ে ওই স্থানটিকে ময়শ্চারাইজ করতে ভুলবেন না।
`
নিম পেস্টও লাগাতে পারেন
নিম পাতা স্প্রে যেমন মশাকে দূর রাখতে সাহায্য করে, তেমনই নিম পাতা বাটা দিয়ে মশার কামড়ের চিকিৎসাও করতে পারেন। কয়েকটি নিম পাতা বেটে নিয়ে এগুলিকে প্রভাবিত অংশে লাগান। কিছুক্ষণ পর এটি ধুয়ে নিন। স্বস্তি পাবেন।
মনে রাখবেন
ঘাম, দুর্গন্ধ, উষ্ণতা, আলো, ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড মশাদের আকৃষ্ট করে। তাই যতটা সম্ভব এ ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে যান। মশার কামড়ের ওপর বেকিং সোডা, লেবুর রস, টুথপেস্ট, ভিনিগার লাগাবেন না। এর ফলে ত্বকের সমস্যা বাড়তে পারে।
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-04-15 18:51:06
Source link
Leave a Reply