ইয়াশলী ও সুইট বেবী গুঁড়ো দুধ বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার
অনুমোদন ছাড়া দুধ বাজারজাত করার দায়ে অলওয়ে ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ ও মৌ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ মাননিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানের (বিএসটিআই) মাধ্যমে মাননিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিবন্ধন ছাড়াই দেশের বাজারে দুই চীনা কোম্পানির গুঁড়ো দুধ বিক্রি করছিল তারা। সান কেয়ার ও ইয়াশলী নামক কোম্পানি দুটির ব্র্যান্ড হলো সান কেয়ারের ‘সুইট বেবী’ এবং ইয়াশলীর ‘ইয়াশলী-১’ ও ‘ইয়াশলী-২’।
গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সন্দেহজনক এবং বিষাক্ত গুঁড়ো দুধ আমদানি ও বাজারজাত বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের এক সভা শেষে বাণিজ্যসচিব ফিরোজ আহমদ এসব তথ্য জানান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তাকীম, বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক আজমল হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও নিবন্ধন কতৃêপক্ষের প্রধান ফাতেমা পারভীন চৌধুরী প্রমুখ।
বাণিজ্যসচিব বলেন, অনুমোদন ছাড়াই চীনা দুই কোম্পানির গুঁড়ো দুধ বাজারজাত করায় ঢাকার অলওয়ে ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ ও চট্টগ্রামের মৌ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বৈঠকে। আর দেশের সব জেলা প্রশাসকের (ডিসি) উদ্দেশে বলা হয়েছে, এই তিন ব্র্যান্ডের দুধ যাতে বাজারে বিক্রি না হয়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
ফিরোজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের বাজারে যে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মেলামাইন মেশানো চীনা কোম্পানির গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে, চীনই তা বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বাংলাদেশ নিজে থেকে এর খোঁজ পায়নি।
আমদানি করা গুঁড়ো দুধে প্রকৃতপক্ষেই মেলামাইন মেশানো আছে কি না, তা পরীক্ষা করার কোনো প্রযুক্তি বিএসটিআইয়ের কাছে নেই বলে সাংবাদিকদের জানান
বাণিজ্যসচিব। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে এ প্রযুক্তি সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংগ্রহের পর পরীক্ষা করতে বড় জোর ছয় থেকে সাত দিন লাগবে।
তিনি বলেন, আপাতত তিন ব্র্যান্ডের দুধ বিক্রি বন্ধ। একের পর এক আমদানি করা সব দুধই পরীক্ষা করতে বিএসটিআইয়ের কাছে যেতে হবে। বাণিজ্যসচিব বলেন, মাস ছয় আগে অলওয়ে ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ তাদের আমদানি করা দুধের মান পরীক্ষা ও নিবন্ধন করতে বিএসটিআইয়ের কাছে গিয়েছিল।
বিএসটিআই তাদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে তারা পরে আসবে বলে চলে যায়। পরে আর কোনো যোগাযোগ করেনি অলওয়ে ট্রেডিং।
বাণিজ্যসচিব জানান, চীন থেকে গত ২০০৭-০৮ অর্থবছরে চার হাজার ৭৪৭ টন গুঁড়ো দুধ আমদানি করা হয়েছে। অর্থবছরের মোট দুধ আমদানি হয় ৪২ হাজার ৫৮৭ টন। চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে ১৬৬ টন গুঁড়ো দুধ।
চীনে বিষাক্ত দুধ পানে সম্প্রতি কয়েক হাজার শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে বাংলাদেশেও বিষয়টি আলোচিত হয়।
সূত্রঃ প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ২২, ২০০৮
Leave a Reply